সাংবিধানিক সংকট কাটাতে ডাকা সংসদের সপ্তম অধিবেশন অত্যন্ত কম সময় চলবে। এটির সময়সীমা ৬০ মিনিটের মতো হতে পারে। এছাড়া সংসদ সদস্যদের অধিবেশন কক্ষে বসার সময় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হবে। কোরাম (৬০) পূর্ণ হলেই অধিবেশন শুরু হবে। সমাগম এড়াতেও নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সংসদ।
সোমবার সকালে টেলিফোনে জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া। তিনি বলেন, ‘সংসদে সমাগম এড়াতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি যাতে কম হয় তাও নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজন নেই এমন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসতে মানা করা হবে।’
করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই সংসদের সপ্তম অধিবেশন বসছে আগামী শনিবার (১৮ এপ্রিল)। এদিন বিকেল ৫টায় সংসদের বৈঠক শুরু হবে। এক অধিবেশন শেষ হওয়ার পর ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে আবার বসার নিয়ম আছে। সর্বশেষ ষষ্ঠ অধিবেশন শেষ হয়েছিল ১৮ ফেব্রুয়ারি। সেই হিসাবে ১৮ এপ্রিলের মধ্যে সংসদের অধিবেশন শুরুর বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সংসদ সূত্র জানায়, এখন ঢাকায় আছেন এমন এমপিদেরই শুধু সংসদে যাওয়ার উৎসাহ দেয়া হবে। প্রবীণ এমপিদের সংসদে না যাওয়ার জন্য ইতোমধ্যে ফোন দেয়া শুরু হয়েছে। আর ঢাকায় রয়েছেন এমন সংরক্ষিত নারী আসনের এমপিদের ফোন দেয়া হচ্ছে যাতে তারা সংসদে যান। সংসদে প্রবেশের সময় এমপিদের তাপমাত্রা মাপা হবে। আর সংসদ মুলতবি নিয়ে জুন পর্যন্ত রাখা যায় কিনা সে বিষয়েও চিন্তা-ভাবনা চলছে। সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় সংসদের হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী লিটন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার এই অধিবেশন উপলক্ষে বিশেষ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রবীণ এমপিদের সংসদে যেতে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। হুইপরা তাদের ফোন দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছেন। আর সবার স্বাস্থ্যগত অবস্থা জেনে নেয়া হচ্ছে। কেউ অসুস্থ হলে তাকে সংসদে না যাওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।’
সংসদের আইন শাখা জানায়, চলতি সংসদের কোনো সদস্য মারা গেলে অধিবেশনের শুরুর দিনে শোকপ্রস্তাব গ্রহণের পর বৈঠক মুলতবি করা হয়। চলতি সংসদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ দিলু (পাবনা-২) গত ২ এপ্রিল মারা যান। তাই বৈঠকের শুরুতেই শোকপ্রস্তাব উত্থাপন ও তার শোকপ্রস্তাবের ওপর আলোচনা হবে। শোকপ্রস্তাব গ্রহণের পরপরই বৈঠক শেষ করে দেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি সৈয়দা রাশিদা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, সপ্তম অধিবেশনে অংশ নেয়ার জন্য আমাদের খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। যারা ঢাকায় আছেন শুধু তাদেরই সংসদে যাওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
এর আগে করোনাভাইরাসের কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ডাকা সংসদের বিশেষ অধিবেশন বাতিল করা হয়। গত ২২ মার্চ জাতীয় সংসদে বিশেষ অধিবেশন বসার কথা ছিল। এতে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি এবং নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভান্ডারীর ভাষণ দেয়ার কথা ছিল।
দুই কার্যদিবস চলার কথা ছিল এই বিশেষ অধিবেশন। এর আগে ১৯৭৪ সালের ৩১ জানুয়ারি ও ১৮ জুন সংসদে বিশেষ অধিবেশন বসেছিল। যেখানে সাবেক যুগোস্লাভ প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি ভাষণ দিয়েছিলেন।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস