সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রার্দুভাবের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ব্যাহত হচ্ছে। এমতাবস্থায়, সরকারি উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সুষ্ঠভাবে সম্পাদন করতে এবং করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি মোকাবেলায়, সরকারি কাজে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারদের সংগঠন, বাংলাদেশ গভারমেন্ট টেন্ডারার্স ফোরাম (বিজিটিএফ) সরকারি ক্রয় বিধিমালা-২০০৮ (পিপিআর-২০০৮)-এ কিছু সংশোধন চেয়েছে।
সংগঠনটি জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে অনেক ঠিকাদার অর্থ সংকটে ভূগছে। কারণ তারা অডিটর জেনারেলের কার্যালয় থেকে অর্থছাড় পাচ্ছে না। এর প্রেক্ষিতে বিজিটিএফ সম্পাদিত কাজের বিল অতিদ্রুত দেওয়া জন্য আহ্বান জনান।
তদুপরি চলমান কাজগুলো বন্ধ থাকার কারণে ঠিকাদারদের নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব ঠিকাদারদের মধ্যে অনেকে উচ্চহারে ব্যাংক সুদ গুনতে হচ্ছে।
অধিকন্তু, ব্যাংকগুলো স্বল্পপরিসরে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার কারণে অনেক ঠিকাদার সাম্প্রতিক আহ্বানকৃত দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে পারছেনা।
ফলস্বরূপ, নির্মাণ খাতে নিয়োজিত প্রায় ২০ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে এবং মজুরি না পেয়ে তারা তাদের পরিবারের সাথে অত্যন্ত দুরবীসহ জীবন কাটাচ্ছে। একই সাথে, ঠিকাদারেরা আর্থিক সংকটে থাকার কারণে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সহ অন্যান্য সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।
এমনকি, নির্মাণ ও ক্রয়কার্য বন্ধ থাকার কারণে সরকার ঘোষিত ৭২,০০০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে তারা কাঙ্খিত সুবিধা নিতে পারবে না।
উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে, সমস্যাগুলো সমাধানের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিজিটিএফ বৃহস্পতিবার সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ)-এর সাথে একটি ভার্চুায়াল সভায় সিপিটিইউ-কে এই আহ্বান জানান। উক্ত সভায়, সিপিটিইউ-এর মহাপরিচালক মোহাম্মদ শোহেলের রহমান চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সিপিটিইউ পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও সমন্বয়) শীষ হায়দার চৌধুরী, ডিআইএমএপিপি-এর প্রধান প্রকল্প ব্যবস্থাপনা পরামর্শক মোস্তা গাউসুল হক, সিপিটিইউ-এর সিনিয়র কমিউনিকেশন্স কনসালটেন্ট মোঃ শফিউল আলম, বিজিটিএফ-এর আহ্বায়ক ও এলজিইডি-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবদুস সাত্তার এবং বিজিটিএফ সদস্য সচিব ও মোজাহার এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মোজাহারুল হক উক্ত সভা বক্তব্য রাখেন।
রোববার বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন পোগ্রাম্স (বিসিসিপি) সভাটি আয়োজন করেন।
শোহেলের রহমান জানান, বিশ্বব্যাপী, কোভিড ১৯-এর জন্য পিপিআর ২০০৮-এ প্রয়োজনীয় সংশোধন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করছে এবং আমাদের সরকারও তা বিবেচনা করবে।
কোভিড-১৯ মহামারীর জন্য দীর্ঘ সরকারি ছুটি অনুধাবন করে,প্রাথমিক পর্যায়ে সিপিটিইউ কিছু অগ্রিম পদক্ষেপ নিয়েছিল। এই পদক্ষেপগুলোর মধ্যে ই-জিপি হেল্প ডেস্ক টিমের সদস্যদের যেকোন সমস্যা জরুরি ভিত্তিতে সমাধানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে অনেক ঠিকাদার অর্থ সংকটে ভূগছে। কারণ তাঁরা অডিটর জেনারেলের কার্যালয় থেকে অর্থ ছাড় পাচ্ছে না। বিল পরিশোধের জন্য তাদের দাবি বিবেচনা করা উচিত এবং বিষয়টি সমাধানের জন্য অর্থ বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা হবে বলে তিনি আশ্বাসদেন।
তিনি বলেন, বিজিটিএফ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, যেখানে সহজেই সমস্যার সমাধানের জন্য ক্রয়কারী সংস্থা এবং দরপত্রদাতাদের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও সহজ করবে এবং সিপিটিইউ এই বিষয়ে সবধরনের সয়হতা দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দিবে।
বিজিটিএফ-এর উত্তর উত্তর সাফল্য কামনা করে, শোহেলের রহমান আশা প্রকাশ করেন, বিজিটিএফ সরকারের ক্রয় কার্যে আরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
কোভিড -১৯ এর জন্য সাধারণ ছুটির কারণে সারাদেশে অনেক অবকাঠামো নির্মাণ কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে যা গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করেছে। "আমরা এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করবো," তিনি বলেন।
সিপিটিইউ-এর মহাপরিচালক আরও জনান চলতি অর্থ বছর প্রায় শেষের দিকে, কিন্তু এখন পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পের বাজেট বরাদ্দ কাজে লাগানো যায়নি। এসব কিছু বিবেচনায় অনেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের কার্যক্রম ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে।
কিন্তু এটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের বিষয়, তবে আমি সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে বিষটি অবহিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
শোহেলের রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট পর্যায় থেকে যাতে আরও পরামর্শ আসে সে জন্য ই-জিপিরকর্মপরিধি বাড়ানোর উদ্যেগ গ্রহণ করা হয়েছে। অনেকগুলি সমস্যার সমাধান করা দরকার এবং সমস্ত দায়িত্ব সিপিটিইউর হাতে। তবে সম্প্রতি, ক্রয়কারী সংস্থাগুলোকে কিছু ভূল সংশোধনের জন্য কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে যা সিপিটিইউ-এর উপর বোঝা হ্রাস করবে।
অন্যান্যের মধ্যে উক্ত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম এবং বেসিস এর সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির।
সানবিডি/এসকেএস