খুলনা যশোর অঞ্চলের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট, প্ল্যাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম, জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলে ২৮ হাজার ৪৩৩ মেট্রিক টন পাটজাত পণ্য অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে আছে। যার মূল্য প্রায় ২২৭ কোটি টাকা। পণ্য দ্রুত বিক্রি করা না গেলে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরির অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না পাটকলগুলো।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো খুলনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ীরা খুলনা কার্যালয়ের মাধ্যমে সনদ নিয়ে পাট ও পাটজাত পণ্য, কাঁচা পাট রফতানি করে থাকেন। ভারত, পাকিস্তান ছাড়াও বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, রাশিয়া, জাপান, বেলারুশ, তুরস্ক, পোল্যান্ড, ইতালি, স্পেন, ইসমেনিয়া, যুক্তরাজ্য, গ্রিসসহ বিভিন্ন দেশে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্ল্যাটিনাম জুট মিলের স্থায়ী শ্রমিক মিজানুর রহমান বলেন, এ মিলের শ্রমিকদের ৯ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। গত ১৬ জানুয়ারি নতুন মজুরি স্কেলে এক সপ্তাহের স্লিপ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু ২ সপ্তাহ পার হলেও এখন পর্যন্ত টাকা পাওয়া যায়নি। ৯ সপ্তাহের মজুরি না পেয়ে শ্রমিকরা চরম আর্থিক সংকটে রয়েছে।
প্ল্যাটিনাম জুট মিল সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন বলেন, নতুন মজুরি কমিশনের পে স্লিপ দেওয়া হলেও এখনও টাকা দেওয়া হয়নি। আর গুদামে পাট পণ্য মজুত পড়ে আছে। তা বিক্রির জন্য কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। অথচ ব্যবসায়ীরা কাঁচা পাট, পাটজাত পণ্য রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। আর কার্যকর উদ্যোগ না থাকার কারণে মিলের মজুত পাট পণ্য রফতানি হচ্ছে না।
তিনি বলেন, উৎপাদন কম হওয়ার অজুহাতে বদলি শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বদলি শ্রমিকদেরও অধিকার রয়েছে মিলে কাজ করার।
আলিম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম লিটু বলেন, নতুন মজুরি স্কেল অনুযায়ী স্লিপ পেলেও শ্রমিকদেরকে মজুরি দেওয়া হয়নি। ফলে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দানা বাধতে শুরু করেছে। আলিম জুট মিলে ৮ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। টাকা না পেয়ে আর্থিক সংকটে রয়েছে শ্রমিকরা।
প্ল্যাটিনাম জুট মিলের প্রকল্প প্রধান গোলাম রব্বানী বলেন, উৎপাদন কম থাকায় বদলি শ্রমিকদের কাজ বন্ধ রাখতে বিজেএমসি থেকেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী বদলি শ্রমিকদের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। আর মজুত পাট পণ্য বিক্রি করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু বিক্রির পরিমাণ সন্তোষজনক পর্যায়ে আসেনি।
বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের সমন্বয়কারী বনিজ উদ্দিন মিঞা জানান, অর্থের জোগান না থাকায় শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ করা যাচ্ছে না। খুলনা অঞ্চলের পাটকলে ৮ সপ্তাহে সাড়ে ৬ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। মজুত পাট পণ্য বিক্রি করতে পারলেও মজুরি পরিশোধ করা সম্ভব হতো। এখন বকেয়া পরিশোধে সরকারি অর্থায়নের বিকল্প নেই।
সানবিডি/এনজে