ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি-ডিএনসিসি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ ৩০ জানুয়ারি থেকে এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়ার আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন। রিটের বিবাদী করা হয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে।
রিট আবেদনে এ আইনজীবী বলেন, ৩০ জানুয়ারি হিন্দু সম্প্রদায়ের সরস্বতী পূজা। বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে এ পূজা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আসন্ন দুই সিটির নির্বাচন উপলক্ষে এসব প্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র তৈরি করা হবে বিধায় বিষয়টি ধর্মীয় আয়োজনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে পড়ছে। পূজার পঞ্চমী শেষ না হওয়া পর্যন্ত সরস্বতী প্রতিমা বিসর্জন দেয়া যায় না। তাই ৩০ জানুয়ারির নির্ধারিত ভোটগ্রহণ এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়ার আবেদন জানাচ্ছি।
হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে এই রিটের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তফসিল অনুযায়ী, ডিএনসিসি-ডিএসসিসি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ৩০ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার)।
তফসিল ঘোষণার পর বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, পঞ্জিকা অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ও সরস্বতী পূজা পালন করা সম্ভব নয়।
দুই সিটির ভোটগ্রহণের তারিখ পরিবর্তন করার জন্য গত ২৪ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) চিঠিও দেয় হিন্দু পরিষদ।
এরপর গত ৩০ ডিসেম্বর হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র জানান, নতুন তারিখ নির্ধারণ চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করবে হিন্দু পরিষদ।
যদিও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, সরস্বতী পূজা ২৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘সরকার অনুমোদিত সরস্বতী পূজা ২৯ জানুয়ারি। যদি মন্ত্রিসভা থেকে সরস্বতী পূজার তারিখ ২৯ থেকে পরিবর্তন করে ৩০ জানুয়ারি করা হয়, তখন আমরা কিছু করতে পারব। এটা ছাড়া কমিশন নির্বাচনের দিন পরিবর্তন করতে পারবে না।’
তবে হিন্দু পরিষদ বলছে, ‘সরকারি হিসাবে নয়, পঞ্জিকা অনুযায়ী তারা ৩০ জানুয়ারি সরস্বতী পূজা উদযাপন করবে।’
সোমবার হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনসহ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমরা এত দিন দাবি জানিয়েছি। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাই আমরা এখন উচ্চ আদালতে রিট করেছি।’
সাজন কুমার মিশ্র আরও বলেন, ‘আমরা ৩০ জানুয়ারি পূজা করব। ছাত্রসমাজও জানিয়েছে, তারাও ৩০ জানুয়ারিই সরস্বতী পূজা করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আমাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। তারাও চাচ্ছে না, সরস্বতী পূজার দিন নির্বাচন হোক।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সাথে ছাত্র সমাজও মনে করে, এটা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হচ্ছে। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের জন্য তারাও দাবি জানাচ্ছে। ৩০ জানুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষাও আছে। পরীক্ষার দিন পরিবর্তনেও উপাচার্যের কাছে চিঠি দেয়া হবে।’ সূত্র: জাগো নিউজ
সানবিডি/ঢাকা/এসএস