কম্পিউটারে কাজ করার পর নিজের যত্ন

প্রকাশ: ২০১৫-০৯-২৮ ২০:৪৮:১১


computer_84313কাজকর্ম সহজ করতেই নাকি আমরা দিন দিন প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে যাচ্ছি! কিন্তু প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে যদি শারীরিক সমস্যাতেই ভুগতে শুরু করি, তাহলে উপায় কী? যদি প্রতিদিন অফিসে বা বাড়িতে বসে কম্পিউটারে করার মতো কাজ হয়, তাহলে এখনই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। ধরুন আপনাকে প্রতিদিন লম্বা সময় ধরে ডেস্কটপের সামনে বসে কাজ করতে হয়। আর তা করতে গিয়ে আপনি চোখ, কাঁধ, গলা, পিঠ বা হাতের ব্যথায় ভুগতে শুরু করেছেন। এ ক্ষেত্রে কী করবেন? সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ সম্পর্কে জানিয়েছে জি নিউজ অনলাইন।

কাঁধের জন্য যা করণীয়

ডেস্কটপে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে টেবিল-চেয়ারটা মাপমতো হওয়া খুবই জরুরি। আপনার উচ্চতা অনুযায়ী চেয়ারের সিট উঁচু বা নিচু করে এমনভাবে বসুন, যাতে সোজাসুজি তাকালে আপনার চোখ মনিটরের ওপরের সীমানা বরাবর থাকে। কনুই দুটোকে চেয়ারের হাতলের বিশ্রামে রেখে কাজ করুন। ডেস্কটপের কিবোর্ড-মাউস যদি আলাদা ট্রেতে থাকে তাহলে কবজিটা সেখানে রাখুন আর তা যদি টেবিলের ওপর থাকে, তাহলে কবজি সেখানে রেখে কাজ করুন। খেয়াল রাখতে হবে চেয়ারের হাতলের চেয়ে কিবোর্ড-ট্রে কিংবা টেবিল-টপ যেন বেশি উঁচু না হয়ে যায়। এভাবে বসে কাজ করলে আপনার কাঁধে চাপ পড়বে না।

চোখের বিশ্রাম

দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারের মনিটরের দিকে তাকিয়ে থেকে কাজ করলে চোখে ব্যথাসহ নানা সমস্যা হতে পারে। তাই কাজের ফাঁকে কিছুক্ষণ পর পর একটু বিরতি নিতে চোখ বন্ধ করুন, খানিক অন্যদিকে তাকান, দূরে কোনো কিছুর দিকে একটু চোখ স্থির করুন। অফিস, ঘর বা বাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকানোর সুযোগ থাকলে একটু সেদিকে তাকান। সম্ভব হলে সবুজে তাকান, চোখ স্নিগ্ধ হবে। আর চোখে ক্লান্তি এলে একটু চোখ পিট পিট করে বারবার চোখের পাপড়ি বন্ধ করুন, মেলুন, বন্ধ করুন। এতে চোখের ভেতরের তরল সঞ্চারিত হয়, চোখকে শুকিয়ে যাওয়া থেকে বাঁচায়। এ ছাড়া কাজ করতে করতে চোখ ব্যথা হয়ে গেলে চোখের পাপড়িতে হাতের তালু বা আঙুলে হালকা চাপ দিন, কিছুটা আরাম পাবেন। আর অবশ্যই খেয়াল রাখা প্রয়োজন আপনার মনিটরের সেটিংস যেন অতিরিক্ত ব্রাইট বা কন্ট্রাস্ট না থাকে, সম্ভব হলে একজন বন্ধুর সহায়তা নিয়ে মনিটরের কালার ও লাইট সেটিংস ঠিক করে নিন।

ঘাড়ের ব্যায়াম

সহজ কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমেই আপনি দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করার ঘাড়ের ব্যথা থেকে রেহাই পেতে পারেন। সামনের দিকে ঘাড় নামিয়ে থুতনিটা বুকের কাছে ঠেকিয়ে দিন, এবার আবার ঘাড় সোজা করে যতটা সম্ভব পেছন দিকে ঠেলে দিন। আবার সোজা হয়ে কাঁধ সোজা রেখে একবার বাঁ দিকে, একবার ডান দিকে মুখ ফেরান। একই বিষয় পর পর কয়েকবার করে দিনে কয়েক দফা করুন। আপনি ঘাড়ের ব্যথা থেকে রেহাই পাবেন।

পিঠ নিয়ে সতর্ক হন

যতটা সম্ভব মেরুদণ্ড সোজা করে বসে কাজ করার চেষ্টা করুন। কাজ করতে করতে উবু হয়ে গেলে খেয়াল হওয়া মাত্রই আবার সোজা হয়ে বসুন। দুয়েক ঘণ্টা কাজের পরই সম্ভব হলে একবার মাথা যতদূর সম্ভব পেছন দিকে ঠেলে দিয়ে আবার সামনের দিকে নামিয়ে আনুন। এভাবে দুয়েকবার মেরুদণ্ডসহ শরীরের ওপরের অংশটাকে সামনে-পেছনে, ডানে-বাঁয়ে করুন। এতে যেমন শরীরের জড়তা দূর হবে, তেমনি পিঠের ব্যথা থেকেও রেহাই পাবেন।

হাতের জন্য

দুই হাত সোজা করে সামনের দিকে মেলে দিন। এবার আঙুলগুলো যতটা সম্ভব চারদিকে ছড়িয়ে দিন। হাতে শক্ত মুঠি করে সব আঙুল ভেতরে নিয়ে আসুন। আবার সব আঙুল ছড়িয়ে দিন। এতে লাগাতার টাইপ করার কারণে হাতে যে ব্যথা হয় তা প্রশমিত হবে। সম্ভব হলে দিনে দুয়েকবার কনুই ভাঁজ করে হাত গুটিয়ে নিয়ে আবার মেলে দিয়ে হালকা হাতের ব্যায়াম করুন। এতে হাতের পেশিগুলোও শিথিল থাকবে।

সানবিডি/ঢাকা/রাআ