সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই গত ২৬ এপ্রিল থেকে সচল হয়েছে শিল্প-কারখানা। এরপর থেকে শ্রমঘন শিল্প খাতে কভিড-১৯ আক্রান্ত কর্মী সংখ্যা বাড়ছে ধীরে ধীরে। গতকাল পর্যন্ত আক্রান্ত শ্রমিক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০-এ, যার ৩৭ জনই শিল্প এলাকা আশুলিয়ার।
দেশের ছয় এলাকা আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা ও ময়মনসিংহে সব খাত মিলিয়ে মোট কারখানা আছে ৭ হাজার ৬০২টি। শিল্প পুলিশের তথ্য বলছে, গতকাল এ ছয় শিল্প এলাকায় ৩ হাজার ৯১৬টি কারখানা খোলা ছিল।
ছয় শিল্প এলাকায় পোশাক শিল্প মালিক সংগঠন বিজিএমইএর সদস্য কারখানা আছে ১ হাজার ৮৮২টি, যার মধ্যে ১ হাজার ৩৬০টি খোলা ছিল গতকাল। আরেক সংগঠন বিকেএমইএ সদস্য মোট ১ হাজার ১০১টি কারখানার মধ্যে খোলা ছিল ৩৯৪টি। পোশাক শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ প্রাইমারি টেক্সটাইল খাতের সংগঠন বিটিএমএ সদস্য মোট ৩৮৯ কারখানার মধ্যে খোলা ছিল ১৮৮টি। এছাড়া রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত ছয় শিল্প এলাকায় মোট ৩৬৪টি কারখানার মধ্যে খোলা ছিল ৩১৬টি। অন্যান্য খাতের ৩ হাজার ৮৬৬টি কারখানার মধ্যে খোলা ছিল ১ হাজার ৬৫৮টি।
শিল্প পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল ১২ মে পর্যন্ত ছয় শিল্প এলাকায় সব খাত মিলিয়ে কভিড- ১৯ আক্রান্ত শ্রমিক সংখ্যা ছিল ৬০ জন। এ শ্রমিকরা মোট ৩৭টি কারখানার সঙ্গে যুক্ত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত শ্রমিক আশুলিয়া এলাকার। এ এলাকার ২০টি কারখানার মোট ৩৭ জন শ্রমিক কভিড-১৯ আক্রান্ত। এছাড়া গাজীপুর এলাকার ১০টি কারখানার ১৩ জন, চট্টগ্রামের তিন কারখানার তিনজন, নারায়ণগঞ্জ শিল্প এলাকায় তিন কারখানার পাঁচজন এবং ময়মনসিংহ এলাকার একটি কারখানার দুজন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে খুলনা এলাকায় কভিড-১৯ আক্রান্ত কোনো শ্রমিকের তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে বিজিএমইএর তথ্যমতে, গত ২৮ এপ্রিল প্রথম কভিড-১৯ আক্রান্ত পোশাক কর্মী শনাক্ত হন। এরপর গতকাল ১২ মে পর্যন্ত শনাক্ত ও সন্দেহভাজনসহ মোট কভিড-১৯ সংক্রান্ত তথ্য সংগঠনটির কাছে আছে মোট ৫৫ জনের। এর মধ্যে ৪৩ জন পুরুষ ও ১২ জন নারী কর্মী। এখন পর্যন্ত কভিড- ১৯ শনাক্ত পোশাক কর্মী সংখ্যা ৪৩ জন।
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট কোনো পেশার বিষয়ে ভাবা অবান্তর। গত ২৪ ঘণ্টায় কভিড-১৯ আক্রান্ত ৯৬৯ জন শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে পোশাক খাতের সংখ্যা কোনোভাবেই উল্লেখযোগ্য নয়। অর্থনীতির স্বার্থে শুধু পোশাক নয়, সামগ্রিক চিত্র দেখার তাগিদ জানিয়েছে সংগঠনটি।
গার্মেন্টস কারখানা খোলার পর করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে বলে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছিল সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়। গত ৩০ এপ্রিল ইউএনওকে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানানোর পাশাপাশি সাভার উপজেলায় গার্মেন্টস খোলা না রাখার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
এদিকে গত ২ মে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় অধীনস্থ কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই) সংস্থাটির সব উপমহাপরিদর্শকদের উদ্দেশে একটি চিঠি দেয়। চিঠিতে করোনাকালে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য শিল্প-কারখানায় বিশেষ পরিদর্শনের নির্দেশনা দেয়া হয়।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস