অপরুপ সুন্দর কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে কোরিয়ান কেইপিজেড। চারদিকে সবুজের প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়নাভিরাম সড়ক, ফলমূলের বাগান, বেশ কয়েকটি কৃত্রিম লেকে এখন ফুটে থাকা পদ্ম আর পাখির ওড়াউড়ি, জলকেলি-খুনসুটি যেন চেনা দৃশ্য হয়ে উঠেছে। এই ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনে কেউ পরিদর্শনে এলে এমন দৃশ্যই দেখতে পাবেন।
পাহাড়ের বুকে লেকে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে চলা পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দ। নানা বর্ণের ছোট-বড় দেশীয় পরিযায়ী পাখি। সব মিলিয়ে কেইপিজেডে অভয়াশ্রমে অন্যরকম এক আবহ তৈরি হয়েছে। ইপিজেডের সড়ক দিয়ে যেতেই দেখা মিলবে এদের। নিজেদের বাঁচার প্রয়োজনে এরা হাজার-হাজার মাইল পথ উড়ে বছরের এ সময়টাতে এখানে আসে। অনেকেই আবার দুই-আড়াই মাস পর চলে যায়। কেউবা স্থায়ীভাবে থেকে যায়।
ওই দূরে কালো পাখির ঝাঁক, ওগুলো পানকৌড়ি। দেশি পাখি। কচুরিপানার ফাঁকে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বেগুনি কালেমের বিচরণ। কেইপিজেড ছাড়াও আনোয়ারা-কর্ণফুলী নদীর তীর ও আশপাশের এলাকা এখন এসব পাখিদের অভয়ারণ্য। এসব স্থানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের ভ্রমণে যোগ করছে বাড়তি আনন্দ।
সাধারণত শীতের মৌসুমে এখানে থাকে বলে সাধারণত ‘অতিথি পাখি’ বলেই এদের পরিচিতি। শতাধিক প্রজাতির অতিথি পাখি এ সময় এখানে আসে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কুস্তি হাঁস, জিরিয়া হাঁস, পাতারি হাঁস, রাজ হাঁস, নীলশির, কানি বক, ধূসর বক, সাদা বক, জল ময়ুর, ডুবুরি, পানকৌড়ি, গঙ্গা কবুতর, দলপিপি, রাজসরালি। শীত মৌসুম শেষ হওয়ার পর অধিকাংশ পাখি ফিরে গেলেও পানকৌড়ি ও কিছু বক পাখি এখানে স্থায়ীভাবে থেকে যায় বলে জানিয়েছেন ইপিজেড কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলছেন, আমাদের দেশে প্রতিবছর শতাধিক প্রজাতির অতিথি পাখি আসে। এরা সাধারণত তাদের জন্যে সুবিধাজনক এলাকা বেছে নেয়। ইদানিং অতিথি পাখি আসার হার এখন আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। নানা কারণে এটা হতে পারে। এর মধ্যে দুটি কারণ হলো, যেসব এলাকায় এসব পাখি আশ্রয় নেয়, তার পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়া ও শিকারিদের উৎপাত।
কেইপিজেডের সহকারী মহা ব্যবস্থাপক মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। তাই এখানে পাখির অভয়াশ্রম সৃষ্টি হয়েছে। শীতের মৌসুমে পাখির আগমন দিন দিন বাড়তে থাকে। ইপিজেডের ১৭টি কৃত্রিম লেকে পাখিদের জন্য আবাসন সৃষ্টি হয়েছে।
সানবিডি/এনজে