বোতাম তৈরি করে ৬শ’ পরিবারের সচ্ছলতা
সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০১-০২ ১৬:৩২:৩৯
হবিগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত হাওর অঞ্চলে নারীদের সুতা দিয়ে তৈরি করা বোতাম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে রপ্তানি হচ্ছে সুদূর দুবাই। এখানে তৈরিকৃত বোতামের গুণগত মান ভালো ও দাম কম হওয়ায় দুবাইয়ে এর চাহিদা অনেক বেশি।
এলাকার অন্তত ৬শ’ পরিবার বোতাম তৈরি করে সচ্ছল হয়েছেন। তবে তাদের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সেগুলো দূর করলে আরও ভালো করতে পারবেন বলে দাবি উদ্যোক্তাদের।
কথা বলে জানা যায়, হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার প্রত্যন্ত হাওর অঞ্চলের একটি গ্রাম দৌলতপুর। হবিগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রামের অধিকাংশ পরিবারই এক সময় অসচ্ছল ছিল। এলাকার দুবাই প্রবাসীদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় সুতা দিয়ে বোতাম তৈরি করে এখন ভাগ্য ঘুরেছে অনেকেরই। গৃহস্থলি কাজের পাশাপাশি একজন নারী দিনে দেড়শ’ থেকে দুইশ’ বোতাম তৈরি করতে পারেন। প্রতিপিস বোতাম বিক্রি হয় এক টাকা।
স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও এ কাজ করেই চালিয়ে যাচ্ছেন নিজেদের লেখাপড়ার খরচ। এখানে তৈরি করা বোতাম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দুবাই রপ্তানি করা হচ্ছে। তবে বোতাম তৈরি ও রপ্তানিতে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সরকারী উদ্যোগে সেগুলো দূর করে উন্নত প্রশিক্ষণ ও স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার দাবি উদ্যোক্তাদের।
আরেক কলেজছাত্রী বিউটি আক্তার বলেন, কলেজ থেকে এসে বোতাম তৈরি করতে বসলে ৬০/৭০টি বোতাম তৈরি করতে পারি। ফলে লেখাপড়ার পাশাপাশি মাসে ২/৩ হাজার টাকা আয় হয় আমাদের। এছাড়াও আমার অন্যান্য ভাই-বোনেরাও বোতাম তৈরি করে এখন আমরা ভালো চলছি।’
তিনি বলেন,আমাদেরকে যদি সরকার কিছু সহযোগিতা করত তাহলে আমরা আরও ভালো করতে পারতাম। উন্নত প্রশিক্ষণসহ স্বল্প সুদে ঋণ দিলে এ কাজ করেই আমরা অনেক উন্নতি করতে পারতাম।’
সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) ও বাজার কমিটির সভাপতি আজিজুর রহমান বলেন, ‘বোতাম তৈরিতের তাদের অনেক সমস্যা রয়েছে। যেমন- কোন প্রশিক্ষণ না পাওয়ার কারণে অনেক সময় কিছু কিছু বোতাম নষ্ট হয়ে যায়। তাই তাদের উন্নত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, বোতামের সুতাগুলো দেশের বাহির থেকে আনতে হয়। এ সময় ঢাকা এয়ারপোর্টে বিভিন্ন হয়রাণীর শিকার হতে হয়। এ ক্ষেত্রে সরকার যদি সুতা আমদানিসহ এয়াপোর্টেও হয়রানি বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেয় তাহলে অনেক ভালো হয়।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ বিসিক শিল্প নগরীর প্রটোকল অফিসার মো. নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘যে কোন উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারি ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে। উদ্যোক্তারা আবেদন করলে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের প্রশিক্ষণ ও ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’