বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় প্রচলিত ছড়া।
‘আয় আয় চাঁদমামা টিপ দিয়ে যা,
চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা’।
অবাধ্য শিশকে ঘুমানোর জন্য এই ছড়াটি সবচেয়ে প্রচলিত এবং জনপ্রিয়।সম্ভবত এমন কোন শিশু নেই যে জীবনে অন্তত একদিনও এই ছড়া শুনে ঘুমাতে যায় নি।ছোটবেলায় রাতে না ঘুমালে যখন মা অথবা বাড়ির অন্য কোনো সদস্য এই গান শোনাতো। তখন কিভাবে যেন চোখে নেমে আসতো রাজ্যের ঘুম।
যেদিন থেকে চাঁদ মামার সাথে পরিচয়।সেদিন থেকেই মনে হয়।এই চাঁদের চেয়ে কাছের বন্ধু মনে হয় আর কেউ নেই।সত্যিই পূর্নিমা রাতের চাঁদের হাসি একেবারে অতুলনীয়।
বিশেষভাবে চাঁদ যেন ঘুমহীন শিশুর চোখে ঘুমানোর জন্যই রাতের আকাশে অমন হাঁসিমুখে উদিত হয়।তবে যে শিশুরা জন্মের পরই মমতাময়ী মাকে হারিয়ে ফেলে।যাদের অতি আদরের বড় বোন থাকে না তারা হামেশাই এই মিষ্টি ছড়া শোনা থেকে বঞ্চিত হয়।বাগানের ফুল যেমন মালি ছাড়া আবর্জনার স্তুপে হারিয়ে যায়।কলি হয়ে ফুল ফুটতে পারে না।তেমনি মায়ের আদর যত্নহীন শিশুর স্বপ্নগুলো সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারে না।
মাতাপিতা হারা এমন অনেক শিশু দেখেছি।যাদের শৈশবটা বড়ই নির্মম।অযত্ন অবহেলায় কাটে প্রতিটি দিন।রাতের বেলা ঘুমানোর সময় কেউ তাদের মিষ্টি করে ঘুম পাড়ানির গান শোনায় না।অধিকাংশ দিন তারা ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায়।এতটুকুন আদরের জন্য তারা হাহাকার করে।তাদের পরণে থাকে না নতুন জামা।উৎসবের দিনগুলোতেও তারা পুরোনো জামা পরে ছল-ছল চোখে চেয়ে থাকে।
অবহেলিত এই শিশুরা যখন দেখে পাশের বাড়ির বড় লোকের শিশুটি নতুন জামা পড়ে গাড়িতে চরে স্কুলে যাচ্ছে।তখন বঞ্চিত এই শিশুরা নিরবে চেখের জল ফেলে।আর রাতে এলে দুর আকাশের চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকে।চাঁদমামা যদি একটি টিপ দিয়ে যায়।
সানবিডি/নুরুজ্জামান