যুক্তরাষ্ট্রের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ বাংলাদেশি মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশটিতে ১৬৭ বাংলাদেশির মৃত্যু হলো। এর মধ্যে নিউইয়র্কেই করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৫২ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া বাংলাদেশিরা হলেন-রাইয়ান আহমেদ, শাহজালাল সরকার, ফিরোজ কবীর, আবদুল হামিদ, বিদ্যাচরণ দত্ত, সাগর নন্দী, গৌরাঙ্গ চন্দ্র, আবদুল গনি, নিরঞ্জন বণিক ও দেওয়ান সিদরাতুল মুনতাহানা।
নিউইয়র্কের কুইন্সে বসবাসকারী ফিরোজ কবীর করোনায় আক্রান্ত হয়ে শনিবার সকাল ৭টার দিকে মারা যান। বেশকিছু দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মৃত্যু হয় তার।
অত্যন্ত পরিচিত মুখ ও ব্যবসায়ী বিদ্যাচারণ দত্ত গোপাল করোনায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। জানা গেছে, গোপাল দত্ত প্রায় ৩০ বছর আগে আমেরিকায় এসেছিলেন। তার দেশের বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জে। তার কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তার স্ত্রী বর্তমানে করোনার সঙ্গে লড়াই করছেন।
নিউইয়র্ক প্রবাসী দিনাজপুর জেলা সমিতির অন্যতম সদস্য শাহ জালাল সরকার করোনায় আক্রান্ত শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় নিউইয়র্কের কুইন্স হাসপাতালে মারা যান। তিনি গত ২৯ মার্চ থেকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
নিউইয়র্ক প্রবাসী আব্দুল হামিদ করোনায় আক্রান্ত হয়ে শনিবার নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
দেওয়ান সিদরাতুল মুনতাহাও করোনায় মারা গেছেন। তিনি গত শুক্রবার নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর।
গোরাঙ্গ চন্দ রোববার সকাল ৭টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে কুইন্সের একটি হাসপাতাপালে পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
নিরঞ্জন মল্লিক শনিবার সকালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। নিউইয়র্কে তিনি একা থাকতেন।।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে গতকাল সর্বনিম্ন ৫৪০ জন মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে নিউইয়র্কে।
নিউইয়র্ক রাজ্য গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো বলেছেন, এখনো হাসপাতালে দৈনিক প্রায় দুই হাজার করে করোনা আক্রান্ত রোগীর আগমন ঘটছে। রাজ্যে এ পর্যন্ত ১২ হাজার ৭৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের ৫০৪টি হাসপাতালে ও ৩৬টি নার্সিং হোমে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ এখন চিহ্নিত করোনা আক্রান্ত।
করোনাভাইরাস সবচেয়ে বেশি বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে আমেরিকায়। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই রাষ্ট্রটি করোনার কাছে এখন সবচেয়ে বেশি নাজেহালের শিকার। আর দেশটিতে নিউইয়র্ক রাজ্যের অবস্থা শোচনীয়।
পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়াবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৭ লাখ ৩৮ হাজার ৯১৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৯ হাজার ১৫ জনের। আর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৬৮ হাজার ২৮৫ জন।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস