২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এক কঠোর বিদ্রোহ দমন অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এতে গণধর্ষণ, হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়াসহ জাতিগত নির্মূল অভিযান থেকে বাঁচতে সাত লাখের অধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এর বিচারের দাবিতে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে আনা গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়ার করা মামলার রায় আজ। বিপন্ন প্রায় জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর বর্মীদের অত্যাচার, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে গত ১১ই নভেম্বর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিজেতে মামলাটি করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষে মামলা করা গাম্বিয়া মিয়ানমারে গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ এবং রাখাইনে শান্তি ফেরাতে আদালতকে জরুরি নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করে। ডিসেম্বরে অন্তবর্তী আদেশ চেয়ে করা গাম্বিয়ার আবেদনের ওপর ৩দিন ব্যাপী শুনানি ও যুক্তি-তর্ক হয়েছে দ্য হেগের শান্তি প্রাসাদে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) অনুসারে, ১৯৯৩ সালের আন্তর্জাতিক আদালতে প্রথম গণহত্যা বিষয়ক মামলায় সার্বিয়ার বিরুদ্ধে অস্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। কারণ ওই মামলায় প্রমাণিত হয়েছিল যে, সার্বিয়া বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় গণহত্যা প্রতিরোধ ও শান্তি স্থাপনে দায়িত্ব লংঘন করেছিল।
উল্লেখ্য, অতিতের বিভিন্ন সময় মিলিয়ে বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশ অবস্থান করছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের অভিযোগের মধ্যে ছিল হত্যা, গুরুতর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি সাধন, ভৌত বিনাশ বয়ে আনার মতো পরিস্থিতি তৈরি, জন্মরোধের ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া ও বলপূর্বক স্থানান্তর। এগুলো গণহত্যার বৈশিষ্ট্য। কারণ এসবের উদ্দেশ্য ছিল জাতিগতভাবে রোহিঙ্গাদের পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করে দেয়া। গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারমন্ত্রী আবুবাকার মারি তামবাদো ওই সময় এক বিবৃতিতে বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের চালানো গণহত্যার বিচার ও জবাবদিহি চাইতে এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে বৈশ্বিক আচরণ যা সব রাষ্ট্রের জন্য বাধ্যতামূলক তাকে সমর্থন ও জোরদার করতে গাম্বিয়া আদালতের আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান গত অক্টোবরে সতর্ক করে দিয়েছে যে সেখানে গণহত্যার পুনরাবৃত্তির গুরুতর ঝুঁকি রয়েছে।
সানবিডি/এনজে