বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দায়ের করা প্রসপেক্টাসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েসের বিরুদ্ধে শেয়ার কেলেঙ্কারি মামলার প্রয়োজনীয় আদেশ দাখিলের শুনানি আগামী ২২ এপ্রিল ধার্য করেছে পুঁজিবাজারের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল।
সম্প্রতি পুঁজিবাজার বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হাছিনা রৌশন জাহান ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েসের মামলার শুনানির দিন ধার্য করে এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, এর আগে গত ১২ জানুয়ারিতে ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েসের আইনজীবী বিএসইসি’র দায়ের করা শেয়ার কেলেঙ্কারি মামলার ওপর উচ্চ আদালতের দেয়া স্থগিতাদেশ পুঁজিবাজার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন। উচ্চ আদালতের দেয়া স্থগিতাদেশ দাখিলের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আরো প্রয়োজনীয় আদেশ দাখিলের জন্য আগামী ২২ এপ্রিল আসামি পক্ষের শুনানির দিন ধার্য করেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের (বিএসইসি) আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিষয়ক বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) রেশমা শেখ সানবিডিকে বলেন, ‘ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েসের মামলাটি হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। ইতোমধ্যে আসামি পক্ষ হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশের কপি পুঁজিবাজার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২২ এপ্রিল মামলাটির আরো প্রয়োজনীয় আদেশ দাখিলের জন্য আসামি পক্ষকে আদেশ দিয়েছেন পুঁজিবাজার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল।’
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েস অসৎ উদ্দেশ্যে, ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রসপেক্টাসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করেছে। কোম্পানিটি তাদের শেয়ার বিক্রি জোরদার করার লক্ষ্যে এ পন্থা বেছে নিয়েছে, যা বিএসইসি’র তদন্তে উঠে এসেছে। ২০০১ সালের ১৭ জানুয়ারি ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েসসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিএসইসি। পরে মামলাটি দায়রা জজ আদালত থেকে গত ১২ জুন ২০১৫ তারিখে পুঁজিবাজার বিশেষ টাইব্যুনালে স্থানান্তর হয়। বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মামলার নম্বর দেয়া হয় ১৫/১৫। পরে ওই মাসেই মামলাটি চার্জ গঠন করা হয়।
পরবর্তীতে ওই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট মামলাটির কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ দেন। এরপর থেকেই মামলাটি হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েসের মামলাটির সর্বশেষ ছয় মাসের স্থগিতাদেশ শেষ হয়েছে। তাই নতুন করে মামলাটির ওপর স্থগিতাদেশ নেয়ার জন্য আসামি পক্ষ হাইকোর্টে আবেদন করে। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষতে হাইকোর্ট নতুন করে মামলাটির ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েসের শেয়ার কেলেঙ্কারি মামলার মোট ১১ জন আসামি রয়েছেন। এর মধ্যে মাত্র একজন আসামি (প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এমডি কামরুন নেছা) জামিনে আছেন। বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
আসামিরা হলেন- ওয়ান্ডার ল্যান্ড টয়েস লিমিটেড, প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এমডি কামরুন নেছা, মো. মুকতাদুল হক হায়দারী, এএ ভাসওনী, মনোনীত পরিচালক, ফাঙ্কায় চেন, ন্যাশনাল সিকিউরিটিজ অ্যান্ড কনসাল্টেড লিমিটেড, পরিচালক খান মোহাম্মদ একরামুল্ল্যা, শাহজাহান কবির, সৈয়দ শফিকুল হক, হাবিবুল ইসলাম হক ও মোস্তফা বিল্লাহ খান।