ঘরে বসেই দেওয়া যাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট)। তিনটি ব্যাংকের গ্রাহকদের নিয়ে আগামী ১৬ জুলাই এই কার্যক্রম শুরু করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ওই এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমতুল মুনিম।
বিষয়টি সানবিডিকে নিশ্চিত করে এনবিআর ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের পরিচালক কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,আমরা সফলভাবে ই-পেমেন্ট মডিউলটির কাজ শেষ করেছি। আগামী ১৬ জুলাই এই পদ্ধতির কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমতুল মুনিম।
তিনি বলেন,তিনটি ব্যাংকের মাধ্যমে অনলাইনে ভ্যাটের রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। ব্যাংক তিনটি হলো দি হংকং এন্ড সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশন(এইচএসবিসি), প্রাইম ব্যাংক ও মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড। পর্যায়ক্রমে দেশের সব প্রতিষ্ঠান এর আহতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
এনবিআর বলছে, পর্যায়ক্রমে আগামী এক বছরের মধ্যে সব ভ্যাট অফিসকে অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। বর্তমানে এনবিআরের অধীনে সারাদেশে প্রায় তিনশ' ভ্যাট সার্কেল অফিস আছে। নিয়ম অনুযায়ী, আয়করের পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে আয়করের ক্ষেত্রে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বছরে একবার রিটার্ন জমা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও ভ্যাটের ক্ষেত্রে তা প্রতি মাসে দিতে হয়। আইন অনুযায়ী এক মাসের ভ্যাট রিটার্ন পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখে জমা দিতে হয়। বর্তমানে সনাতন পদ্ধতিতে, অর্থাৎ প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এলাকাভিত্তিক ভ্যাট অফিসে রিটার্ন জমা দেয়। নতুন নিয়মে অনলাইনের আওতায় কেন্দ্রীয়ভাবে রিটার্ন জমা দিতে হবে।
সারাদেশে মোট প্রায় এক লাখ ৫৫ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে নিবন্ধন নিয়েছে। এনবিআরের লক্ষ্য হচ্ছে এদের সবাইকে বাধ্যতামূলক রিটার্নের আওতায় নিয়ে আসা। বর্তমানে এলটিইউতে ১৫৬টি প্রতিষ্ঠান আছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে মোট আয়ের ৬৪ শতাংশ ভ্যাট আসে।
এনবিআর বলেছে, এলটিইউতে পরীক্ষামূলক রিটার্ন জমা দেওয়ার কার্যক্রম সফল হলে অন্যান্য ভ্যাট অফিসে তা শুরু করা হবে। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে নেওয়া হয় অনলাইন প্রকল্প। ৫৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের মার্চে। গত বছর এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও পরে দুই বছরের জন্য সময় বাড়ানো হয়। প্রকল্প ব্যয় বাড়ায় সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এনবিআর কর্মকর্তারা আশা করেন, সব প্রতিষ্ঠানকে অনলাইনের আওতায় আনার পর বাধ্যতামূলক রিটার্ন জমা দেওয়ার কাজ শেষ করতে পারলে ভ্যাট আহরণ বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ হবে।