বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ রাব্বী (২২) হত্যা মামলার চার্জগঠনের শুনানি পিছিয়ে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে নতুন এ তারিখ ধার্য করেন।
এদিন মামলাটির চার্জগঠনের শুনানির ধার্য দিনে সকাল ৮টার দিকে ২২ আসামিকে কারাগার থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় এনে রাখা হয়। বেলা ১২টার তাদের ওই আদালতে ওঠানো হয়। বেলা সোয়া ১২টায় শুনানি শুরু হয়।
এদিন কয়েকজন আসামি আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন এবং মামলার কাগজপত্রের সার্টিফাইড কপি চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশ জানান, মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যাবে। প্রজ্ঞাপন এখনো হয়নি। তাই তার আদালত কোন আবেদনই নিস্পত্তি করবে না। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে গেলে সব বিষয় শুনানি হবে বলে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেন।
শুনানিকালে আসামি পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, আমিনুল গণি টিটো, নজরুল ইসলাম, মঞ্জুরুল আলম সহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসন কাজল ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মামলাটিতে গত ১৩ নভেম্বর মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান আদালতে দাখিল করেছেন।
মামলায় কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন, বুয়েট ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার, উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররেফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, মো. মনিরুজ্জামান মনির, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, শিক্ষার্থী মো. মুজাহিদুর রহমান ও এএসএম নাজমুস সাদাত, বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইসাতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, শিক্ষার্থী আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শিক্ষার্থী শাসছুল আরেফিন রাফাত, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষে ছাত্র আকাশ হোসেন, শিক্ষার্থী মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, হোসেন মোহাম্মাদ তোহা, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু। যাদের মধ্যে প্রথম ৮ জন আদালতে স্বীকারোক্তি করেছেন।
অপর ৩ আসামি বুয়েটের ইলেকট্রিক এন্ড ইলেকট্রনিক্স বভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র মুহাম্মাদ মোর্শেদ-উজ-জামান মন্ডল ওরফে জিসান (২২), সিভিল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম (২০) ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র মুজতবা রাফিদ (২১) পলাতক রয়েছেন।
উল্লেখ্য, আবরার বুয়েটের তড়িত্ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। তিনি থাকতেন বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলার ১০১১ নম্বর কক্ষে। গত ৬ অক্টোবর একই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে তাঁকে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়। রাত ৩টার দিকে হল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর তার বাবা বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।