“আমার গ্রাম-আমার শহর” বিনির্মাণে পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, বগুড়া কর্তৃক পরিচালিত গবেষণার ফলাফল সমৃদ্ধকরণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সিরডাপ মিলনায়তন, ঢাকায় আজ ( শনিবার ) অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ কথা বলেন।
শনিবার (২৫ জানুযারী) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে “আমার গ্রাম-আমার শহর” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, আমার গ্রাম আমার শহর বিষয়ে আরডিএ গবেষণা করে যে ফলাফল উপস্থাপন করেছে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সাথে আলোচনাপূর্বক করনীয় নির্ধারণ করবে।
কর্মশালাটিতে “আমার গ্রাম-আমার শহর” গবেষণায় প্রাপ্ত সুপারিশ বাস্তবায়নে করণীয় বিষয় সম্পর্কে উপস্থাপনা প্রদান করেন পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (আরডিএ), বগুড়া’র মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ আমিনুল ইসলাম। এসময় তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার আমার গ্রাম-আমার শহর এর যে স্বপ্ন দেখছেন সেই স্বপ্নের গ্রাম বিনির্মাণে এবং সরকারের ২০২১ ও ২০৪১ এর রূপকল্পে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করার যে প্রয়াস ব্যক্ত করেছেন সেখানে গ্রামগুলোতে নগর সুবিধার প্রসার বাড়ানো সম্ভব হলে বদলে যেতে পারে গ্রামীণ জনগণের জীবনচিত্র, দূর হতে পারে দারিদ্র। জীবনমান উন্নয়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে বাংলাদেশ পৌঁছে যেতে পারে কাংখিত মধ্যম আয়ের দেশে।”
সভাপতির বক্তব্যে মো. রেজাউল আহসান বলেন, আমার গ্রাম আমার শহর” বাস্তবায়িত হলে দেশের সার্বিক উন্নয়ণে গৃহীত সরকারের ভিশন-২০২১, এসডিজি, ভিশন-২০৪১, নির্বাচনী ইশতেহার, সপ্তম-পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনা এবং ডেল্টাপ্লান বাস্তবায়িত হবে এবং বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
গ্রাম উন্নয়ন সম্পর্কিত জাতীয় প্রশিক্ষণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (আরডিএ), বগুড়া “আমার গ্রাম-আমার শহর” বিনির্মাণে সরকারকে নীতি নির্ধারণী সহযোগীতা প্রদানের লক্ষ্যে বিষয়টির নীতি-নির্ধারণী গুরুত্ব অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ে ১৭ টি দলে ৩৮ জন গবেষকের মাধ্যমে জাতি গঠনমূলক ১৭ টি বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রণয়ন করে। গবেষণা এলাকা হিসেবে আরডিএ’র সন্নিকটে বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার চকপাথালিয়া গ্রামকে নির্বাচন করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন ও সরকারি দলিল থেকেও তথ্য সন্নিবেশিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা, গ্রামীণ নিরাপদ পানি ব্যবস্থা, গ্রামীণ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, গ্রামীণ তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থা, গ্রামীণ বাসস্থান, স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থা, গ্রামীণ স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার পরিকল্পনা, গ্রামীণ জনগোষ্ঠির আর্থিক সেবা খাতে অর্ন্তভূক্তি, গ্রামীণ সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক পরিষেবা, গ্রামীণ উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান, গ্রামীণ বাজার ব্যবস্থা, গ্রামীণ নিরাপত্তা ও বিচার ব্যবস্থা, গ্রামীণ সামাজিক নিরাপত্তা, গ্রামীণ দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা, গ্রামীণ শিশু ও নারী উন্নয়ন, গ্রামীণ মানব সম্পদ উন্নয়ন, গ্রামীণ যুব ও ক্রীড়া উন্নয়ন বিষয়ে গবেষণা করা হয়। গবেষণাটি গুণবাচক পদ্ধতিতে পরিচালনা করা হয়েছে এবং গবেষণার তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশ্ব উন্নয়ন সূচক অনুসারে বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজকে বিশ্লেষণ করার জন্য ১৭টি সেক্টরে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মোঃ রেজাউল আহসান এর সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জয়নুল বারী, পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. নুরুল আমিন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব নূর-উর-রহমান। এ সময়ে আরডিএ কর্তৃক নির্মিত “আমার গ্রাম-আমার শহর” শীর্ষক একটি ভিডিও এ্যানিমেশন প্রদর্শন করা হয়।
সানবিডি/ঢাকা/এসআই