খেটে খাওয়া মানুষের কথা ভাবে না বলেই বিএনপি সারা দেশে ‘লকডাউন’ প্রলম্বিত করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার দুপুরে রাজধানীতে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘বিএনপি ক্রমাগতভাবে বলে আসছে লকডাউন তোলা ভুল হয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপিকে পৃথিবীর দিকে তাকানোর অনুরোধ জানান তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ইতালি, স্পেন, ব্রিটেন, বেলজিয়ামসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশ ও আমেরিকার নিউইয়র্কেও যেখানে মৃত্যুর মিছিল থামানো যাচ্ছিল না এবং যেখানে এখনও প্রতিদিন মৃত্যু ঘটছে, সে সব স্থানেও কিছুদিন আগেই লকডাউন তুলে দিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল করা হয়েছে। তারা উন্নত অর্থনীতির দেশ হওয়া সত্তে¡ও মাসের পর মাস লকডাউন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। আর ভারত, পাকিস্তানের মতো উন্নয়নশীল দেশ তো বিভিন্ন কাজ-কর্ম ও যোগাযোগ খুলে দিয়েছেই।
আমাদের দেশেও বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, করোনার কারণে সবকিছু বন্ধের সময় প্রায় সাড়ে তিন কোটির বেশি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছিল, যাদেরকে সরকার নানাভাবে অর্থ ও খাদ্য সহায়তা দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন ড. হাছান।
তিনি বলেন, বিএনপি চায় এই খেটে খাওয়া মানুষগুলো অসুবিধায় নিপতিত থাকুক এবং সে কারণেই তারা সারা দেশে লকডাউন প্রলম্বিত করার কথা বলে। তারা খেটে খাওয়া মানুষের কথা ভাবে না বলেই এটা বলতে পারে, অন্যথায় কোনো দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল এ কথা বলতে পারে না। অন্যান্য দেশের মতো আমাদেরও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হবে, সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুরক্ষা ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেই কাজ করতে হবে।
‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তিন বছরের বাজেট চেয়েছেন’ এ বিষয়ে ড. হাছান বলেন, বাজেট এক বছরের জন্যই প্রণয়ন করা হয়। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই তাই। সমগ্র পৃথিবীর ক্যানভাসের দিকে না তাকিয়ে এক সময়ে ঢাকা কলেজে শিক্ষকতা করা ফখরুল সাহেবের তিন বছরের বাজেট দেয়ার কথা বলা অবাক হওয়ার মতো। বরং তিনি যদি তিন বছরের একটি পরিকল্পনার কথা বলতেন, তাহলে যথার্থ হতো।
আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে বিরাট ঝাঁকুনি পড়েছে এবং এর ফলে যে সম্ভাব্য মন্দার আশঙ্কা রয়েছে, সরকার সেটি বিবেচনায় নিয়েই বাজেট প্রণয়ন করেছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজানোর জন্য এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। তাছাড়া গত একনেক সভায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার আরও দু’টি প্রকল্প পাস করা হয়েছে এবং কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ভবিষ্যতে আরও প্রকল্প নেয়া হতে পারে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ১ কোটি মানুষকে সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের আওতায় আনা ও করোনাকালে প্রায় ৭ কোটি মানুষকে নানাভাবে যে সহায়তা দেয়া হয়েছে, এ বাজেটেও তার প্রতিফলন থাকবে।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস