সমাবর্তনের সময়টা আসলে যেমন করে সবার বুক বেদনায় ফুঁপে উঠে ঠিক একইভাবে আনন্দেরও কমতি থাকেনা।
কম বেশী দেশের প্রত্যেক পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমাবর্তন দেয়া হয়,কিন্তু এই স্বাদ গ্রহন করার ভাগ্য হয়না জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।
সমাবর্তনের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। শনিবার দুপুরে শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এ সময় তারা ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের হাতে ‘কালো গাউন পরার ইচ্ছে আমাদেরও হয়’, ‘আমাদেরও ইচ্ছে হয় টুপি-গাউন জড়িয়ে ছবি তুলতে’, ‘গাউন গাঁয়ে জড়িয়ে মুখে এক চিলতে হাসি রেখে সেলফি তুলতে’-প্রভৃতি প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে।
৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, প্রতিবছরে সমাবর্তন আয়োজন করতে হবে; কলেজগুলোতে সরকার নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত আদায় করা যাবেনা; সকল বিভাগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক ব্যবহারিক কোর্স চালু এবং গবেষণাগার চালু; মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষে শিক্ষক ও ক্লাসরুম সংকট দুর করতে হবে এবং কলেজগুলোকে শুধু সনদপ্রাপ্তির কেন্দ্র না করে সংস্কারের মাধ্যমে কর্মমুখী শিক্ষা পদ্ধতি চালু করতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সমাবর্তন অনুষ্ঠান একজন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষা পরবর্তী সবচেয়ে বড় উপহার। বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যাপিঠ। এখানে পড়াশোনা করে ২৮ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ২৮ বছর পরেও সফলতার সাথে কোন সমাবর্তন আয়োজন করেনি। ২০১৭ সালে ঢাকায় একটি সমাবর্তনের আয়োজন করলেও তা ছিল ত্রুটিপূর্ণ ছিল।
তেঁজগাও কলেজের ছাত্রী ইফরা জাহান বলেন, সমাবর্তন আমাদের ন্যায্য অধিকার। প্রতিবছর যখন নানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান দেখি তখন আমাদের খুব খারাপ লাগে, দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় কেনোইবা এমন ডিফেরেন্স তৈরী করে দিচ্ছে রাষ্ট্র এমন প্রশ্ন করে বসেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
তেজগাঁও কলেজের আবু বকর জানান, আমরা আমাদের সম্মানসূচক বিদায় চাওয়ার পাশাপাশি দেশকে সম্মানের উচ্চ আসনে নিয়ে যাওয়ার জন্য সকল সুযোগ-সুবিধা রাষ্ট্রের কাছে পাওয়ার অধিকার রাখি, সুতরাং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দেশের সকল সচেতন সমাজের কাছে আমাদের দাবী তুলে ধরছি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক মোঃ রহমাতুল্লাহ বলেন, আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর বাংলায় অন্যায়ের ঠাঁই নাই। আমাদের একটাই আশা, একটাই চাওয়া আমাদের উৎসবমুখর বিদায় চাই।