ছয় মাস আগে মারধর করে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া মেয়েটিকে আর নির্যাতন করবে না প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত মঙ্গলবার ফিরিয়ে নিয়ে যায় তার স্বামী ও শাশুড়ি। বাড়িতে নিয়ে ওই রাতেই তাকে অন্য পুরুষের হাতে তুলে দেয় স্বামী। এরপর তিনজন পুরুষ তাকে ধর্ষণ করে। দুদিন পর রক্তাক্ত অবস্থায় ডাস্টবিনে ফেলে আসে তাকে।
বৃহস্পতিবার সকালে ফেনী পৌরসভার বিরিঞ্চি এলাকার ডাস্টবিনের পাশ থেকে তাকে উদ্ধার করে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) স্থানান্তর করা হয়েছে।
ওসিসির সমন্বয়কারী চিকিৎসক মাহরুফা নিগার বলেন, বাকপ্রতিবন্ধী মেয়েটিকে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। তার বড় ধরনের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হবে।
চমেক হাসপাতালের ওসিসিতে কর্তব্যরত পুলিশের উপপরিদর্শক সালমা বেগম বলেন, “মেয়েটি ইশারায় জানান, তাকে তিন ব্যক্তি ধর্ষণ করেছে। স্বামী এক লোকের কাছে তাকে তুলে দেন। তার মাও একই অভিযোগ করেছেন। আমরা বিষয়টি ফেনী মডেল থানাকে জানিয়েছি।”
হাসপাতালে কথা হয় নির্যাতিত তরুণীর মায়ের সঙ্গে। তিনি জানান তাদের বাড়ি ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলায়। দুই বছর আগে এক লাখ টাকা যৌতুকের বিনিময়ে মেয়েকে বিয়ে দেন বিরিঞ্চি এলাকার রংমিস্ত্রি তৌহিদুল আলমের সঙ্গে। কিছুদিন যেতেই মেয়ের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। ছয় মাস আগে মারধর করে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় স্বামী আলম।
মেয়েটির মা বলেন, “হঠাৎ গত মঙ্গলবার তৌহিদ ও তার মা বাড়িতে আসে। আমার মেয়েকে আর নির্যাতন না করার আশ্বাস দেয়। পরে তারা মেয়েকে নিয়ে যায়। কিন্তু ওই রাতে আমাদের ফোন করে জানায়, মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে মঙ্গল ও বুধবার পাইনি। বৃহস্পতিবার এক ডাস্টবিনের পাশ থেকে তাকে পাওয়া যায়।”
তরুণীর মা বলেন, “মেয়ে আমাকে বলেছে তার স্বামী মঙ্গলবার রাতে এক লোকের কাছে তাকে তুলে দেয়। পরে দুই দিন ধরে তিন ব্যক্তি তাকে নির্যাতন করে।” এই ঘটনায় তিনি মামলা করবেন বলে জানান।
জানতে চাইলে ফেনী মডেল থানার ওসি মাহবুব মোরশেদ বলেন, “আমাকে ওসিসি থেকে জানানো হয়েছে একটি মেয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। আমি অভিযোগ পাঠিয়ে দিতে বলেছি। অভিযোগ নিয়ে এলে মামলা হবে। আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।”