দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও নিরাপত্তার প্রশ্নে ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপের মতো অনলাইন যোগাযোগের মাধ্যমগুলো শিগরগিরই খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।
সরকারের বক্তব্য হচ্ছে, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে দেশে ওই অনলাইন যোগাযোগ(সামাজিক যোগাযোগ )মাধ্যমগুলো বন্ধ করা হয়েছে তাতে সরকার সফল হয়েছে।
এ বিষয়ে সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গতকাল সোমবার দেশের প্রথম শ্রেনীর একটি দৈনিককে বলেন, যে উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার এসব মাধ্যম বন্ধ রেখেছে, তাতে সরকার সফল হয়েছে।
মন্ত্রীর মতে সরকারের মূল লক্ষ্য ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তা। এ সময়ে অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ রাখায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো নানাভাবে উপকৃত হয়েছে।
মন্ত্রী পত্রিকাটিকে বলেন, ফেসবুকের মতো মাধ্যমগুলো বন্ধ থাকায় নাশকতাকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর রাখতে সুবিধা হয়েছে। সরকার সামগ্রিকভাবে নাশকতা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে।
তবে মাধ্যমগুলো বন্ধ থাকার কারণে অনেকের, বিশেষ করে দেশের মেধাবী তরুণদের সমস্যা হচ্ছে বলেও স্বীকার করেন মন্ত্রী। আর এ কারণেই সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করে এসব মাধ্যম খুলে দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান ।
এদিকে পত্রিকাটির প্রতিবেদনে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ১৯ দিন ধরে ইন্টারনেটে যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম বন্ধ থাকা অবস্থায় এসব অপরাধের মোকাবিলায় প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন এবং দক্ষ জনবল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার কেনার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
তবে সরকার বাংলাদেশে ফেসবুকের অ্যাডমিন চেয়ে এখানে আলাদা একটি সার্ভার স্থাপন এবং যেকোনো বিষয়ে সরকারের অনুরোধে দ্রুত সাড়া চেয়ে যে অনুরোধ ফেসবুকের কাছে করেছে তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফেসবুক খোলার সম্ভাবনা নেই বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য বিষয়গুলো নিয়ে গত রোববার ফেসবুকের দুই প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ।
তবে ওই দিন ফেসবুকের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনাটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তারা আমাদের খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাবেন। তবে সেটা অবশ্যই দু-এক দিনের মধ্যে সম্ভব হবে না।
প্রসঙ্গত, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের রিভিউ শুনানির রায় ঘোষণার দিন গত ১৮ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপসহ অনলাইনে যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম বন্ধ করে দেয় সরকার। এর ফলে ই-কমার্স সাইটে পরে নেতিবাচক প্রভাব।