দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর অবশেষে টোলমুক্ত করা হলো মান্দা সেতু। সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের টোল আদায় নীতিমালার আলোকে বন্ধ করা হয়েছে সেতুটির ইজারা। প্রায় ২১ বছর পর গত শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ১মিনিটের পর থেকে এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগ ১৯৯৪সালে ১৯জুন আত্রাই নদীর ওপর ফেরিঘাট এলাকায় মান্দা সেতুটি নির্মাণ করে। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১৫৫ দশমিক ৪১ মিটার। শুরুতে ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা নির্মাণ ব্যায় দেখানো হলেও পরবর্তীতে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় তা দেখানো হয়েছে। নির্মাণ কাজ শেষে তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) অলি এটির উদ্বোধন করেন। এর পর থেকে ইজারার মাধ্যমে টোল আদায় শুরু হয়। দীর্ঘ ২১ বছর ইজারা কার্যক্রম অব্যাহত রাখে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
উদ্বোধনের পর ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১০-১১ অর্থ বছরে সেতুটি থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬ কোটি ৭৮ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা। যা নির্মাণ ব্যায়ের চেয়ে ২ কোটি টাকা বেশি। ইজারার মাধ্যমে নির্মাণ ব্যায় সমন্বয় হয়েছে এমন দাবি করে সেতুটি টোলমুক্ত করতে ২০১১ সালের ১৬ নভেম্বর জননেতা ডাঃ ফজলুর রহমান এর নেতৃত্ত্বে সিপিবি মান্দা উপজেলা শাখা বিক্ষোভ সমাবেশ করে ইউএনওর দপ্তরে স্মারকলিপিও দেয়া হয়।
২০১২ সালের ২৮ মে নওগাঁ জেলা যুগ্ম জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন স্থানীয় তিন হিতৈষি ব্যাক্তি। জনতার দাবির সঙ্গে একাত্ম হয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিকে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বিষয়টি সড়ক ও সেতু মন্ত্রনালয়ের দৃষ্টি গোচর হবার পর দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে সেতুটি সবার জন্য উন্মুক্ত কওে দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ নওগাঁর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নকিবুল বারী। তিনি বলেন, ইজারা মেয়াদ শেষ হওয়ায় শনিবার রাত ১২টার আগেই টোল আদায়ের যাবতীয় সরঞ্জাম সরিয়ে নেয়ার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাত ১২টা ১ মিনিটের পর কাউকেই আর টোল দিতে হবেনা। তিনি আরো বলেন, সেতুটির দৈর্ঘ্য ২০০ মিটারের নিচে হওয়ায় সড়ক ও সেতু মন্ত্রনালয়ের টোল আদায় নীতিমালা ২০১৫ এর আলোকে সেতুটি উন্মুক্ত করে দেয়া হলো। সংবাদটি শনিবারে রাতে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসির মনে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পরে।