ফুলের চারা বিক্রি করে চাষিদের সফলতা
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০১-১৫ ১২:২০:০৯
চলতি শীত মৌসুমে বিভিন্ন জাতের ফুলের চারা বিক্রি করে সফলতা পেয়েছেন নীলফামারীর চাষিরা। প্রতিবছর শীত মৌসুম আসার সাথে-সাথে ফুলের চারার বেচাকেনা বেড়ে যায়। পাইকারি ও খুচরা মূল্যে এগুলো বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন তারা।
জেলার বিভিন্ন নার্সারি ঘুরে দেখা যায়, বাগানে শীতকালীন বিভিন্ন ফুলের চারা বিক্রি করা হচ্ছে। এর মধ্যে লাল গোলাপ, সাদা গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, কসমস, সিলভিয়া, ক্যালেন্ডুলা, সূর্যমুখী, গ্লাডিলাস, দেশি গাদা, রক্তগাদা প্রভৃতি।
জেলা শহরের সৈয়দপুর সড়কের পাশে অবস্থিত প্রান্ত নার্সারির মালিক আফিজার রহমান (৫৫) জানান, এবার এক বিঘা জমিতে প্রায় ১২ প্রজাতির ফুলের চারা বিক্রির জন্য প্রস্তত করা হয়েছিল। বিক্রিত চারার মধ্যে হাইব্রিড জাতের গাদা, রক্তগাদা, কুইন সুপার গাদা ও গোলাপের চারা প্রকার ভেদে প্রতি পিস ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও হাইব্রিড জাতের ডালিয়া খুচরা ১৫ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ১৫, ক্যান্ডুলা ১০, জিনিয়া ১০, দোপাটি ১০, সিলভিয়া ১০, রক্তজবা ৮০, চায়না টগর ২০, কসমস ১০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
অপরদিকে, হাইব্রিড গোলাপের মধ্যে তাজমহল গোলাপ চারা ১০০, রানি গোলাপ ১০০, বিশ্ব সুন্দরী গোলাপ ১০০ টাকা। প্রকার ভেদে ইরানি গোলাপ ২৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও দেশি জাতের গোলাপ প্রতি পিস ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আফিজার রহমান আরও জানান, এসব ফুলের চারা ও বীজ রংপুর, বগুড়ার মহাস্থানগড় ও খুলনা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এবার মোকাম থেকে প্রায় সোয়া লাখ টাকার চারা ও বীজ কেনা হয়েছে।
তিনি বলেন, জুন থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর চারা বিক্রি হয়। তবে নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ফুলের চারা বেশি বিক্রি হয়। এ পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ টাকার চারা বিক্রি হয়েছে। আশা করছি, ফেব্রয়ারি পর্যন্ত আরও লক্ষাধিক টাকার ফুলের চারা ও বিভিন্ন প্রজাতির চারা বিক্রি হবে।
একই এলাকার খুলনা নার্সারির মালিক আব্দুল হাকিম জানান, এবার দুই বিঘা জমিতে প্রায় ১৫ প্রজাতির ফুলের চারা রোপণ করা হয়েছে। এসব চারা বাইরে থেকে সংগ্রহ করতে হয়েছে। এরপর চারাগুলো নার্সারিতে রোপণের পর পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করা হয়। এ বছর চারার খুবই চাহিদা রয়েছে। বাগানে প্রতিদিন আগাছা পরিষ্কার ও সেচ সার প্রয়োগে ৩-৪ জন শ্রমিক কাজ করেন। তারাও লাভবান হচ্ছে আমরাও হচ্ছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, জেলায় ১১৬ টি নার্সারি রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ছয় ও বেসরকারি ১০০ টি। উপজেলা ভিত্তিক, নীলফামারী সদরে সরকারি ১টি ও বেসরকারি ৩৯টি, সৈয়দপুরে সরকারি ১টি ও বেসরকারি ১০টি, ডোমারে সরকারি ১টি ও বেসরকারি ১৪টি, ডিমলায় সরকারি ১টি ও বেসরকারি ১৭, জলঢাকায় সরকারি ১টি ও বেসরকারি ২০টি, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় সরকারি ১টি ও বেসরকারি ১০টি নার্সারি রয়েছে।
এসব নার্সারিতে বিভিন্ন ফুলের, ফলদ, বনজ ও ওষুধি চারা উৎপাদন করা হয়। তবে নার্সারির মালিকরা এতে কোনও সরকারি সুযোগ-সুবিধা পান না বলে জানিয়েছেন। তাদের সব কিছুই নিজেদের অর্থায়নেই করতে হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) এনামুল হক বলেন, জেলায় সরকারি, বেসরকারি মিলে ১১৬টি নার্সারি রয়েছে। এ চাষিরা সবকিছুই নিজেদের অর্থায়নেই করে থাকেন। আমাদের পক্ষে পোকামাকড় দমনসহ নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘নার্সারি মালিকরা সরকারি সহযোগিতা পেলে আরও লাভবান হতে পারতো।’সুত্র-বাংলা ট্রিবিউন
সানবিডি/এনজে