সরকারের কঠোরতা, ব্যক্তিগত সতর্কতা ও ধৈর্য্যই পারে করোনা ঠেকাতে
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৩-৩০ ০৮:৩১:১৭
আমাদের দেশে গত ১৫ই মার্চ (রোববার ) পর্যন্তআক্রান্তহয় ৩ জন। যা আজপর্যন্ত (২৪শে মার্চ, রোজ মঙ্গলবার) বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৩৩ জনে। ১০ দিনে বেড়েছে ১১ গুণ। মৃতেরসংখ্যা ৩। এই মুহূর্তে আমাদের প্রয়োজন ধৈর্য্য এবং সতর্কতা। সরকারের কঠোরতা, ব্যক্তিগত পর্যায়ে ধৈর্য্য এবং সতর্কতার মাধ্যমে করোনা ভাইরাসকে প্রতিহত করা যাবে ইনশাআল্লাহ।
সরকারী পর্যায় :
১. পোর্ট কন্ট্রোলে আরও কঠোর হতে হবে।
২. স্ক্রিনিংয়ে আরও কঠোরতা অবলম্বন করতেহবে।
৩. আইসোলেশন এবং কোয়ারেনটাইনে আরও কঠোরতা অবলম্বন করতেহবে।
৪. পরীক্ষা( PCR) করার পরিধি বাড়াতে হবে। যে সমস্ত দেশ করোনা নিয়ন্ত্রনে সফলতা অর্জন করেছে তার একটি কারণ ছিল পিসিআর এর মাধ্যমে দ্রুত রোগ নিরুপণ।
৫. হেল্থ পার্সনালদের প্রটেকশন শতভাগ কার্যকর করতে হবে। তারা যদি আক্রান্ত হন পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ধ্বস নামবে। এই ক্ষেত্রে শিথিল হওয়ার কোন সুযোগ নেই।
আমাদের সরকার এই সমস্ত ক্ষেত্রে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা প্রশংসনীয়। তবে এখনও পর্যাপ্ত পর্যায়ে পৌঁছে নাই। সরকার এগিয়ে যাচ্ছেন। আশা করি সামনে শতভাগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে সতর্কতা :
১. একা থাকুন, ৬ ফিট (কম পক্ষে ৩ ফিট) দূরে থাকুন। অতীব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না,বাহিরের মানুষকে (অন্য কাউকে) ঘরে আসার জন্য উৎসাহিত করবেননা।
২. ব্যক্তিগত সুরক্ষার পদ্ধতিগুলোকে অভ্যাসে পরিণত করুন।
ক) হাত ধোয়া : হাত ধোয়ার পদ্ধতি আপনারা সবাই জানেন। এখানে তা বলছি না তবে কখন হাত ধুবেন, কতবার হাত ধুবেন এটা নিয়ে কিছু বলছি-
১) বাহির থেকে আসার পর হাত ধুয়ে ঘরে ঢুকবেন।
২) কোন ব্যবহারের জিনিস ধরার পরে হাত ধুবেন।
৩) যদি মুখ মন্ডলেহাত দেওয়া অত্যাবশ্যকীয় হয়ে উঠে তাহলে হাত ধুয়ে মুখমন্ডল স্পর্শ করুন।
৪) গৃহস্থালী কাজ করার পর হাত ধুবেন।
৫) টাকা গণনা করার পর হাতধুবেন।
৬) এছাড়াও দিনে ৫ বার, ১০ বার এমনকি দুইঘণ্টা পর পর হাত ধুবেন।
খ) থুথু ফেলা :নির্দিষ্ট স্থান ব্যতিরেকে কফ, থুথু ফেলবেন না।
গ) হাত দিয়ে মুখমন্ডল স্পর্শ করবেননা।
ঘ) মাস্ক ব্যবহার এবং মাস্ক খোলা সম্পর্কে জেনে নিন।
ঙ) ঘরের আসবাবপত্র, টেবিল, চেয়ার ইত্যাদি সাবান পানি দিয়ে দিনে ৩/৪ বার পরিষ্কার করুন। দরজার নব (knob) দুইঘণ্টা পর পর ওয়াশ করুন।
চ) প্রতিদিন কার পরিহিত পোশাক গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ছ) হাতের নখ পরিষ্কার এবং ছোট রাখুন।
ধৈর্য্য :
কোভিড-১৯ কে ধৈর্য্যের সাথে মোকাবেলা করুন। আতঙ্কগ্রস্থ হবেন না। আতঙ্কগ্রস্থ হয়েকিলাভ? আতঙ্কগ্রস্থ হলে আপনার মানসিক সমস্যা হবে। তাতে করে সতর্কতায় ব্যাঘাত ঘটবে। মনে রাখবেন এই অমানিশার রাত থাকবেনাএকদিন ভোরের সূর্য উঠবে। শত বছর পরপর এই ধরনের মহামারী আসে। ১৭২০ সালে এসেছিল প্লেগ, ১৮২০ সালে কলেরা, ১৯২০ সালে স্পেনিশ ফ্লু আর এবার ২০২০ সালে আসল কোভিড-১৯। অতীতে যখনই এই বিশ্বে মহামারী এসেছিল তখনই মানুষ ভেবেছিল এই বুঝি শেষ। কিন্তু পৃথিবী শেষ হয় নাই মহামারী শেষ হয়েছে। তাই অতীতের কথা চিন্তা করে আশায় বুক ভরতে পারেন এবারের মহামারীও শেষ হবে, পৃথিবী থেকে যাবে। আল্লাহআমাদের সহায় হোন।
অধ্যাপক ডাঃ মোঃ ফয়জুল ইসলাম চৌধুরী
প্রাক্তন অধ্যাপক, মেডিসিনবিভাগ
ঢাকা মেডিকেলকলেজ
প্রাক্তন মহাসচিব, বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন।