ব্যক্তিক্রমী উদ্যোগে নজর কেড়েছেন অনেকে
জীবন ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে তরুণ মন্ত্রী-এমপিরা
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০২০-০৭-০১ ১০:১০:১৩
গত ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরা শনাক্ত হওয়ার পর সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে। হতদরিদ্র, ছিন্নমূল, দিনমজুর ও অসহায় মানুষের পাশাপাশি নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষও অসহায় হয়ে পড়েছে। খাদ্য ও চিকিৎসা সংকটে দিশেহারা মানুষের পাশে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলগুলো সেভাবে দাঁড়াতে পারেনি। রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেই স্বেচ্ছায় কোয়ারিন্টিনে ছিলেন, কারণ হিসেবে দেখানো হয় বয়োজ্যৈষ্ঠ। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানিক ভাবে অনেকে সারাদেশে অসহায় হয়ে পড়া এসব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের বেশকিছু নেতা ও তরুন জনপ্রতিনিধি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুরু থেকেই মাঠে আছেন। একইসঙ্গে দলীয় ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব যাচ্ছেন তারা। করোনা মোকাবেলায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে একজন করোনা যোদ্ধা হিসেবে জনগণের কাছে স্বীকৃতি পেয়েছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতাদের কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। নিষ্ক্রিয় ও সক্রিয় নেতাদের কাজের তথ্য সংগ্রহ করে ভবিষ্যতে বিভিন্নপর্যায়ে দলীয় মনোনয়ন এবং পদ দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে। এরই মধ্যে জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এসব তরুণ নেতাদের প্রসংশা করেছেন।
করোনা পরিস্থিতিতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ আর জীবন ঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করে সাধারণ মানুষের মধ্যেও আলোচিত হচ্ছেন সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সাংসদ। বিশেষকরে বেশ কয়েকজন বর্ষিয়ান নেতার মৃত্যুতে আওয়ামীলীগে শোকের ছায়া নেমে এলেও এসব নেতাদের মাধ্যে আগামীদিনের নেতৃত্বের সম্ভাবনা দেখছেন দলের সিনিয়র নেতারা। তাই তাদেরকে উৎসাহিত করতে মাঝে মধ্যেই দলের পক্ষ থেকে ফোন করে ধন্যবাদ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
তাজুল ইসলাম:
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তৃণমূল জনপ্রতিনিধিদের স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতার আওতায় আনতে বেশ তৎপর রয়েছেন তাজুল ইসলাম। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নগদ অর্থ সহায়তা, হতদরিদ্র জনসাধারণের জন্য বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ এবং স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে উপকারভোগীদের তালিকাপ্রণয়নে অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগে মোট একশজন প্রতিনিধিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক অভিযোগ ছিলো। অনিয়মকারী এসব জনপ্রতিনিধিদের দ্রুত বরখাস্ত করতে মন্ত্রী সর্বদায় তৎপর ছিলেন।
এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে করোনা মহামারির সময়ে সাধারণ ছুটি ছাড়াও শুক্রবার এবং শনিবারে অফিস করেছেন। শুধু তাই নয় করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে তাজুল ইসলাম ঢাকাওয়াসাকে পুরো শহরে জীবাণু নাশক পানি ছিটানোর জন্য নির্দেশ ও অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরনের নির্দেশ দেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ অধীস্ত সংস্থাগুলোকে ত্রাণ বিতরণের তাগিদ দেন। এসব কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শনকরেন।
নির্বাচনী এলকা কুমিল্লার লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার ৫০ হাজার পরিবারকে নিজ অর্থে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন। এলাকার ৫ হাজার অস্বচ্ছল পরিবারের মধ্যে বিকাশের মাধ্যমে ১ হাজার করে মোট ৫০ লক্ষ টাকা বিতরণ করেছেন। তাছাড়া নিজ এলকা ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ, সাংবাদিক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে পিপিইসহ ২০ লক্ষ টাকার সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছেন
জাহিদ আহসান রাসেল
করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর দেশের সবকিছু থমকে গেলেও থেমে থাকেন নি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসলে। কখনো ঢাকা আবার কখনো গাজীপুর ছোটাছুটি করে ক্রীড়াঙ্গনের সমস্যা সমাধন ও নিজ এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
করোনার শুরু থেকেই ব্যক্তিগতভাবে লক্ষাধিক অসহায় মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদান, হিজরা সম্প্রদায়,সেলুন কর্মচারী, ফুটপত ও রেলওয়ে স্টেশনের অসহায় ছিন্নমূল মানুষ, ইমাম-মুয়াজ্জিন এবং প্রতিবন্ধিসহ দলমত নির্বিশেষে সবাইকে প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা করেছেন।
নিজ জেলা গাজীপুরের সকল সরকারি অফিস, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, ডাক্তার ও সাংবাদিকসহ যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন তাদেরকে কয়েক দফায় সুরক্ষা সামগ্রী দিয়েছেন। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে গাজীপুর সিভিল সার্জন অফিস ও বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজে ২টি মাইক্রোবাস দিয়েছেন। ডাক্তার ও নার্সদের সমন্বয়ে মোবাইল টিম গঠন করেছেন। যা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।
তাছাড়া করোনার করনে ক্ষতিগ্রস্ত একহাজার ক্রীড়াবিদদের জন্য ১ কোটি টাকা অনুদানের ব্যবস্থা করেছেন। দফায় দফায় সে অর্থ ক্রীড়াবিদদের হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। আরও তিন কোটি টাকাঅসহায় ক্রীড়াবিদদের জন্য বরাদ্দ করেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
গাজীপুরে পিসিআর ল্যাব স্থাপন,মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মাধ্যমে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলার আগাম বিভিন্ন পদক্ষেপ (প্রকল্প) গ্রহণ ও স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠকদেরকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে উদ্ভুদ্ধ করেছেন। করোনায় অসহায় গরীব কৃষকদের ধান কাঁটাতে স্থানীয় ছাত্র ও যুব সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছেন।
রাসেলের নির্দেশনায় গাজীপুরের টঙ্গীতে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘রক্ত হলো ¯্রষ্টার দান, রক্ত দানে জীবন বাঁচান’ শ্লোগানে দুই দিনব্যাপী রক্তদান কর্মসূচির মাধ্যমে পাওয়া ৫০০ ব্যাগ রক্ত হাসপাতাল এবং ব্লাড ব্যাংকে দিয়েছেন।
ফরহাদ হোসেন
করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের পরই সবচে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়। ভাইরাসটির সংক্রমন শুরুর আগে থেকেই পূর্ব প্রস্তুতি মোতাবেক কার্যক্রম করেছে মন্ত্রনালয়টি। গোটা প্রশাসন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা, সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌছাতে সার্বক্ষনিক একজন করোনা যোদ্ধা হিসেবে আবিভূত হয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, সরকারের সব মন্ত্রনালয়, বিভাগ, অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রশাসনের কেন্দ্র হতে তৃনমূল পর্যন্ত প্রতিটি কর্মকর্তাকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় মাঠে নামাতে দিন-রাত কাজ করছেন মেহেরপুর-১ আসনের এ সাংসদ। গত ৮ মার্চের করোনা ভাইরাস সনাক্ত হবার পর মাঠ প্রশাসনকে সময়ে সময়ে প্রয়োজনী সব নির্দেশনা দিয়েছেন। জুম অ্যাপ ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত মাঠ প্রশাসনকে এলাকা ভিত্তিক সমস্যা নিরুপন ও সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছেন। ভাইরাসে আক্রান্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী উন্নত চিকিৎসা এবং প্রনোদনার ব্যবস্থাও করেছেন। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার শঙ্কায় সরকারি সব অফিস ও প্রতিষ্ঠান পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন।
শত ব্যস্ততার মাঝেও নিজ নির্বাচনি এলাকা ভুলে যাননি ফরহাদ হোসেন। জাতীয় স্বার্থে এলাকায় যেতে না পারলেও তার নির্দেশনায় দলীয় নেতাকর্মী ও প্রশাসনের কর্মকতাদের মাধ্যমে নিয়মিত খাদ্য সামগ্রি, সুরক্ষা সামগ্রি বিতরণ করেছেন।
একেএম এনামুল হক শামীম
মরণ ঘাতক করোনা ভাইরাসের সংক্রমনে গোটা দেশ অবরুদ্ধ, আতঙ্কিত, তখন জীবনের সবোর্চ্চ ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের সাংসদ একেএম এনামুল হক শামীম। তিনি একমাত্র সাংসদ, যিনি করোনার কঠিন পরিস্থিতিতে সবোর্চ্চ বার নিজ নির্বাচনি এলাকা সফর করেছেন এবং অবস্থানও করেছেন বেশি সময়। গত ২৬ মার্চ অঘোষিত লকডাউন শুরুর পর হতেই নড়িয়া-সখিপুর তথা গোটা শরীয়তপুরকে সুরক্ষিত রাখতে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, দলীয় নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সমন্বিত ভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন। করোনার মধ্যেই মরার উপর খরার ঘা হিসেবে দেখা দেয় ঘূর্নিঝড় আম্ফান। ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকাবাসীর কাছেও জীবন ঝুঁকি নিয়ে ছুটে গেছেন। বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতসহ ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করেছেন। বর্ষার আগমনকে মাথায় রেখে করোনা ঝুঁকি নিয়ে সারাদেশের ঝুকিপূর্ণ পয়েন্টগুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন এবং সে অনুযায়ী কাজও চলছে।
তথ্য মতে, করোনা শুরুর হবার পর প্রতি সপ্তাহে অন্তত দু’দিন নিজের নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করছেন একেএম এনামুল হক শামীম। এ পর্যন্ত ২২ বার নির্বাচনি এলাকা সফর করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচনি এলাকার ২৫ টি ইউনিয়নে ৮ ধাপে ৫৭ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। নড়িয়া উপজেলা ও সখিপুর থানায় ইমাম, মুয়াজ্জিন, অস্বচ্ছল আলেম, জেলে সম্প্রদায়, চরের ভাসমান মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষক, দিনমুজুর, প্রতিবন্ধি, মুচি, বেদে সম্পদ্রায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার পক্ষে মানবিক সহায়তা হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রি বিতরণ করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক এ সাংগঠনিক সম্পাদক। তার প্রতিটি কর্মকান্ডে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, সহযোগি সংগঠন ও প্রশাসনকে সম্পৃক্ত রাখা হয়। এছাড়া জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পরিচালিতি প্রতিটি মানবিক কর্মসূচি নিজে উপস্থিত হয়ে সফল করেছেন।
জেলার ৬ টি হাসপাতালে প্রায় ১২ হাজার মাস্ক ও ৩’শ পিপিই বিতরণ করেছেন। নিয়মিত হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সিলিন্ডার আপডেট করা, আইসোলেশন সেন্টার ঠিক রাখাসহ চিকিৎসকদের খোঁজখবর রাখছেন।
সাবেক এ ছাত্রনেতার ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসক ব্রিগেড; ‘ডাক্তারের কাছে রোগী নয় রোগীর কাছে ডাক্তার’ কর্মসূচি সারাদেশে সারা জাগিয়েছেন। প্রায় আড়াই মাস অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের মাধ্যমে নড়িয়ায় ও সখিপুর এলাকায় করোনা দুর্যোগে ঘরবন্দি মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। নিজস্ব তহবিল থেকে দুটি চিকিৎসক টিম গঠন করে ঘরবন্দি মানুষকে বাড়িতে গিয়েই চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছেন। ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসক ব্রিগেড নামে ঐ পরিচালিত এ কর্মসূচির আওতায় রোগী দেখার পর ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ দলের কাছে রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ না থাকলে দেওয়া হয় ওষুধ কেনার জন্য নগদ টাকা।
জানতে চাইলে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে মানবতার জননী দেশরত্ম শেখ হাসিনার কর্মী। নেত্রীর নির্দেশনায় আমরা নির্বাচনি এলাকা নড়িয়া-সখিপুরসহ গোটা শরীয়তপুর বাসীর জন্য কাজ করছি। কতটা ঝুঁকি নিয়েছি, সেটা বুঝি না, শেখ হাসিনার কর্মী হিসেবে এটা আমার দায়িত্ব সেটাই বুঝি। যতদিন সুস্থ্য আছি, জনগণের পাশে থাকব ইনশাল্লাহ।
মির্জা আজম
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিজ নির্বাচনি এলাকা জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের আশ্রয় স্থল হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর প্রায় দুই মাস টানা এলাকায় অবস্থান করে সবোর্চ্চ দিয়ে এলাকার অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অসহায় দু:স্থদের খাদ্য সামগ্রি বিতরণ, চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা, কৃষকদের ফসন ঘরে তোলা, চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেছেন। সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডে তালিকা করে নগদ অর্থ, খাদ্য সামগ্রি (ডাল, তেল, আলু, পিয়াজ, সাবান) করোনার সুরক্ষা সামগ্রি বিতরণ করেছেন।
করোনা দুর্যোগে কর্মহীন মানুষদের সরকারি ও ব্যক্তিগত অর্থ, খাদ্য, কৃষি যন্ত্রপাতি সহায়তা ছাড়াও করোনা শনাক্ত করণের আরটি পিসিআর ল্য স্থাপন নিশ্চিত করেছেন তিনি। মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত নুরুন্নাহার মির্জা কাশেম মেমোরিয়াল ট্রাস্টে াব র মাধ্যমে মাদারগঞ্জ উপজেলার ৫০০ দুস্থ পরিবারের মাঝে নগদ ৫ লাখ টাকা বিতরণ করেছেন। ব্যক্তিগত অর্থায়নে মাদারগঞ্জ উপজেলার ৬০৮ এবং মেলান্দহ উপজেলার ৬০৫টি মসজিদের ৩ হাজার ইমাম, মুয়াজ্জিন ও আলেমদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করেছেন। করোনার কারণে মাঠে ফসল নিয়ে কৃষকদের বিপদে পাশে দাঁড়ান মির্জা আজম। দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে কৃষকের ফসল ঘওে তোলাসহ কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করেন।
নির্মাণাধীন শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে আরটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করে দিয়েছেন গোটা জামালপুরবাসীকে করোনা পরীক্ষার জটিলতা থেকে মুক্ত করেছেন। আইসোলেশন সেন্টারে থাকা প্রতিটি রোগীর সাথে ব্যক্তিগতভাবে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করেছেন।
আতিকুল ইসলাম
দেশে যখন করোনা ভাইরাস প্রথম সনাক্ত হয় তখনও দায়িত্ব গ্রহণ করেননি ঢাকার নব নির্বাচিত দুই মেয়র। তবে করোনা ভাইরাসের শুরুর দিকে ঢাকার মানুষ যখন দিশেহারা ঠিক সেই সময়ে মেয়রের চেয়ারে না থেকেও নাগরিকদের কাছে ছুটে গেছেন আতিকুল ইসলাম। প্রথম লকডাউনের সময় তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে কর্মহীন ৬৭ হাজার পরিবারের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়ে প্রসংশিত হয়েছেন। তাছাড়া ডিএনসিসির পক্ষ থেকে পাঁচ লক্ষাধিক পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। পাশপাশি ঢাকা উত্তর সিটিকরপোরেশনের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফার সঙ্গে স্বমন্বয় করে নগরীর বিভিন্ন স্থানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছেন। জীবানুনাশক স্প্রে, জনসচেতনতা তৈরি, সামাজিত দূরত্ব নিশ্চিত করা, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমসহ করপোরেশনের সার্বিক কাজ পরোক্ষভাবে তদারকি করেছেন।
দায়িত্ব গ্রহণ করে নগর পরিচ্ছকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে প্রথমেই পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও মশককর্মীদের মধ্যে ১ হাজার জোড়া গামবুট, ৫ হাজার জোড়া উন্নত মানের লম্বা গ্লাভস, ৮ হাজার মাস্ক, ৫ হাজার স্মার্ট জ্যাকেট (স্বাস্থ্যকর্মী ও হাসপাতাল সমূহের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজে নিয়োজিত পরিচ্ছন্নতা কর্মীদেরজ ন্য) বিতরণ করেন আতিকুল।
গত ১৮ থেকে ২৪ এপ্রিল প্রতিটি ওয়ার্ডকে ৭ ভাগে ভাগ করে সপ্তাহব্যাপী পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। জলবদ্ধতা নিরসনে বিশেষ ড্রেন পরিষ্কার কার্যক্রম চলছে। যেখানে ১২ জন ক্লিনার নিয়মিত কাজ করছেন। ২২ এপ্রিল থেকে ডিএনসিসির এলাকার সকল সরকারী হাসপাতাল পরিচ্ছন্নতার আওতায় আনা হয়েছে। কড়াইল, ভাষানটেক, বাউনিয়া বাধ ও ধামাল কোট বস্তির মোট ২৩০টি স্থানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনা সংক্রান্ত তথ্য ও পরামর্শের জন্য ডিএনসিসির নগর ভবনে একটি সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের কাছে ত্রাণ সহায়তা প্রেরণের জন্য ২টি হটলাইন চালু করা হয়েছে। এছাড়া ৫টি অঞ্চলে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত চিকিৎসা-তথ্য ও পরামর্শ সেবা চালু করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েও উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তির দাফনের জন্য প্রথমে ডিএনসিসির আওতাধীন খিলগাঁও-তালতলা কবরস্থান বরাদ্দ করলেও বর্তমানে রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা হচ্ছে। এখানে প্রায় ১ লাখ কবর দেয়ার ব্যবস্থা আছে।
শেখ তন্ময়
করোনার কঠিন পরিস্থিতিতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নজর কেড়েছেন বাগেরহাট-২ আসনের সাংসদ শেখ তন্ময়। সর্বশেষ তথ্য মতে, তার ব্যক্তিগত সহকারীর করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসার পর চিকিৎসকের পরামর্শে আইসোলেশনে রয়েছেন তিনি। করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব শুরুর পর থেকেই নির্বাচনি এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। অসহায় হয়ে পড়া মানুষের মধ্যে নিয়মিত খাদ্য সামগ্রি বিতরণ করেছেন।
হটলাইনের মাধ্যমে ‘ডাক্তারের কাছে রোগী নয় রোগীর কাছে ডাক্তার’ গানে নিজের সংসদীয় আসনে চিকিৎসাসেবা চালু করেন তিনি। ‘গর্ভবতী মায়েদের ঘরে পুষ্টিকর খাবার, ভবিষ্যতের কাছে বর্তমানের অঙ্গীকার’ এই শ্লোগানে এক হাজার ৭০৪ জন সন্তান সম্ভবা মায়ের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। করোনার সম্মুখ যোদ্ধা চিকিৎসদের জন্য সেফটি চেম্বারও স্থাপন করেছেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে আইসোলশনে থাকলেও মুঠোফোনের মাধ্যমে এলাকার সার্বিক কর্মকান্ড মনিটরিং করছেন এবং সব ধরণের সেবা অব্যাহত রেখেছেন।
মাশরাফি বিন মুর্তজা
বাংলাদেশ জাীতয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা খুব অল্প সময়ে ক্রিকেট তারকা থেকে রাজনৈতিক অঙ্গণে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। সরকার দলীয় সাংসদ হয়ে পাক্কা রাজনীতিবিদরা যা করতে পারেননি তাই করে দেখিয়েছেন রাজনীতিতে নবীন মাশরাফি। বিশেষ করে করোনাকালে নড়াইল- ২ আসনের মানুষের জন্য তার ভূমিকা সর্বমহলে প্রসংশিত হয়েছে। সবশেষে মানুষের সেবা করতে গিয়ে নিজেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
নিজ এলাকার দরিদ্র মানুষের খাদ্য, চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে নিরলস ভাবে কাজ করেছেন মাশরাফি। করোনর সময় সারাদেশে যখন বিনা চিকিৎসায় রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন তখন তিনি ‘কাপ্তান’ নামের একটি ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম গঠন করেছেন। এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। সদর হাসপাতালে একটি জীবাণ ুনাশক কক্ষ স্থাপন করেছেন। চিকিৎসকদের জন্য তৈরি করে দিয়েছেন সেফটি চেম্বারও। এলাকার কৃষকদের জন্য ধানকাটার মেশিনের ব্যবস্থা করেছেন।
জানতে চাইলে আলাপকালে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য কর্ণেল (অব.) ফারুক খান বলেন, তরুণ অনেক জনপ্রতিনিধিই ভাল কাজ করছেন। আবার অনেকেই এই করোনায় মানুষের পাশে ছিলেন না। রাজনীতি যেহেতু মানুষের জন্য তাই মানুষই তাদের ভূমিকা মূল্যায়ণ করবে। করোনর এই সংকটকালে যারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, গণমানুষের দল হিসাবে আওয়ামী লীগ তাদের কথা মনে রাখবে এবং অবশ্যই মূল্যায়ণ করবে।