দেশি পেঁয়াজ ও পুরাতন আলুর দাম বাড়ছে
প্রকাশ: ২০১৫-১২-০৪ ১৮:৫০:২২
দেশি ও বিদেশি পেঁয়াজের দামের মধ্যে বিপরীতমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মৌসুম শেষ হয়ে আসায় দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমছে। আর তাই ব্যবসায়ীরা আমদানীতে মনযোগী হয়েছেন। এতে আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম কমে আসলেও দেশিটার দাম বেড়েই চলেছে। এদিকে পুরাতন আলুর সরবরাহ কমে আসায় দামও বাড়ছে। তবে নতুন আলুর দাম ধীরে ধীরে কমে আসছে। যদিও তা সাধারণের নাগালের মধ্যে আসতে আরো কিছুটা সময় লাগবে।
শুক্রবার রাজধানীর বাসাবো ও খিলগাঁও বাজারে গিয়ে দেখা যায় দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৩-৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে। আর দেশিটা কেজিতে ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে। ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে নতুন পেঁয়াজ চলে আসতে শুরু করেছে। পুরাতন পেঁয়াজের স্টক শেষ হয়ে আসছে। তাছাড়া পুরাতন পেঁয়াজের ওজনও অনেক কমে গেছে। এতে দাম বেড়ে গেছে। এ সঙ্কট পুরণের জন্য প্রচুর পরিমান পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে এখন। কিন্তু তার প্রভাব দেশি পেঁয়াজে পড়ছে না। কারণ, আমদানিকৃত পেঁয়াজ ও দেশি পেঁয়াজের ক্রেতা আলাদা। আমদানিকৃত পেঁয়াজ সাধারণত বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ বেশি রান্না হয় এমন জায়গাতেই শুধু চলে।
পাইকাড়ি বাজার কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায়। কেজিতে পড়ছে ৬৪ থেকে ৬৬ টাকা। অন্যদিকে বিদেশি পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। কেজিতে যার দাম পড়ছে ৩২ টাকা। অর্থাত্ পেঁয়াজের এই দাম বাড়া-কমা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে পাইকাড়ি বাজারেই। এই বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, কিছুদিনের মধ্যেই নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। তাহলে এ সঙ্কট আর থাকবে না।
এই কারণে অর্থাত্ মৌসুম শেষ হয়ে আসার প্রভাব পড়েছে আলুর বাজারেও। পুরাতন ডায়মন্ড আলু বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা বেড়ে ৪০ টাকা কেজি দরে। আর এক কেজি নতুন আলুর দাম নেয়া হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। যথেষ্ঠ পরিমাণ নতুন আলুর আমদানি না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থার কোন উন্নতী দেখছেন না ব্যবসায়ীরা। তবে আশার কথা- প্রতিদিন নতুন আলুর সরবরাহ বাড়ছে, আর এতে দামও কমে আসছে দ্রুতই।
ডিমের বাজারেও চলছে অস্থিরতা। মাস খানেক আগে থেকেই রাজধানীর বাজারে বাড়তে শুরু করেছে সব ধরণের ডিমের দাম। গত সপ্তাহে তা কিছুটা কমে আসলেও এ সপ্তাহে আবারো বেড়েছে বলে জানালেন মালিবাগ বাজারের ডিম ব্যবসায়ীরা। খামারের মুরগির লাল ডিম এখন ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের ডিম ৪০ থেকে ৪২ এবং দেশি মুরগির ডিম ৪৮ থেকে ৫০ টাকা হালি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১২৫ টাকা, গরুর মাংস ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসীর মাংস ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। মাছের বাজারে তেমন কোন পরিবর্তন চোখে পড়েনি। রুই ও কাতলা আকার ও মানভেদে ১৭০ থেকে ৩০০ টাকা প্রতি কেজি, ৪০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজির বেশি ওজনের দাম ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা প্রতি কেজি।
এদিকে সবজির বাজারে প্রতি কেজি বেগুন (জাতভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। শিম ৩০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, টমেটো (কাঁচা) ৪০ টাকা, টমেটো (পাকা) ৮০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, ধনিয়াপাতা কেজি ৮০ টাকা এবং বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। এছাড়া ফুলকপি প্রতি পিস আকারভেদে ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। টমেটো ছাড়া প্রায় সব ধরণের সবজির দাম নাগালের মধ্যে চলে আসছে বলে ক্রেতারা মনে করছেন।
এছাড়া রাজধানীর বাজারে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, লবণ, দুধসহ অন্যান্য পণ্যের দামে তেমন কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি।