আগামী পবিত্র মাহে রমজান মাসকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় রমজানে বাজার স্বাভাবিক রাখতে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষ সহযোগিতার পাশাপাশি সব শ্রেণীর ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আর পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখতে টিসিবিসহ বেসরকারি খাতের সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ ও এস আলম গ্রুপকে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
পবিত্র রমজান উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন (অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব) মো. মফিজুল ইসলাম, ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সচিব) তপন কান্তি ঘোষ, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্তি সচিব) বাবলু কুমার সাহা, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিকারক, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা।
এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রমজানের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে দুই লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। রমজানের আগেই টিসিবি, সিটি, মেঘনা এবং এস আলম গ্রুপ ৫০ হাজার টন করে পেঁয়াজ আমদানি করবে। ভোজ্যতেল, ছোলা, আদা-রসুন, খেজুরসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের চাহিদা, উৎপাদন, আমদানি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় মজুদ তৈরি করা হবে। এ সময় ব্যবসায়ীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান তিনি।
টিপু মুনশি বলেন, দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এছাড়া বাজার স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হবে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, আপনারা (আমদানিকারক) যে দামে এনেছেন, সে দামেই টিসিবিকে দিয়েছেন। পরবর্তীতে আপনাদের যদি খরচ বেশি হয়, সেক্ষেত্রে দুই-চার-পাঁচ টাকা লাভও করেন। এস আলম গ্রুপ যদি ৫০ হাজার টন আনে, তাহলে তিনটি গ্রুপ মিলে দেড় লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করবে। এ তিন গ্রুপ ছাড়াও আরো যারা আমদানিকারক আছে, আপনারা আমদানি করেন। বাজার সয়লাব করেন। দেখবেন বাজার নিয়ন্ত্রণে আছে।
সভায় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার ধরপাকড়ে তারা অতিষ্ঠ। এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যমন্ত্রী তাদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত যখন পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিল, তখন তো ঢাকার বাজারে আগের মালগুলোই ছিল। আপনারা ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে দামটা ডাবল করে দিলেন কেন? এখানে তো একটা নৈতিকতার ব্যাপার আছে।
সানবিডি/এনজে