সংগ্রহের প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় খুলনার বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা প্রায় ৩০০ নমুনা বাতিল করা হয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে স্থাপিত করোনা পরীক্ষার ল্যাব সংশ্লিষ্টরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ল্যাব সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাসে নমুনা যারা সংগ্রহ করছেন, তাদের সংগ্রহ পদ্ধতি হয়তো ভালোভাবে জানা নেই। তাই এ সমস্যা হচ্ছে। প্রথম দিকে প্রায় প্রতিটি নমুনাই ত্রুটিপূর্ণ ছিল। তবে সংগ্রহকারীদের সংগ্রহের পদ্ধতি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেওয়ার পর এখন সংগ্রহ করা নমুনা কিছুটা ভালো পাওয়া যাচ্ছে।
তারা বলেন, প্রতিদিনই বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হচ্ছে। তবে সঠিক পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। প্রথম দিকে অর্থাৎ ৬, ৭ ও ৮ এপ্রিলের পাওয়া বেশির ভাগ নমুনাই নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে ৩০০-এর মতো নমুনা বাতিল করতে হয়েছে।
করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের একটি ল্যাবকে বায়ো-সেফটি ল্যাব হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। আর সেখানেই প্রতিস্থাপন করা হয়েছে পিসিআর (পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন) মেশিন। ৪ এপ্রিল ল্যাবটি পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যায়। ল্যাব সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের পর ৭ এপ্রিল সেটি উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনের প্রথম দিন পরীক্ষার জন্য বিভাগের বিভিন্ন জেলার ১২টি নমুনা পিসিআর মেশিনে দেওয়া হয়। পরদিন ১০টি বাড়িয়ে ২২টি পরীক্ষা করা হয়। আর গত বৃহস্পতিবার ৩৪টি, শুক্রবার ৩৭টি, শনিবার ২২টি ও রোববার ২২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ ছাড়াও সোমবার ৪৩টি ও মঙ্গলবার ৬০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
খুলনায় পরীক্ষা করা ওই নমুনার মধ্যে চারটিতে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সোমবার ওই পরীক্ষাগারে প্রথমবারের মতো কোনো নমুনায় করোনাভাইরাস ধরা পড়ে।
ওই ল্যাবের একমাত্র মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. সেলিমুজ্জামান বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে ৬০-১০০টি পর্যন্ত নমুনা পাঠানো হচ্ছে। তবে কোনো নমুনাই শতভাগ সঠিকভাবে সংগ্রহ করা হচ্ছে না। ২০ শতাংশ নমুনা কিছুটা ভালো মানের। অন্যগুলোর মান একেবারেই ভালো নয়। এ কারণে অনেক নমুনা বাদ দিতে হচ্ছে। আবার অনেক নমুনা খুব কষ্ট করে পরীক্ষা করতে হচ্ছে। করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহকারীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ নেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি।
ল্যাবের দায়িত্বে থাকা খুলনা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম তুষার আলম বলেন, খুব বেশি নমুনা স্টক করে রাখা নেই। তবে প্রথম দিকে যেসব নমুনা পাওয়া গিয়েছিল, তার বেশির ভাগই ছিল ত্রুটিপূর্ণ। এ কারণে অনেক নমুনা বাদ দিতে হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা বলেন, প্রথম দিকে পাওয়া নমুনাগুলোর বেশির ভাগই ছিল ত্রুটিপূর্ণ। তবে ওই সমস্যা অনেকটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। নমুনা সংগ্রহকারীদের কয়েকবার অনলাইনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস