বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে ফেসবুকের সঙ্গে চুক্তি করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে। চিঠিতে তাদের বাংলাদেশে অ্যাডমিন বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে সাড়াও দিয়ে আলোচনায় বসতে চেয়েছে ফেসবুক কতৃপক্ষ।
এ চুক্তি হলে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে তথ্য পেতে সরকারের কোনো বাধা থাকবে না। চুক্তি হওয়ার পরই দেশে ফেসবুক খুলে দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এদিকে সরকার ফেসবুক বন্ধ করার পরও বিকল্প পথে যারা ফেসবুক ব্যবহার করছে, তারা গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, দুবাইসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ফেসবুকের চুক্তি আছে। তাদের ওখানে ফেসবুকসংশ্লিষ্ট কোনো অপরাধ হলে ফেসবুকের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে অপরাধীদের ধরতে পারছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফেসবুকের সঙ্গে চুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাদেরকে চিঠি লিখেছি। তাদের বলেছি তাদের একজন অ্যাডমিন বাংলাদেশে রাখার জন্য।’ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এত দিন বাংলাদেশের সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে ফেসবুক কিংবা গুগলের কোনো সমঝোতা চুক্তি না থাকায় কোনো তথ্য চেয়ে পায়নি সরকার। আর সঠিক তথ্য না পাওয়ায় ফেসবুক অপব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। এ জন্যই ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) বিশেষ নির্দেশনা দেয় সরকার। তিনি বলেন, আমাদের কাছে রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তাবিধানই হলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন নাগরিকের জীবনও আমাদের কাছে অনেক বড় বিষয়। জনগণের উচিত আমাদের এই কার্যক্রমকে সহযোগিতা করা।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা বিকল্প পথে ফেসবুক ব্যবহার করছে তারা একটি স্পেসিফিক ক্যাপাসিটির ব্যান্ডউইডথ ব্যবহার করছে, এটি তারা বেশি দিন করতে পারবে না। কারণ এই ব্যান্ডউইডথের ক্যাপাসিটিটা কম। দ্বিতীয়ত, ব্যান্ডউইডথের স্পিডটা অনেক কম। স্পিডটা যখন কম হয়, যে প্রক্রিয়ায় নাশকতাকারীরা সংগঠিত হয়ে নাশকতা কর্মকাণ্ড চালায়, সেটি অত দ্রুত করা সম্ভব হয় না। গতি দ্রুত হলে ট্র্যাক করা যায় না। গতি কম হলে সহজেই ট্র্যাক করা যায়। যারা বিকল্প পথে ব্যবহার করছে তাদের জেনে রাখা ভালো, তাদের আইডি হ্যাকড হতে পারে এবং এই সম্ভাবনা বেশি।
সূত্র জানায়, গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে ১৭ জনের তথ্য চেয়ে ফেসবুকের কাছে আবেদন করে সরকার। কিন্তু কোনো তথ্যই দেয়নি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। অথচ পাশের দেশ ভারত এ বছর ৯ হাজার ব্যক্তির তথ্য চেয়ে চিঠি দিলে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি আইডির তথ্য দিয়েছে ফেসবুক।
উল্লেখ্য গত মাসের ১৮ই নভেম্বর গোটা বাংলাদেশে প্রথমে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে সব সামাজিক সাইট গুলা বন্ধ করে দেয়া হয়।