সম্প্রতিইরান-যুক্তরাষ্ট্র অস্থিরতায় ইরানের ৫২ স্থাপনায় হামলার হুমকি দিয়ে টুইট করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যে ইরানের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং দেশটির গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক স্থাপনাও রয়েছে।
ইরানের গুরুত্বপূর্ণ সব সাংস্কৃতিক স্থাপনায় হামলার হুমকি দিয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা শিকার হচ্ছেন ট্রাম্প। গত শুক্রবার ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ডের অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করা হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
ওই হত্যাকাণ্ডের পরেই ইরাকের মার্কিন দূতাবাসের কাছে এবং বাগদাদের গ্রিন জোনে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় ইরানকে হুমকি দেয় যে, তেহরান যদি কোনো আমেরিকান বা কোনো মার্কিন সম্পদে হামলা চালায় তবে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ৫২ স্থানে হামলা চালানো হবে।
এর মধ্যে কিছু ইরানের প্রথম সারির এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এগুলো ইরানের সংস্কৃতি এবং ইরানিদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এসব স্থানে খুব দ্রুত ভয়াবহ হামলা চালানো হবে বলে সতর্ক করা হয়। তিনি বলেন, সাংস্কৃতি স্থাপনাসহ ইরানের ৫২ স্থানকে টার্গেট করা হয়েছে। যদি ইরানিরা আমাদের কোনো লোককে নির্যাতন বা তাদের ওপর হামলা চালায় তবে এসব স্থানে হামলা চালানো হবে।
তবে জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অনেকেই বলেছেন ইরানের এসব স্থান সুরক্ষিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরান উভয়ই জেনেভা কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছেন। এই চুক্তির আওতায় সংঘাতের সময়ও সাংস্কৃতিক কোনো স্থাপনায় তারা হামলা চালাতে পারবেন না। তাই সাংস্কৃতিক স্থাপনায় সামরিক হামলা চালানো হলে তা হবে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধের সামিল।
জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যার ঘটনা কেন্দ্র করে নতুন করে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন করে তীব্র উত্তেজনা শুরু হয়েছে। এদিকে, সোলেইমানির হত্যার কঠিন প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইরান।
চলতি বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোনয়নপ্রার্থী ডেমোক্রেট নেতা এলিজাবেথ ওয়ারেন মন্তব্য করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আসলে যুদ্ধাপরাধ করার হুমকি দিচ্ছেন। অপরদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেছেন, জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) যেভাবে মধ্যপ্রাচ্যের সাংস্কৃতিক স্থাপনা ধ্বংসের চেষ্টা করেছিল, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও একইভাবে ইরানের সাংস্কৃতিক স্থাপনায় হামলার হুমকি দিচ্ছেন।