মাছ ও মাংসের মাধ্যমে করোনা ছড়ানোর গুজবে বিভ্রান্ত না হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, মাছ ও মাংসের মাধ্যমে করোনা ছড়াচ্ছে বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এসব গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না। বরং করোনা মোকাবিলায় নিয়মিত দুধ, ডিম, মাছ ও মাংস খান।
বুধবার (১ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবনে করোনার প্রাদুর্ভাবকালীন পোল্ট্রি ও দুগ্ধশিল্প এবং মৎস্য খাতের সংকট মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকালীন দুধ, ডিম, মাছ ও মাংস সংক্রান্ত সংকট মোকাবিলায় সরকার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছে জানিয়ে শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মতে করোনা সংকটকালীন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। তাই প্রাণিজ পুষ্টির উৎস দুধ, ডিম, মাছ ও মাংসের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এ সংক্রান্ত সংকট মোকাবিলায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।’
ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে পোল্ট্রি, ডিম, একদিন বয়সি মুরগীর বাচ্চা, হাঁস, মুরগী ও গবাদিপশুর খাদ্য, দুগ্ধজাতপণ্য, অন্যান্য প্রাণি ও প্রাণিজাত পণ্য, মাছ, মাছের পোনা ও মৎস্য খাদ্য সরকারঘোষিত ছুটিকালীন নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন, পরিবহন ও বিপণন সচল রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সকল জেলা প্রশাসক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, পোল্ট্রি ও মৎস্য খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমদানীকৃত কাঁচামালের পরীক্ষাগার দ্রুত চালু করতে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের পিআরটিসি ল্যাব চালু করা হবে।
“খামারে উৎপাদিত দুধ সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সংরক্ষণের জন্য মিল্কভিটাকে মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সংরক্ষণসহ ভোক্তার কাছে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দুধ পৌঁছে দেয়ার কাজে প্রাণ, আড়ং, আকিজসহ বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে আমি সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
পাশাপাশি মিষ্টির দোকানসমূহ খোলা রাখার ব্যবস্থা গ্রহণে দোকান মালিক সমিতির সহযোগিতা কামনা করছি।”
ইতোমধ্যে সকল বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের খামারিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে ‘মাছ, মাংস ও ডিম খাওয়া ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ’ মর্মে ভোক্তা পর্যায়ে প্রচারণা চালোনোর বিষয়টিও চূড়ান্ত করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক খামারীদের জন্য প্রণোদনার বিষয়টি বিবেচনায় আছে জানিয়ে রেজাউল করিম জানান, করোনা সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক খামারিদের জন্য মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিশ্বব্যাংকের মাধ্যমে প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।
তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ ও কিস্তি স্থগিতকরণের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা প্রদানের বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে বলে জানান তিনি।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস