সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর খসড়া বিধিমালা চূড়ান্ত করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এরই মধ্যে বিভাগটির পক্ষ থেকে এ খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও বিধিমালা প্রণয়ন কমিটির প্রধান আব্দুল মালেক বণিক বার্তাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আইনটি জাতীয় সংসদে পাস হয় গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর। গেজেট প্রকাশ হয় একই বছরের ৮ অক্টোবর। এর ১১ মাস পর গত বছরের ১ নভেম্বর আইনটি কার্যকরের ঘোষণা দেয়া হয়। তবে আইন কার্যকরের জন্য বিধিমালা না থাকায় এর প্রায় দুই সপ্তাহ পর পুরনো আইনের বিধিমালা দিয়ে সীমিত পরিসরে আইনটির প্রয়োগ শুরু করে সরকার।
আইনের বিধিমালা প্রণয়ন কমিটির প্রধান আব্দুল মালেক বণিক বার্তাকে বলেন, আমরা বিধিমালার একটা খসড়া চূড়ান্ত করেছি। এরই মধ্যে সেটি মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। বিধিমালা চূড়ান্তের কিছু প্রক্রিয়া আছে। এজন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের দরকার হয়। এ কাজগুলো সমন্বয় করবে মন্ত্রণালয়।
তবে বিধিমালার চূড়ান্ত অনুমোদন কবে নাগাদ হতে পারে, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন সড়ক আইনে অনেকগুলো বিষয়ে কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো মোটরযানের ফিটনেস সনদ গ্রহণের মতো বিষয়টি। পুরনো আইনে নতুন প্রাইভেট কার নিবন্ধনের সময় একসঙ্গে পাঁচ বছরের জন্য ফিটনেস সনদ নেয়ার বিধান রাখা হতো। বাকি সব মোটরযানকে প্রতি বছরই এ সনদ গ্রহণ করতে হতো। কিন্তু নতুন সড়ক আইনে মোটরযানের ফিটনেস সনদ নেয়ার বিধান রাখা হলেও তা কত বছর পরপর নিতে হবে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।
পুরনো আইনের বিধি অনুযায়ী জেলা ও মহানগর পরিবহন কমিটি তিন বছরের জন্য গণপরিবহন চলাচলের অনুমোদন দিত। নতুন আইনেও এ অনুমোদন কমিটির কাছ থেকে নিতে হবে বলে উল্লেখ করা রয়েছে। তবে তা কত বছরের জন্য প্রযোজ্য, সে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি।
এমন অনেক বিষয়ই নতুন আইনে স্পষ্ট করা হয়নি। বিধিমালার মাধ্যমে এসব অস্পষ্টতা দূর করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান ড. কামরুল আহসান।
নতুন সড়ক আইনের বিধিমালা চূড়ান্ত না হলেও আইনের প্রয়োগ থেমে নেই। নতুন আইনের সঙ্গে পুরনো আইনের বিধিমালা মিলিয়ে আইনটি সীমিত পরিসরে প্রয়োগ করছে বিআরটিএ। গতকালও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিআরটিএর ছয়টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে। এসব আদালত বিভিন্ন অপরাধে ৩৬টি মামলায় সব মিলিয়ে ৭৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন।
এর মধ্যে সাতরাস্তা এলাকায় ১০টি মামলায় ২৪ হাজার টাকা, উত্তরা সার্কেল এলাকায় পাঁচটি মামলায় ২১ হাজার, মতিঝিল এলাকায় চারটি মামলায় ১১ হাজার, বনানী এলাকায় পাঁচটি মামলায় সাড়ে ৭ হাজার, মিরপুরের ইসিবি চত্বর এলাকায় চারটি মামলায় সাড়ে ৬ হাজার ও সায়েন্সল্যাব এলাকায় আটটি মামলায় ৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস