হিরে। শুধুই হিরে। তাল তাল হিরে। যেন হিরের পাহাড়! হিরের সমুদ্র! শুধুই হিরে ভরা আছে তার অন্তরে-অন্দরে। তার ‘সারফেস’ বা পিঠেও মুঠো মুঠো হিরে। এত বড় হিরের খনির হদিশ এর আগে মেলেনি মহাকাশে!
আলো ঠিকরে বেরচ্ছে। যেন কয়েক লক্ষ কোটি মেগাওয়াটের আলো! যার জাঁক-জৌলুস ছিঁড়েফুড়ে দিচ্ছে মহাকাশের অতল অন্ধকার!
হাত বাড়ালেই সেই হিরের খনি। আমাদের থেকে মাত্র ৪০ আলোকবর্ষ (এক সেকেন্ডে এক লক্ষ ৮৬ হাজার মাইল গতিবেগে আলো এক বছরে যতটা দূরত্ব যায়, ততটা) দূরে। বলা যায়, আমাদের সৌরমণ্ডলের ‘পাশের বাড়ির বন্ধু’!
সেই হিরের খনি কত বড়, জানেন?
চমকে যাবেন না! তিন-তিনটি পৃথিবীকে পাশাপাশি রাখলে, তা যতটা জায়গা জুড়ে থাকে, ততটা জায়গা জুড়ে রয়েছে ওই হিরের খনি। রাতের আকাশে যাকে আমরা ছাদে উঠে খালি চোখেই দেখতে পারি। ‘ক্যান্সার’ নক্ষত্রপুঞ্জে। যে চক্কর মারছে ‘55Cancri’ নামে একটা অসম্ভব রকমের গরম তারা বা নক্ষত্রের চারপাশে। সেটাই তার ‘সূর্য’। সেই ‘সূর্য’কে চক্কর মারছে পাঁচটি গ্রহ। ‘Cancri-a’ থেকে ‘Cancri-e’। আমরা যে হিরের খনির কথা বলছি, সেই ‘Cancri-e’ গ্রহটি ওই ‘সৌরমণ্ডলে’র বাকি চারটি গ্রহের থেকে একেবারেই আলাদা। একেবারে ঝকঝকে হিরেয় মোড়া, প্রায় আদ্যোপান্তই!
[caption id="attachment_7776" align="aligncenter" width="600"] হিরের দ্যুতি! মহাকাশের অতল অন্ধকারে। ছবি-নাসা[/caption]
২০১১-য় এই ‘হিরের গ্রহ’টি প্রথম যাঁর নজরে পড়েছিল, তিনি এক জন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিক্কু মধুসূদন। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-পদার্থবিদ কানানি লি’র সঙ্গে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোনমির অধ্যাপক নিক্কু মধুসূদনের সেই যৌথ গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয় ‘অ্যাস্টোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স’-এ।
কতটা হিরে রয়েছে আমাদের সবচেয়ে কাছের ওই বৃহত্তম হিরের খনিতে?
জ্যোতির্বিজ্ঞানী মধুসূদন তাঁর ব্লগে জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের সৌরমণ্ডলের বাইরে থাকা ওই ‘সুপার আর্থ’ গ্রহের এক-তৃতীয়াংশই হিরেয় মোড়া। তার পিঠটাও মোড়া রয়েছে হিরে আর গ্রাফাইটে। সেই গ্রাফাইট, যা দিয়ে বানানো হয় পেন্সিলের শিস। তিনটি পৃথিবীর ওজন যোগ করলে যা হয়, ততটাই। মানে, ১৭.৯১৬-এর পর ২৭টা শূ্ন্য বসালে যে সংখ্যাটা দাঁড়ায়, তত কিলোগ্রাম! এখন আমাদের এই গ্রহে এক ক্যারাট বা ০.২ গ্রাম ওজনের হিরের দাম কয়েক হাজার মার্কিন ডলার। তা হলে বুঝুন, আমাদের প্রায় নাগালেই থাকা ওই গ্রহের দাম কত হতে পারে!’’
[caption id="attachment_7777" align="aligncenter" width="600"] পৃথিবী (সিলিকেট প্ল্যানেট) ও হিরের গ্রহের (কার্বন প্ল্যানেট) ভেতরের স্তর।- নাসা[/caption]
২০১১-য় এই ‘হিরের গ্রহ’টি প্রথম যাঁর নজরে পড়েছিল, তিনি এক জন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিক্কু মধুসূদন। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-পদার্থবিদ কানানি লি’র সঙ্গে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোনমির অধ্যাপক নিক্কু মধুসূদনের সেই যৌথ গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয় ‘অ্যাস্টোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স’-এ।
কতটা হিরে রয়েছে আমাদের সবচেয়ে কাছের ওই বৃহত্তম হিরের খনিতে?
জ্যোতির্বিজ্ঞানী মধুসূদন তাঁর ব্লগে জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের সৌরমণ্ডলের বাইরে থাকা ওই ‘সুপার আর্থ’ গ্রহের এক-তৃতীয়াংশই হিরেয় মোড়া। তার পিঠটাও মোড়া রয়েছে হিরে আর গ্রাফাইটে। সেই গ্রাফাইট, যা দিয়ে বানানো হয় পেন্সিলের শিস। তিনটি পৃথিবীর ওজন যোগ করলে যা হয়, ততটাই। মানে, ১৭.৯১৬-এর পর ২৭টা শূ্ন্য বসালে যে সংখ্যাটা দাঁড়ায়, তত কিলোগ্রাম! এখন আমাদের এই গ্রহে এক ক্যারাট বা ০.২ গ্রাম ওজনের হিরের দাম কয়েক হাজার মার্কিন ডলার। তা হলে বুঝুন, আমাদের প্রায় নাগালেই থাকা ওই গ্রহের দাম কত হতে পারে!’’
[caption id="attachment_7778" align="aligncenter" width="600"] সেই দুর্মূল্য গ্রহ মহাকাশে। ছবি- নাসা[/caption]
আরও কি ‘হিরের গ্রহ’ থাকতে পারে মহাকাশে?
সুজনবাবু জানাচ্ছেন, ‘‘আরও অনেক হিরের গ্রহ রয়েছে। আর তা হয়তো রয়েছে অন্য কোনও সৌরমণ্ডলের ‘হ্যাবিটেব্ল জোন’ বা বাসযোগ্য এলাকায়!’’
তা হলে তো এমন সময়ও আসতে পারে, যে দিন অন্য সৌরমণ্ডলে পাওয়া যাবে দুর্মূল্য হিরের খনির মালিক!
যাকে বলে সোনায় সোহাগা! ভিন গ্রহে প্রাণও হল! উপরি পাওনা হল- হিরে!
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা