ঘোর অমানিশা পার করছে পৃথিবী। মৃত্যুর হাতছানি সবখানে। এই করোনা খুবই ভয়াবহ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা-পূর্ব পৃথিবী আর করোনা-পরবর্তী পৃথিবী এক থাকবে না। অসহনীয় এই সময়টায় একটু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। বিশেষ করে ছোট্ট সোনামণিদের। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের চেয়ে শিশুরা অনেক অসহায়। তাদের শরীরেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। ছোট শিশু মুখেও তার সমস্যার কথা বলতে পারে না। তাই এ সময়টায় শিশুর চাই বিশেষ যত্ন ও সতর্কতা।
যে মহামারি আকারে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে তাতে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ একটু হলেও ব্যাহত হতে পারে। কিন্তু দুঃসময় মোকাবিলায় এখন চাই বাড়তি একটু সতর্কতা।
এ সময়ে বাসায় যেটি বেশি দরকার, তাহলো একটি ভালো স্যানিটাইজার। বাইরে থেকে এসেই ঘরের শিশুকে স্পর্শ করা যাবে না। ভালো করে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিস্কার করতে হবে। বাইরের পোশাক বদলাতে হবে। তারপর শিশুর কাছে যেতে হবে। শিশুরা খেলনা, ঘরের মেঝে, দরজার হাতল, টেবিল- যেসব বস্তু বেশি স্পর্শ করে থাকে, সেগুলো একটু পরপর ডিটারজেন্ট ও পানি দিয়ে পরিস্কার রাখুন।
যেহেতু এখন স্কুল বন্ধ, শিশু ঘরে থেকে বিরক্ত হতে পারে। তাই ঘরেই তার সঙ্গে খেলায় মেতে উঠতে পারেন বাবা-মা। শিশুকে বই পড়তে, গান শুনতে বা কিছু লিখতে দিন। এভাবে সৃষ্টিশীল কাজে বাড়ির শিশুকে নিয়ে মেতে থাকুন। সারাদিন মোবাইল বা টিভি দেখলে শিশুর আসক্তি তৈরি হতে পারে। তাই তা না করাই ভালো।
বাড়ির কেউ সর্দি, কাশি, জ্বরে আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে আলাদা করা প্রয়োজন। অসুস্থ ব্যক্তির কাছে শিশুকে যেতে দেবেন না।
বিদেশফেরত কাউকে দেখতে যাওয়ার দরকার নেই। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া হাসপাতাল বা চিকিৎসকের চেম্বারে না যাওয়াই এ সময়ে ভালো। মুভি থিয়েটার, মার্কেট, খাবার দোকান, স্বজনের বাড়ি বা দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সময় এখন নয়। স্কুলপড়ূয়া শিশুর কোচিং, নাচ, গান, সাঁতারের ক্লাসে যাওয়াও বন্ধ রাখা উচিত।
শিশু বড় হলে তাকে শেখানো যেতে পারে করোনা কীভাবে ছড়ায়, এর প্রতিরোধের উপায় কী- এ বিষয়গুলো। স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়ার নিয়ম দেখিয়ে দিতে হবে। হাত দিয়ে নাক স্পর্শ না করা, হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢাকা, তারপর টিস্যু যথাস্থানে ফেলা- এসব বিষয়ে শিশুকে প্রশিক্ষিত করে তুলুন।
ছাদে বা বারান্দার যেসব জায়গায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা আছে সে জায়গাগুলো এড়িয়ে চলুন। অল্প ক'দিনের জন্য হলেও এ সময়ে এগুলো মেনে চলা উচিত।
শিশুকে একান্তভাবে কাছে পাওয়ার সময় এখনই। তাই ঘরেই যেন আনন্দে থাকে শিশু- এমন ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। শিশুকে বোঝাতে হবে, আমরা কিছু দিনের জন্য একটি দুঃসময় পার করছি। এটা অল্প কিছু দিনের মধ্যে কেটে যাবে। করোনায় শিশুসহ পরিবারের সবাই মিলে সতর্কতার সঙ্গে সময় কাটানো হবে এ সময়ের কাঙ্ক্ষিত কাজ।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস