বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকার প্লাস্টিক পণ্যের বাজার বিকশিত হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে প্লাস্টিকের প্রয়োজনীয় জগ, মগ থেকে শুরু করে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের প্যাকেট, ইনজেকশন সিরিঞ্জ, রক্ত সংগ্রহের ব্যাগ, চোখের মণি, ক্রোকারিজ, ঘরের দরজা, জানালা, স্যানিটারি, ইলেকট্রিক দ্রব্যাদি, কম্পিউটার, টেলিফোন সেটসহ বিভিন্ন ধরনের খেলনা। বর্তমানে বাংলাদেশী প্লাস্টিক পণ্যের বাজারের আকার ২ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার। ২০৩০ সাল নাগাদ এ বাজারের আকার হবে ১০ বিলিয়ন ডলার।
এই খাতসংশ্লিষ্টদের দাবি, বাংলাদেশে বর্তমানে যে সকল আধুনিক প্লাস্টিক পণ্য সামগ্রী তৈরি হচ্ছে সেগুলো আন্তর্জাতিক মানের। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়ছে বাংলাদেশে। সরকারি তথ্য-উপাত্ত বলছে, ২০০৭ থেকে ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে প্লাস্টিক পণ্যের বৈশ্বিক চাহিদা। প্লাস্টিকের বৈশ্বিক ব্যবহার মাথাপিছু ৫০ কেজি। যুক্তরাষ্ট্রে এ হার মাথাপিছু ১০৯ কেজি। চীন ও ভারতে যথাক্রমে ৩৮ ও ১১ কেজি। বাংলাদেশে মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার পাঁচ থেকে সাত কেজি।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের তৈরি ন্যাশনাল প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট পলিসি ২০২০ বলছে, বৈশ্বিক প্লাস্টিক শিল্পের অন্যতম শীর্ষ উৎপাদনকারী দেশ হওয়ার সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশের। বর্তমানে প্লাস্টিক পণ্যের বৈশ্বিক বাজার ৫৭০ বিলিয়ন ডলার। এ বাজারে বাংলাদেশের অংশ মাত্র দশমিক ৬ শতাংশ। গ্র্যান্ড ভিউ রিসার্চের বরাতে শিল্প মন্ত্রণালয় বলছে, ২০২৫ সালে প্লাস্টিক পণ্যের বৈশ্বিক বাজারের আকার হবে ৭২১ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে তৈরি প্লাস্টিক পণ্যের বাজারের আকার বর্তমানে ২ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার। যার ৮৩ দশমিক ৪ শতাংশ স্থানীয় বাজার। আর বাকি ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ বৈশ্বিক।
সরকারের গৃহীত পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতি বছর প্লাস্টিক খাতের প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশ হারে হবে বলে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্লাস্টিক শিল্প খাতের নতুন উদ্যোগগুলো যেসব বাধার সম্মুখীন হচ্ছে তা নিশ্চিহ্ন করা হবে ২০২২ সালের মধ্যে। ২০২৬ সালের মধ্যে ৫০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি জিডিপিতে অবদান হবে ন্যূনতম ২ শতাংশ। এত কর্মযজ্ঞের পর ২০৩০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক ব্যবহার বিবেচনায় শূন্য বর্জ্যের জাতি হিসেবে রূপান্তর হবে বাংলাদেশ। আর বর্তমান ২ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার আকারের বাংলাদেশে তৈরি প্লাস্টিক পণ্যের বাজার ২০৩০ সালের মধ্যে হবে ১০ বিলিয়ন ডলারের।