পুঁজিবাজারের বিষয়ে যুগান্তকারী পদক্ষেপ বাংলাদেশ ব্যাংকের:বিএমবিএ
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০২০-০২-১৫ ২১:২৭:২৪
পুঁজিবাজারের তারল্য সংকট সমাধানে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংক এ যুগান্তকারী নীতি সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো: ছায়েদুর রহমান। আজ শনিবার ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর হোটেল ৭১ এ সাম্প্রতিক পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ধন্যবাদ জানান তিনি।
মো: ছায়েদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। নতুন করে স্বপ্ন দেখছে বিনিয়োগকারীরা। নতুন সার্কুলারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহ ও সাহস বাড়ছে। এ সহায়তা কোন প্রকার দান বা ভর্তুকি নয়। এটি নিয়ে অপপ্রচার করার কোন যৌক্তিকতা নেই বলে মনে করেন তিনি।
এই পদক্ষেপের জন্য তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রী, অর্থ উপদেষ্টা, অর্থ সচিব,বিএসইসির চেয়ারম্যান,বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে পুঁজিবাজার উন্নয়নে আটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)। এগুলো হলো:
০১. সচেতন বিনিয়োগ অর্থনৈতিক উন্নতির প্রধান শর্ত। সচেতন ও সঠিক বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগকারীদের সচেতন করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য। সেই প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগ শিক্ষা প্রসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া।
০২. সরকারের নীতি নির্ধারণী পক্ষসমূহের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা ও সমন্বয় সাধন করা। প্রয়োজনীয় আইনী পরিবর্তন ও পরিবর্ধন এর সুপারিশ করা।
০৩. পুঁজিবাজারের সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে সমন্বয় সাপেক্ষে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সমুন্নত রাখা।
০৪. ভাল উদ্যোক্তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো। কেননা ভাল উদ্যোক্তা ব্যতিত পুঁজিবাজার তথা অর্থনৈতিক উন্নতি অসম্ভব।
০৫. পুঁজিবাজারের আকার বৃদ্ধিতে গুনগত মান সমৃদ্ধ বৃহৎ শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষের সাথে সমন্বয়ের চেষ্টা করা।
০৬. পুঁজিবাজারের সার্বিক মূল্যায়নের জন্য সকল অংশীজনের সমন্বয়ে প্রতি ছয় মাসে ১টি বৃহৎ সেমিনার করার উদ্যোগ নেয়া।
০৭. আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত/প্রচলিত অথচ আমাদের পুঁজিবাজারে অনুপস্থিত সেই সকল বিষয়ে অংশীজনের সাথে আলোচনা ও সমন্বয় করা এবং প্রয়োজনীয় আইনের জন্য সুপারিশ করা।
০৮. বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সমন্বয়ে বছরে ১টি আন্তর্জাতিক সেমিনার করা।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মো: ছায়েদুর রহমান জানান, ২০২০ সাল মুজিব বর্ষ-কমিশনের শ্লোগানের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, আমরা মনে করি “মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, উন্নয়ন-অর্থায়নের উৎস হবে পুঁজিবাজার”। যে কোন দেশের উন্নয়নের মাত্রা পরিমাপে পুঁজিবাজার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। আমাদের দেশে পুঁজিবাজার এখনও আশানুরুপ অবস্থায় পৌছায়নি। তবে আমরা আশা করি অচিরেই পুঁজিবাজার দৃশ্যমান উন্নয়নে পৌছাবে। যে কোন বিষয়েই উন্নয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। সময়ের সাথে আইন, কাঠামো, পদ্ধতি সকল বিষয়ে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নয়নের চেষ্টা করতে হবে। সকল অংশীজনের সমন্বয়ে পুঁজিবাজার গতিশীল হবে।
ছায়েদুর রহমান আরও বলেন, আমরা প্রায়ই লক্ষ্য করি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের অভাব এবং আইপিও এর মান নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়; কিন্তু সুনির্দিষ্ট পরিমাপ বা সুনির্দিষ্ট সুপারিশ উপস্থাপিত হয় না। বর্তমানে একটি আইপিও প্রায় ৪০০ তথ্য ও শর্ত পালন ও প্রকাশ করে আইপিওতে আসে। সেক্ষেত্রে যদি আরও সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য বা শর্ত যোগ করার প্রয়োজন মনে হয় বা করলে মান উন্নত হয়; সে বিষয়ে সুপারিশ তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কমিশনে পাঠানো যেতে পারে।
তিনি বলেন, এটি করা গেলে পুঁজিবাজার উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের এ নবনির্বাচিত কমিটি সুশাসনের বিষয়ে বিএমবিএ এর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করবে। বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের মূল চালিকা শক্তি হলো হিসাব বিবরণী এবং এর সময় উপযোগী মান উন্নয়নের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে। সে আলোকে হিসাব-বিদদের সংগঠন আইসিএবি এবং এফআরসি এর সাথে আলোচনা করা হবে। তাছাড়া এ বিষয়ে আগামী মার্চে একটি সেমিনার করার পরিকল্পনা রয়েছে। শক্তিশালী পুঁজিবাজার গঠনে বিএমবিএ এর পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা হবে বলে জানান তিনি।