শিবির করা কোনো অপরাধ নয়, বরং শিবির সন্দেহে কাউকে মারধর করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। শিবির সন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে চার শিক্ষার্থীকে রাতভর ছাত্রলীগের নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে নিজের ফেসবুক পেজে ঢাবির এ অধ্যাপক বলেন, ‘ঢাবির জহুরুল হক হলে শিবির সন্দেহে কয়েকজনকে সারারাত অমানুষিকভাবে পিটিয়েছে ছাত্রলীগ। এটি বেআইনি ও সশ্রম কারাদণ্ডযোগ্য কাজ।’
‘এটি যারা করেছে সেই ছাত্রলীগের ছেলেদের পুলিশে দেয়া হয়নি। হলের দায়িত্বে থাকা ঢাবি শিক্ষকরা পুলিশে দিয়েছে মার যারা খেয়েছে উল্টো তাদের।’
আসিফ নজরুল বলেন, শিবির করা বাংলাদেশের আইনে এখনও কোনো অপরাধ নয়। বরং শিবির করে এ সন্দেহে কাউকে আটক, তল্লাশি, মারপিট করলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডযোগ্য অপরাধ। কাউকে মেরে ফেলা মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ।’
তিনি আরও বলেন, যাদের দায়িত্বহীনতা ও অবহেলার কারণে এসব নির্যাতন অবাধে করা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় হলগুলোর দায়িত্বে থাকা সেই শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও ফৌজদারি মামলা করা যাবে।’
ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, এ ধরনের মামলার কোনো সময়সীমা নেই। মনেপ্রাণে তাই আশা করি, যারা অন্যায় মারের শিকার হচ্ছেন, তারা শুধু নির্যাতকদের নয়, ওইসব শিক্ষকের বিরুদ্ধেও একদিন মামলা করার সুযোগ পাবেন। ১০-২০ বছর পর হলেও।’
প্রসঙ্গত গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে চার শিক্ষার্থীকে রড, লাঠি ও স্ট্যাম্প দিয়ে রাতভর নির্যাতন করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
নির্যাতন সইতে না পেরে তারা মেঝেতে শুয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তারা অচেতন হয়ে পড়েন। এভাবে রাত ২টা পর্যন্ত তাদের ওপর নির্যাতন চালায় ছাত্রলীগ নেতারা।
পরে রাত ২টার পর তাদের প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় পুলিশ।
তবে ছাত্রলীগের অন্য একটি সূত্র বলছে, শিবির সন্দেহের কারণে নয়, হলের গেস্টরুমের মিটিংয়ে না আসাকে কেন্দ্র ওই চার শিক্ষার্থীকে পেটানো হয়েছে। সূত্র: ফেসবুক (আসিফ নজরুল)