খুব দ্রুতই সমৃদ্ধশালী পুঁজিবাজার দৃশ্যমান হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০২০-০৩-০৩ ২৩:৪৯:৩৬
খুব দ্রুতই সমৃদ্ধশালী পুঁজিবাজার দৃশ্যমান হবে মনে করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন। এটি আগামী এক বছরের মধ্যেই হবে। এছাড়া শীঘ্রই একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক অবকাঠামো তৈরিতে পুঁজিবাজার অব্যাহতভাবে অবদান রাখবে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে উন্নত এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।
মঙ্গলবার (৩ মার্চ) রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আয়োজিত ‘পুঁজিবাজারের উন্নয়নে আর্থিক প্রতিবেদনের গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এবং কমিশনের পক্ষ থেকে যে সমস্ত সংস্কার করা হয়েছে, সেগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মনে করি খুব শীঘ্রই পুঁজিবাজারে সুদিন আসবে। সেই প্রত্যাশা করছি।তবে আমাদের এসকল প্রত্যাশা এবং প্রচেষ্টা ব্যার্থ হয়ে যাবে, যদি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার জায়গা নিশ্চিত না হয়।
তিনি আরও বলেন, আজকের বাজারের অন্যতম ক্রাইসিস হল আস্থার অভাব। আস্থার সাথে সম্পৃক্ত ইকুইটি সাপ্লাই, ব্যাংকিং সেক্টরের অবস্থা, ইন্টারেস্ট রেট, যেগুলোতে অনেকে ভুল বুঝেন। আপনারা জেনে রাখবেন, মানি মার্কেটে যদি ইন্টারেস্ট রেট কমে, তাহলে ক্যাপিটাল মার্কেটে তারল্য সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। এজন্য কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু এ নিয়ে ব্যাংকের মুনাফা কমে যাবে বলে বাজারে গুজব আছে। যা ঠিক না।
পুঁজিবাজারের আস্থা নষ্ট হওয়া এবং স্থিতিশীলতা বিকৃত হবার অন্যতম কারন দেখিয়ে তিনি বলেন, ফাইন্যান্সিয়াল ডিসক্লোজারের বিশ্বাসযোগ্যতার অনুপস্থিতি পুঁজিবাজারের স্ট্যাবিলিটি মেইন্টেইন্যান্সে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তিনি আফসোস করে বলেন, একটি কোম্পানিতে তিন ধরনের রিপোর্ট তৈরি হয়। একটি রিপোর্ট কোম্পানিতে আসলেই কি হচ্ছে সেটার, পরিকল্পনা অনুযায়ী রিপোর্ট। কোম্পানি কোন সেক্টরে তার অপারেশন বাড়াবে, কোনদিকে কমাবে, কোনদিকে বন্ধ করবে, অথবা এক বিজনেস বন্ধ করে নতুন বিজনেস চালু করবে। আরেকটি হচ্ছে ইনকাম ট্যাক্সের জন্য, সেখানে কোম্পানির প্রকৃত ইনকাম পরিবর্তিত করে কমিয়ে দেখানো থাকে। যাতে করে তার ট্যাক্স কম দিতে হয়। আরেকটি রিপোর্ট হল বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য ইনকাম আবার বাড়িয়ে তৈরি করা হয়। এই অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কোম্পানির মালিক এবং উদ্যোক্তাদেরসাথে বৈঠক করব। যাতে করে তাদের এই অনৈতিক ব্যবস্থাপনা থেকে বের করে আনা যায়।
এছাড়া এসব দুর্নীতি বন্ধে সিএফও এবং অডিটরদের নিজেদের জায়গা থেকে শক্ত অবস্থানের জন্য অনুরোধ করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। কোম্পানির মালিক কিংবা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে, নিজ পেশাদারির নৈতিকতার প্রতি সম্মান দেখানো এবং গুরুত্ববোধের জায়গা তৈরি করলে, এসব দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন,একটি কোম্পানির একেক জায়গায় একেক রকম আর্থিক হিসাব জমা দেওয়ার অভিযোগ আছে। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে তিনি আর্থিক হিসাব সংরক্ষনের হন্য একটি সেন্ট্রাল ডাটাবেজ তৈরী করার প্রস্তাব রাখেন। এসময় তিনি বলেন, সচেতনতা বাড়ানোর জন্য আজকের এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফাইনাসিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুস্তাক আহমেদ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেনবিএমবিএর নির্বাহি কমিটির সদস্য মীর মাহফুজুর রহমান।