পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের রূপরেখা দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক
পুঁজিবাজার ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০২-১২ ১৯:৩৫:৪৮
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বিশেষ তহবিল গঠন এবং বিনিয়োগের নীতিমালার রূপরেখা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ডিপার্টমেন্ট অব অফ সাইট সুপারভিশন’ এ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করেছে।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ
জানা গেছে,আর্থিক খাতের প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে পুঁজিবাজারে তফসিলি ব্যাংকসমূহের বিনিয়োগের নির্দিষ্ট সীমা ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (২০১৮ পর্যস্ত সংশোধিত) এর ২৬ক ধারায় বিধৃত আছে। দেশের পুঁজিবাজার এবং মুদ্রাবাজারের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনকারী হিসেবে তফসিলি ব্যাংকগুলোর ভূমিকা অনস্বীকার্য। সে হিসেবে পুঁজিবাজারের অস্বাভাবিক উত্থান-পতন ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে । দেশের পুঁজিবাজারে বিরাজমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন অংশীজনের মতামত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব পর্যালোচনায় পরিস্থিতি উন্নয়নে অন্যান্য ব্যবস্থাদি গ্রহণের পাশাপাশি বাজার মধ্যস্থতাকারীদের তারল্য সহায়তা প্রদানের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব লাভ করেছে। সার্বিক বিষয় বিবেচনান্তে পুঁজিবাজারে ক্রমাগত তারল্য প্রবাহ বজায় রাখার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অধীনে তফসিলি ব্যাংক, তফসিলি ব্যাংকসমূহের ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ এর অধীনে গঠিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সাবসিডিয়ারী প্রতিষ্ঠান (মার্চেন্ট ব্যাংক ও ডিলার লাইসেন্সধারী ব্রোকারেজ হাউজ) এবং অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজ (ডিলার)-কে শুধুমাত্র পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় তহবিল সরবরাহের নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছেঃ
১। (ক) প্রতিটি তফসিলি ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে নিম্নের যে কোন উপায় অবলম্বন করে সর্বোচ্চ ২০০.০০ (দুইশত) কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারে –
– নিজস্ব উৎস হতে তহবিল যোগানের মাধ্যমে, অথবা
-ধারণকৃত Treasury bill/ Treasury bond রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহের মাধ্যমে, অথবা
– প্রথমে নিজ উৎস হতে তহবিল গঠন করে পরবর্তীতে Treasury bill/ Treasury bond রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে উক্ত পরিমাণ অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে ।
(খ) এ তহবিল হতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (২০১৮ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ২৬ক ধারায় বর্ণিত বিনিয়োগ সীমার অতিরিক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে এবং SOLO x Consolidated উভয় ভিত্তিতে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ হিসাবায়নের অন্তর্ভূক্ত হবে না। এ সুবিধা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে ।
(গ) ব্যাংকসমূহ ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত যে কোন কার্যদিবসে রেপোর মাধ্যমে বর্ণিত ২০০.০০ (দুইশত) কোটি টাকার সীমার মধ্যে যে কোন অংকের তহবিল বাংলাদেশ ব্যাংক হতে সংগ্রহ করতে পারবে। রেপোর সুদের হার ৫% নির্ধারিত থাকবে এবং কোন প্রকার অকশনের প্রয়োজন হবে না।
(ঘ) ব্যাংকসমূহের অতিরিক্ত তারল্য হতে ট্রেজারী বন্ড বা বিল রেপোর মাধ্যমে এই তারল্য সুবিধা গ্রহণ করতে হবে। ট্রেজারী বন্ড বা বিলের রেপো মূল্যের ৫% মার্জিন হিসেবে রেখে তারল্য সুবিধা প্রদেয় হবে। নগদে রেপোর অর্থ পরিশোধে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখে সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজের বাজারমূল্য আদায়যোগ্য অর্থ অপেক্ষা কম হলে তা ইতোপূর্বে গৃহীত মার্জিন হতে সমন্বয় করা হবে এবং সমন্বয়ের জন্য অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হলে ব্যাংক তা প্রদান করতে বাধ্য থাকবে ।
(ঙ) বাংলাদেশ ব্যাংক হতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চাহিদা অনুসারে সর্বোচ্চ ৯০ দিন মেয়াদী রেপো প্রদান করা হবে । এক্ষেত্রে চাহিদাকৃত দিনের বেশি মেয়াদ রয়েছে বা Coupon payment date চাহিদাকৃত দিনের বেশি রয়েছে এরূপ সিকিউরিটিজ ব্যবহার করতে হবে। উক্ত রেপো বর্ণিত সময়সীমা অর্থাৎ ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে পুনঃনবায়নের সুবিধা থাকবে । তবে, এক্ষেত্রে তহবিল ব্যবহারের সক্ষমতার বিষয়টি বিবেচ্য হবে ।
ব্যাংকসমূহ নিম্নোক্ত শর্তাধীনে এ তারল্য সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেঃ
১. এরূপ তারল্য সুবিধা গ্রহণের জন্য যাচিত অর্থের পরিমাণ উল্লেখপূর্বক মহাব্যবস্থাপক, ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর আবেদন করতে হবে।
২। মেয়াদোত্তীর্ণ রেপো নবায়নের প্রয়োজন হলে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার ৫ কার্যদিবস পূর্বে মহাব্যবস্থাপক, ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর আবেদন করতে হবে । আবেদন দাখিলের সময় সম্পাদিত বিনিয়োগের প্রমাণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব ও বিও হিসাব/হিসাবসমূহের বিবরণ দাখিল করতে হবে।
৩. এতদসংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশে প্রচলিত সংশ্লিষ্ট আইন এবং সময়ে সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারিকৃত অন্যান্য নির্দেশনার পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে ।
(চ) (১) ব্যাংকসমূহ নিজন্ব বিবেচনা এবং সুবিধা অনুসারে নিম্নে বর্ণিত অনুপাতে তহবিল ব্যবহার করতে পারবে । তবে, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও পুঁজিবাজারের সার্বিক স্বার্থে এমনভাবে বিনিয়োগ (নিজে বা ঋণ প্রদানের মাধ্যমে) সম্পাদন করতে হবে যাতে মোট বিশেষ তহবিলের অন্যন ১০% অর্থ মেয়াদি বা বেমেয়াদি বা উভয় প্রকার মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ হয়। অন্যদিকে, বন্ড মার্কেট উন্নয়নের স্বার্থে মোট বিশেষ তহবিলের ১০% সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১ এর অধীনে অনুমোদনপ্রাপ্ত কোন “স্পেশাল পার্পাস ফান্ড (Speacil Purpose Fund)”-এর মাধ্যমে সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (সম্পদ ভিত্তিক সিকিউরিটি ইস্যু) বিধিমালা,২০০৪-এর আওতায় স্বীকৃত কোন সম্পদের বিপরীতে ইস্যুকৃত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ নিজস্ব পোর্টফোলিওতে করতে হবে । তহবিলের বিভাজন হবে নিম্নরূপঃ
১. ব্যাংকের নিজন্ব নতুন পোর্টফোলিও – মোট বিশেষ তহবিলের ৪০%।
২. ব্যাংকের সাবসিডিয়ারী কোম্পানীর নিজস্ব নতুন পোর্টফোলিও (শেয়ার, ভিবেঞ্চার, বন্ড, মিউচ্যুয়াল ফান্ড) গঠনের জন্য খণ হিসেবে – ২০%।
৩. অন্য ব্যাংকের বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবসিডিয়ারী মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউজ এর নিজন্ব নতুন পোর্টফোলিও (শেয়ার, ডিবেঞ্চার, বন্ড, মিউচ্যুয়াল ফান্ড) গঠনের জন্য খণ হিসেবে – ৩০%।
৪. অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউজ এর নিজস্ব নতুন পোর্টফোলিও (শেয়ার, ডিবেঞ্চার, বন্ড, মিউচ্যুয়াল ফান্ড) গঠনের জন্য ঋণ হিসেবে – ১০%।
(চ) (২) ১। ব্যাংকের নিজস্ব পোর্টফোলিও গঠনঃ নতুন পোর্টফোলিও গঠনের জন্য পৃথক বিও একাউন্ট খুলতে হবে। ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যস্ত উক্ত পোর্টফোলিওর বাজার ভিত্তিক পুনঃমূল্যায়ন (শেয়ার, ডিবেঞ্চার, বন্ড, Mutual Fund) স্থগিত থাকবে এবং ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে বিনিয়োগ আর্থিক বিবরণীতে প্রকাশ করতে হবে।
২. সাবসিডিয়ারী কোম্পানীর নিজস্ব পোর্টফোলিও গঠনের উদ্দেশ্যে চলমান ও আবর্তনশীল ঋণ প্রদানঃ এক্ষেত্রে
– ঋণের সর্বোচ্চ সুদ ৭% হবে;
– ঋণ সীমার সর্বোচ্চ মেয়াদ ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত হবেঃ
– পৃথক ব্যাংক হিসাব ও বিও একাউন্ট থাকতে হবে;
– এরূপভাবে গঠিত পোর্টফোলিওর বাজার ভিত্তিক পুনঃমূল্যায়ন ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত স্থগিত থাকবে এবং ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে বিনিয়োগ আর্থিক বিবরণীতে প্রকাশ করতে হবে।
৩. অন্য তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সাবসিডিয়ারী (মার্চেন্ট ব্যাংক ও ডিলার লাইসেন্সধারী ব্রোকারেজ হাউজ) এবং অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজ (ডিলার) এর নিজস্ব পোর্টফোলিও গঠন/বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে চলমান ও আবর্তনশীল ঋণ প্রদানঃ এক্ষেত্রে –
– ঋণের সর্বোচ্চ সুদ ৭% হবে;
– ঋণ সীমার সর্বোচ্চ মেয়াদ ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত হবে;
– ঋণ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্যদের Corporate গ্যারান্টি গ্রহণ করতে হবে;
– ঋণগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের পৃথক বিও একাউন্ট থাকতে হবে এবং উক্ত হিসাবটি চলমান ঋণ হিসাবের সাথে সম্পর্কিত হবে। উক্ত ঋণ হিসাব হতে শুধুমাত্র শেয়ার ক্রয় বাবদ অর্থ DSE/CSE বরাবরে প্রেরণ এবং বিপরীতক্রমে বর্ণিত বিও হিসাব হতে শেয়ার বিক্রয়ের যাবতীয় অর্থ ঋণ হিসাবটিতে জমা করতে হবে ।
– ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে বিও হিসাব-এর সমুদয় সিকিউরিটিজের স্থিতি ঋণপ্রদানকারী ব্যাংক বাজেয়াপ্ত করতে পারবে- এরূপ শর্তহীন অংগীকারনামা খণ বিতরণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতার নিকট হতে আবশ্যিকভাবে গ্রহণ করতে হবেঃ
– তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সাবসিডিয়ারীর ক্ষেত্রে এরূপভাবে গঠিত পোর্টফোলিওর বাজার ভিত্তিক পুনঃমূল্যায়ন ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত স্থগিত থাকবে এবং ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে বিনিয়োগ আর্থিক বিবরণীতে প্রকাশ করতে হবে। পুনঃমূল্যায়নের ক্ষেত্রে অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজ (ডিলার) সংশ্লিষ্ট মূল নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসরণ করবে ।
২। বিনিয়োগ নীতিমালা:
(ক) বর্ণিত তহবিল শুধুমাত্র পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ক্রয়, Listed Fixed Securities (সরকারী ট্রেজারি বন্ডসহ), সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১ এর অধীনে অনুমোদনপ্রাপ্ত কোন স্পেশাল পার্পাস ফান্ড, Close-End মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং Open-End মিউচ্যুয়াল ফান্ড-এ বিনিয়োগের জন্য ব্যবহার করা যাবে |
(খ) ব্যাংক বা ব্যাংকের সাবসিডিয়ারী কোম্পানী (মার্চেন্ট ব্যাংক/ডিলার লাইসেন্সধারী ব্রোকারেজ হাউজ) কর্তৃক কোন তালিকাভুক্ত কোম্পানীর শেয়ার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত শর্তাদি পরিপালন করতে হবে।
১. নিজ ব্যাংকের কোন শেয়ার ক্রয় করা যাবে নাঃ
২. অন্য কোন তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উক্ত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট ইস্যুকৃত শেয়ারের ২ শতাংশের বেশি ক্রয় করা যাবে নাঃ
৩. ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ভিন্ন অন্য কোন কোম্পানীর শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উক্ত কোম্পানীর মোট ইস্যুকৃত শেয়ারের ১০ শতাংশের বেশি ক্রয় করা যাবে না।
(গ) ব্যাংকের সাবসিডিয়ারী কোম্পানী নয় এরূপ মার্চেন্ট ব্যাংক/ব্রোকারেজ হাউজ (ডিলার) কর্তৃক কোন ব্যাংক কোম্পানী বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উক্ত কোম্পানীর মোট ইস্যুকৃত শেয়ারের ২ শতাংশের বেশি ক্রয় করা যাবে না।
(ঘ) মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মোট ইউনিটের ১০% এবং বেমেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মোট ইউনিটের ১৫% এর বেশি ক্রয় করা যাবে না।
নিম্নোক্ত নীতিমালা অনুসারে বিনিয়োগযোগ্য সিকিউরিটিজ নির্ধারিত হবেঃ
(১) ইক্যুয়িটি শেয়ার এর ক্ষেত্রে –
১. যেসব কোম্পানী একাদিক্রমে বিগত ৩ বছর ন্যুনতম ১০% (স্টক বা নগদ বা উভয় প্রকারে) লভ্যাংশ প্রদান করেছে এবং
২. যেসব কোম্পানীর অনূর্ধ্ব ৭০% পর্যন্ত Free Float শেয়ার রয়েছে।
(২) মিউচ্যুয়াল ফান্ড এর ক্ষেত্রে –
১. যেসব মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ড একাদিক্রমে বিগত ৩ বছর ন্যুনতম ৫% নগদ লভ্যাহশ প্রদান করেছে;
২. যেসব বেমেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের নিট এ্যাসেট ভ্যালু অভিহিত মুল্যের বেশি রয়েছে এবং বিগত ৩ বছর ন্যুনতম ৫% নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছে;
৩. এই সা্কুলার জারির তারিখের পর গঠিত মেয়াদি বা বেমেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ড; তবে শর্ত থাকে যে,
নতুনভাবে গঠিত যেসব মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কমপক্ষে ৭০% তালিকাভুক্ত ইকুযুয়িটি এবং বাকি অংশ তালিকাভুক্ত Fixed income Securities বা FDR হিসেবে সংরক্ষণ করবে, শুধুমাত্র সেসব মিউচ্যুয়ালফান্ডে উক্ত অর্থ বিনিয়োগযোগ্য হবে ।
(৩) বন্ড/ডিবেঞ্চারের এর ক্ষেত্রে –
১. ন্যুনতম ১০% কুপন বা সুদবাহী তালিকাভুক্ত করপোরেট বন্ড/ডিবেঞ্চারঃ
২. যেকোন মেয়াদের এবং কুপনবাহী সরকারি বন্ড বা বিল।
(8) স্পেশাল পার্পাস ফান্ড এর ক্ষেত্রে –
১. কোন Public Sector Entity (pse) কর্তৃক ইস্যুকৃত তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে এই উপখাতে বিনিয়োগযোগ্য (মোট বিশেষ তহবিলের ১০%) সম্পূর্ণ অর্থ বিনিয়োগ করা যাবেঃ
২. কোন তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি রেটিং গ্রেড 1 – 3 এবং SME Rating Grade SME1-SMW3 মান সম্পন্ন সম্পদের বিপরীতে বিভিন্ন Tranch-এ ইস্যুকৃত Securitized product -এর ক্ষেত্রে 1st Tranch (দীর্ঘমেয়াদি রেটিং গ্রেড 1 /SME1 এবং উভয় ক্ষেত্রে স্বল্প মেয়াদি S1), 2nd Tranch দীর্ঘমেয়াদি রেটিং গ্রেড 2 / SME এবং উভয় ক্ষেত্রে স্বল্প মেয়াদি S2) এবং 3rd Tranch (দীর্ঘমেয়াদি রেটিং থেড 3 / SME3 এবং উভয় ক্ষেত্রে স্বল্প মেয়াদি 53) ভুক্ত সম্পদের বিপরীতে ইস্যুকৃত সিকিউরিটিজে এই খাতে বরাদ্দকৃত বিশেষ তহবিলের যথাক্রমে ৪০%, ৩০% ও ২০%বিনিয়োগ করা যাবে ।
৩. Bangladesh Securities and Exchange Commission (BSEC) কর্তৃক স্বীকৃত সম্পদের বিপরীতে কোন একক বেসরকারি কোম্পানী কর্তৃক ইস্যুকৃত সিকিউরিটিজ যার মেয়াদ সর্বোচ্চ ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত এবং যা প্রথম সাবস্কিপশনের তারিখ হতে ১ বছরের মধ্যে তালিকাভুক্ত হওয়ার আবেদনের বিষয়ে এ কোম্পানী নিশ্চয়তা বিধান করবে – এরূপ সিকিউরিটিজে এই খাতে বরাদ্দকৃত বিশেষ তহবিলের সর্বোচ্চ ৪০% বিনিয়োগ করা যাবে । আরও শর্ত থাকে যে, তালিকাভুক্ত না হতে পারলে উক্ত কোম্পানি সমুদয় সিকিউরিটিজ পুনপক্রয় করতে বাধ্য থাকবে মর্মে আদালতে উপস্থাপনযোগ্য ব্রিপক্ষীয় (ইস্যুয়ার, স্পেশাল পার্পাস ফান্ড এবং বিনিয়োগকারী) লিখিত চুক্তিনামা থাকতে হবে এবং বিনিয়োগকৃত অর্থকে মেয়াদি খণ হিসেবে বিবেচনাপূর্বক CIBতে রিপোর্ট করতে হবে ।
৩। অন্যান্য নিয়মাবলী
১।এ তহবিল হতে ব্যাংক কর্তৃক সাবসিডিয়ারী কোম্পানীতে প্রদত্ত খণ এবং অন্য কোন মার্চেন্ট ব্যাংক বা বোকারেজ হাউজ (ডিলার)-কে প্রদত্ত খণ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ADR হিসাবায়নের অন্তর্ভুক্ত হবে না; অর্থাৎ, এরপ প্রদত্ত খণ দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচ্য হবে। তবে, চলমান খণ হিসেবে বিবেচনাপূর্বক ICBতে রিপোর্ট করতে হবে;
২। এরূপ প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে Risk Weight ১০০% হবে;
৩। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে Singel Borrower Exposure Limit সহ প্রচলিত সকল ঋণ নিয়মাচার অনুসরণ করতে হবে;
৪। তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক Singel Borrower Exposure Limit এর মধ্যে কোন মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউজ (ডিলার)-কে (সাবসিডিয়ারী প্রতিষ্ঠানসহ) এই সার্কুলারের নির্দেশনার আওতায় প্রদত্ত ঋণ সীমার পরিমাণ উক্ত প্রতিষ্ঠানের paid up Capital -এর ১০০% এর বেশি হবে নাঃ
৫। কোন মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউজ (ডিলার) কর্তৃক একাধিক উৎস (ব্যাংক) হতে এই সার্কুলারের নির্দেশনার আওতায় গৃহীত খণ সীমার মোট পরিমাণ উক্ত মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউজ (ডিলার)-এরpaid up Capital -এর ১০০% এর বেশি হবে না। এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট খণদানকারী প্রতিষ্ঠানকে খণ প্রদানের পূর্বে নিশ্চিত করতে হবে;
৬।মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউজ (ডিলার) কর্তৃক একাধিক ব্যাংক হতে এই বিশেষ তহবিলের আওতায় খণ গ্রহণ করলে প্রতিটি ক্ষেত্রে পৃথক ব্যাংক ও বিও হিসাব খুলতে হবে।
৭।বাংলাদেশ ব্যাংকের চাহিদানুযায়ী যে কোন সময় বিও হিসাব সংশ্লিষ্ট সমুদয় তথ্য ও দলিলাদি বাংলাদেশ ব্যাধকে দাখিল করতে বাধ্য থাকবে” – মর্মে ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান খণ গ্রহীতার নিকট থেকে অঙ্গীকারনামা গ্রহণ করবে।
৪। বিবরণী দাখিল :
১। কোন ব্যাংক নিজন্ব উৎস হতে তহবিল গঠন করলেও তা মহাব্যবস্থাপক, ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক-কে পত্র মারফত অবহিত করতে হবে । বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করার তারিখ হতে আলোচ্য নীতিমালায় বর্ণিত সুবিধাদি প্রযোজ্য হবে।
২। প্রতি ত্রৈমাস অন্তে পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে সংযুক্ত ছক (SFCM) অনুসারে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব ও বিও হিসাব/হিসাবসমূহের বিবরণীসহ, তথ্যাদি ডিপার্টমেন্ট অব অক-সাইট সুপারভিশনে দাখিল করতে হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট খণদানকারী ব্যাংক খণ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহপূর্বক তা সমন্বিত আকারে SFCM ছকে সংযোজন করতঃ বিবরণীর সক্ট কপি দাখিল করতে হবে । SFCM ছকটির সফ্ট কপি প্রয়োজন অনুসারে ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন হতে সংহ করতে হবে।
৫। অন্যান্য :
ইতোপূর্বে জারিকৃত ডিওএস সার্কুলার নং-০৬/২০১৯ বাতিল করা হলো । উক্ত সার্কুলারের আওতায় তারল্য সুবিধা গ্রহণকারী ব্যাংক নতুন নীতিমালার আওতায় পুনরায় আবেদন করবে ।
সানবিডি/এসকেএস