কিছু দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এসব দেশে শিথিল করা হয়েছে লকডাউন। কিন্তু সংস্থাটি মনে করে, পুনরায় সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন শিথিলের আগে থেকেই চরম সতর্ক অবস্থান নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার জেনেভায় অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থাটির পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়েছে।
সোমবার থেকে লকডাউন শিথিলের পর ইউরোপের বেশকিছু দেশে দীর্ঘদিন পর ছন্দ ফিরেছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার পরই লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত নেয় মহামারিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়া ফ্রান্স, স্পেন ও ইতালি।
কয়েকদিন আগেই লকডাউন শিথিল করা হয় জার্মানিতে। কিন্তু এরপরই দেশটিতে সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করে। এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়াতেও লকডাউন শিথিলের পর সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। তবে দেশটি শুরু থেকেই করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রেখে বিশ্ববাসীর প্রশংসা কুড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইমারজেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান ডা. মাইক রায়ান বলেন, ‘অনেক দেশ লকডাউন তুলে নেওয়ায় আমরা কিছু আশা দেখতে পাচ্ছি। তবে এর সঙ্গে সঙ্গে চরম সতর্কতাও মেনে চলতে হবে’।
জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে গুচ্ছ (ক্লাস্টার) সংক্রমণ শুরু হলেও দেশ দু’টি তা কঠোর নজরদারির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন ডা. রায়ান। তিনি বলেন, ‘যেসব দেশ চোখ, কান খোলা রেখে মহামারির মোকাবিলা করছে তাদের নাম আমাদের নিতেই হবে’। তবে কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে তিনি এও বলেন যে, ‘বিপরীতে কিছু দেশ চোখ বন্ধ করে প্রলয় সামলানোর চেষ্টা করছে’।
একই সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান ডা. টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস বলেন, লকডাউনের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া জটিল ও কঠিন প্রক্রিয়া। তবে মানুষের জীবন ও জীবীকার তাগিদে ‘ধীরে ধীরে লকডাউন তুলে নিতে হবে’ বলে মনে করেন তিনি।
জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো চীনের উহানেও ফের গুচ্ছ সংক্রমণ দেখা গেছে। তবে আধানম মনে করেন, পুনরায় সংক্রমণ শুরু হলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তার পুরো প্রস্তুতি এই তিনটি দেশের আছে।
যতক্ষণ না কোনো টিকা আবিষ্কার হচ্ছে ততক্ষণ সতর্কতামূলক নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখার কোনো বিকল্প নেই বলেও মনে করেন আধানম।
তবে যেসব দেশ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ না নিয়ে ‘হার্ড ইমিউনিটি’র পথে হাঁটছে তাদের সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আধানম বলেন, সাম্প্রতিক সেরোলজিকাল গবেষণায় দেখা গেছে, খুব মানুষের শরীরেই নতুন করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। ফলে এখনও বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস