পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেডের দুই উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের সব শেয়ার হস্তান্তরের অনুমোদন দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। কোম্পানিটির দুই পরিচালক কুতুবুদ্দীন আহমেদ ও আব্দুস সালাম মুর্শেদীর কাছে এ শেয়ার হস্তান্তর হবে। এনভয়ের দুটি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান হলো- ডর্নিক অ্যাপারেলস লিমিটেড ও সুপ্রিম অ্যাপারেলস লিমিটেড।
কোম্পানির সূত্র মতে, প্রতিষ্ঠান দুটির হাতে ১ কোটি ৬২ লাখ ৭৯ হাজার ৩০০টি শেয়ার রয়েছে। হাইকোর্টের আদেশক্রমে ডিএসইর অনুমোদনপত্র পাওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এ শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (লিস্টিং) রেগুলেশনস, ২০১৫-এর ৪৭ নম্বর বিধান মেনে শেয়ারগুলো হস্তান্তর করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র অনুযায়ী, উল্লিখিত মোট ১ কোটি ৬২ লাখ ৭৯ হাজার ৩০০টি শেয়ারের মধ্যে ১ কোটি ২৯ লাখ ২৪ হাজার ৬০৬টি ডর্নিক অ্যাপারেলস ও ৩৩ লাখ ৫৪ হাজার ৬৯৪টি সুপ্রিম অ্যাপারেলসের কছে রয়েছে। শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় কুতুবুদ্দীন আহমেদ ও আব্দুস সালাম মুর্শেদী উভয়ই কোম্পানিটির ৮১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৫০টি করে শেয়ার পাবেন।
সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাদের কাছে বর্তমানে এনভয় টেক্সটাইলসের যথাক্রমে ৩৬ লাখ ৭৪ হাজার ১৩ ও ৪৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৪১টি শেয়ার রয়েছে। কুতুবুদ্দীন আহমেদ বর্তমানে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ও আব্দুস সালাম মুর্শেদী ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব পালন করছেন।
এনভয় টেক্সটাইলসের কোম্পানি সেক্রেটারি এম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী জানান, সম্প্রতি ইপক গার্মেন্টস লিমিটেডের সঙ্গে ডর্নিক অ্যাপারেলস ও সুপ্রিম অ্যাপারেলসের অ্যামালগামেশন সম্পন্ন হয়েছে। ফলে ডর্নিক ও সুপ্রিম অ্যাপারেলসের কাছে থাকা এনভয় টেক্সটাইলসের সব শেয়ার ইপক গার্মেন্টস পাবে। এদিকে কুতুবুদ্দীন আহমেদ ও আব্দুস সালাম মুর্শেদী ইপক গার্মেন্টসের পরিচালক হওয়ায় এনভয় টেক্সটাইলসের ১ কোটি ৬২ লাখ ৭৯ হাজার ৩০০টি শেয়ার তাদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।
রফতানিমুখী পরিবেশবান্ধব ডেনিম কোম্পানি এনভয় টেক্সটাইলস ২০১২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এর অনুমোদিত মূলধন ৪০০ কোটি, পরিশোধিত মূলধন ১৬৭ কোটি ৭৩ লাখ ৫০ হাজার ও রিজার্ভে রয়েছে ৩৬৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ১৬ কোটি ৭৭ লাখ ৩৪ হাজার ৭৬৭। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে ৪৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪১ দশমিক ৯৭, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক শূন্য ৭ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে বাকি ১২ দশমিক ৩৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে এনভয় টেক্সটাইলস। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৩১ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২ টাকা ১ পয়সা। ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ৩৮ টাকা ৩৫ পয়সা, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৩৮ টাকা ১ পয়সা।
এদিকে সর্বশেষ অনিরীক্ষি আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) এনভয় টেক্সটাইলসের ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ১৫ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ৭২ পয়সা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ইপিএস হয়েছে ৫৯ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৭০ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা ৯৭ পয়সা।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের মোট ১২ শতাংশ লভ্যাংশ দেয় এনভয় টেক্সটাইলস। এর মধ্যে ১০ শতাংশ নগদ ও ২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। এছাড়া ২০১৭ হিসাব বছরে ৭ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা।
সর্বশেষ সার্ভিল্যান্স রেটিং অনুসারে এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেডের ঋণমান ‘ডাবল এ ওয়ান’। ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিআরএবি)।