বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রতিটি স্তরে পৌঁছে গিয়েছে ভয়াবহ নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাব। এই আক্রমন থেকে বাদ পড়েনি ভারতের হীরা রফতানি খাতও। ২০১৯-২০ অর্থবছরে (এপ্রিল-মার্চ) দেশটির হীরা রফতানি ২০ শতাংশ কমতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড ও দ্য টেলিগ্রাফ।
ইতিমধ্যে ভারত থেকে হীরা রফতানি নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে। দেশটির জেমস অ্যন্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের (জিজেইপিসি) দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (এপ্রিল ২০১৯-জানুয়ারি ২০২০) মসৃণ হীরা রফতানি থেকে দেশটি মোট ১ হাজার ৬৩২ কোটি ডলার আয় করেছে, আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১৭ শতাংশ কম। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে এ খাতে দেশটি মোট ১ হাজার ৯৬১ কোটি ডলার আয় করেছিল। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে মসৃণ হীরা রফতানি থেকে এরই মধ্যে দেশটির আয় ৩২৯ কোটি ডলার কমে গিয়েছে।
চীনের প্রাচীর টপকে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস হানা দিয়েছে বিভিন্ন দেশে। ভাইরাসটি প্রতিরোধে সাধ্যমতো চেষ্টা করছে আক্রান্ত দেশগুলো। এরই মধ্যে বাণিজ্য ও ভ্রমণে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে অনেক দেশ। মূলত এ কারণেই ভারতের হীরা রফতানি খাত বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ভাইরাসটি বৈশ্বিক মহামারীতে রূপান্তরিত হওয়ায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও (জানুয়ারি-মার্চে) দেশটির হীরা রফতানিতে নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় থাকতে পারে বলে মনে করছে জিজেইপিসি।
চীনে বর্তমানে নভেল ভাইরাসের প্রভাব কিছুটা প্রশমনের পথে এগোচ্ছে। তবে এর প্রভাবে দেশটির অর্থনৈতিক গতি শ্লথতায় পরিণত হতে পারে। এদিকে ভারত থেকে রফতানি হওয়া মসৃণ হীরার সবচেয়ে বড় বাজার চীন। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশটি থেকে রফতানি হওয়া মোট মসৃণ হীরার ৪০ শতাংশর ক্রেতা চীনের ব্যবসায়ীরা। এ পরিস্থিতিতে চীনের বাজারে মূল্যবান পাথরটির রফতানিতে ধস নামতে পারে, যার প্রভাব পড়বে সামগ্রিক রফতানিতে।
চীন ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রচুর হীরা রফতানি করে ভারত। দেশটি থেকে রফতানি হওয়া মোট হীরার ৩৫ শতাংশের গন্তব্যস্থল যুক্তরাষ্ট্র। পণ্যটির অন্যান্য শীর্ষ রফতানি গন্তব্য যথাক্রমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মধ্যপ্রাচ্য ও জাপান।
জিজেইপিসির সহসভাপতি কোলিন সাহ জানান, চলতি অর্থবছর ভারত থেকে হীরাসহ অন্যান্য রত্ন বা মূল্যবান ধাতুর অলংকার রফতানি আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৫-২০ শতাংশ কমতে পারে।
এ ব্যাপারে মুম্বাইভিত্তিক কোম্পানি ক্রিসিল রেটিংসের পরিচালক রাহুল গুহ জানান, নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে চলতি অর্থবছর ভারতের হীরা রফতানি খাত সবচেয়ে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে পারে। তবে এ ধাক্কা আগামী অর্থবছরও বজায় থাকতে পারে। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত খাতটিতে এ মন্দা ভাব বজায় থাকতে পারে। তবে পরের অর্ধাংশে মূল্যবান পাথরটি রফতানিতে মন্দা ভাব অনেকটা কাটিয়ে উঠতে পারে দেশটি।
সানবিডি/এনজে