চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে ইউরোপে সংক্রমণ এবং মৃত্যু কিছুটা কমে এলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর মিছিল চলছেই। দেশটিতে এখনও হাজারের ওপর মানুষের মৃত্যু হচ্ছে করোনাভাইরাসে। শুধু তাই নয়, এককভাবে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই করোনায় মৃত্যু হয়েছে লক্ষাধিক মানুষের।
ভয়ঙ্কর এই ভাইরাসে নিঃসন্দেহে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ যুক্তরাষ্ট্র। অর্থনীতি, রাজনীতি, সামরিক, কিংবা জ্ঞান-বিজ্ঞান- সবদিক দিয়েই পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু চোখে দেখা যায় না, একন এক ক্ষুদ্র অনুজীবের কাছেও কত অসহায় পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটির- তা এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সর্বশেষ তথ্যমতে মার্কিন যুক্তরাষ্টে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৬৪জন। দেশটিতে সর্বমোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ লাখ ১৩ হাজার ৬০৭ জন। সুস্থ হয়েছেন মোট ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৭৭৮ জন। সুস্থতার তুলনায় মৃতের হার ১৮ ভাগ।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় প্রথম মৃত্যুবরণ করে ৬ ফেব্রুয়ারি। ওই সময়ও খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড ট্রাম্প তো সরাসরিই বলে দিয়েছিলেন, কিছুই হবে না। এরপর ধীরে ধীরে সংক্রমণ আর মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। মার্চের মাঝামাঝি এসেও যুক্তরাষ্ট্রের ঘুম ভাঙেনি করোনা নিয়ে।
কিন্তু মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে যখন টনক নড়ে তাদের, তখন অনেক বেলা পার হয়ে গেছে। মিসিসিপি-মিসৌরিতে অনেক পানিও গড়িয়ে গেছে। সারাবিশ্বের মত তখন আমেরিকাও লকডাউন ঘোষণা করে। কিন্তু সামাজিক সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে যায় তখন যুক্তরাষ্ট্র।
যদিও এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি হিসাব বলছির, দেশটিতে করোনায় প্রথম মৃত্যু হয় ২৮ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু পরে জানা যায়, ৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম মৃত্যু হয়েছিল ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারা কাউন্টিতে এক বয়স্ক লোক নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন। তার রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ হয় এবং জানা যায় তিনি, করোনা পজিটিভ ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ অঙ্গরাজ্য হচ্ছে নিউ ইয়র্ক। এই স্টেটে মোট ৩ লাখ ৭২ হাজার ৪৯৪জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যুবরণ করেছেন ২৯ হাজার ৩১০ জন। নিউ জার্সিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৫৭ হাজার ১৬৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ১১ হাজার ১৯৭ জনের। ইলিনয়েস রাজ্যে আক্রান্ত ১ লাখ ১২ হাজার ১৭ জন। মৃত্যু ৪৮৮৪ জন।
ক্যালিফোর্নিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে ৯৬ হাজার ৯২৫ জন। মৃত্যু ৩ হাজার ৮১৪ জন। ম্যাসাচুসেটসে আক্রান্ত ৯৩ হাজার ২৭১ জন। মৃত্যু ৬৪১৬ জন এবং পেনসিলভানিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ৭২ হাজার ৮০৫জন। মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ১৯২ জনের।
করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরে রয়েছে ব্রাজিল। দেশটিতে আক্রান্ত ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৭১১জন। মৃত্যু হয়েছে ২৩ হাজার ৬০৬ জনের। রাশিয়াকে আক্রান্ত ৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৪২ জনের। মৃত্যু ৩ হাজার ৮৯৭ জনের। মৃত্যুর দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইংল্যান্ড। দেশটিতে আক্রান্ত ২ লাখ ৬৫ হাজার ২২৭ জন। মৃত্যু ৩৭ হাজার ৪৮ জন। ইতালিতে প্রায় ৩৩ হাজার এবং ফ্রান্সে মৃত্যু হয়েছে সাড়ে ২৮ হাজার মানুষের।
সানবিডি/এনজে