ফরিদপুর অঞ্চলের চাষিরা বোরো ধানের আবাদ করে আর্থিক লোকসানের মুখে পড়ে ধানের চাষাবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। গত নয় বছরে জেলার কৃষি বিভাগের আবাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ কমেছে।
আশানুরুপ মূল্য না পাওয়া, আর উৎপাদন খরচ অধিক হওয়ায় দিন দিন কমছে ধানের আবাদ। এখন বোরোর মৌসুমে চাষিরা ঝুঁকছে সরিষা, মসুর, পেঁয়াজ ও গম জাতীয় ফসলের দিকে।
ফরিদপুর কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর জেলার নয়টি উপজেলায় ২০১০-১১ সালে জেলায় বোরো মৌসুমে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৯ হাজার ৪১৭ হেক্টর, এর বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৩৮ হাজার ৬ হেক্টর। কিন্তু চলতি মৌসুমে (২০১৯-২০) বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে।
বোরো ধানের বদলে এবার লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পেঁয়াজ ৯ হাজার হেক্টর, সরিষা ৩ হাজার হেক্টর, মসুর ৪ হাজার হাজার হেক্টর, আর গম প্রায় ৩ হাজার হেক্টর অতিরিক্ত চাষ হয়েছে।
ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত মৌসুমে তারা ধানের নায্যমূল্য পাননি। প্রতিমণ ধানের উৎপাদনে তাদের খরচ হয়েছে ৮শ টাকা। সেখানে প্রতি মণ বিক্রি করেছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। এ কারণে তারা বিকল্প ফসল চাষে ঝুঁকছেন। তবে সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু হলেও প্রান্তিক চাষিরা সেখান থেকে কাঙ্খিত সুবিধা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তারা।
ফরিদপুর সদর উপজেলার সিএন্ডবি ঘাট এলাকার কৃষক হাফিজুর রহমান জানান, গত বছর আমি ছয় বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছিল ১৪ হাজার টাকা, কিন্তু ধান বিক্রি হয় ১০ হাজার টাকা। এ কারণে এ বছর ধান চাষ বাদ দিয়ে পেঁয়াজ, মসুর আর গম চাষ করছি।
এ বিষয়ে ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, শস্য বহুমুখীকরণের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, এর ফলে গম, পেঁয়াজ, মসুরির মতো বিকল্প ফসলের চাষ বাড়ছে। তিনি বলেন, জেলায় বোরো উৎপাদন কম হলেও দেশের খাদ্য সংকট হবে না।
সানবিডি/এনজে