বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার পৌর শহরের বিভিন্ন চামড়া গুদাম এলাকার আড়তগুলোতে ইদ উল আযহার কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণে লবণ মাখিয়ে রাখা হচ্ছে। এবার ইদে জবেহকৃত কোরবানির পশুর চামড়া কিনে বড় মহাজনদের অপেক্ষায় রয়েছেন আড়তদাররা। উপজেলার সর্বত্র এবারেও কোরবানির পশুর চামড়া অনেক কম দামে কেনাবেচা হয়েছে। এ বছর গত বছরের চেয়ে এবার চামড়া সংগ্রহ হয়েছে বেশি। যেখানে সান্তাহারেই গত বছর সাড়ে ৪ হাজার পিস চামড়া সংগ্রহ হয়েছিল, সেখানে এবছর চামড়া সংগ্রহ হয়েছে ৫ হাজার পিস। অর্থাৎ এবার ৫ শ চামড়া বেশি কেনা হলেও তাঁদের চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। কারণ ট্যানারি মালিকেদের কাছ থেকে গত ৪ বছর আগের দেওয়া চামড়ার ৫০ ভাগ টাকা এখনো তুলতে পারেননি তারা।
জানা গেছে, এ বছর পশুর চামড়ার দাম কম হওয়ায় আড়তদাররা ফড়িয়াদের কাছে থেকে গত বারের চাইতে এবার বেশি চামড়া সংগ্রহ করেছেন। যেসব চামড়া বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে এখন সেগুলো লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে রাখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সান্তাহার পৌর শহরের চামড়া গুদাম এলাকার ব্যবসায়ী জামাতুল ইসলাম জানান, গত বছর তিনি ১ হাজার পিস চামড়া কিনেছিলেন, দাম কমের কারণে এবছর ১২ শ পিস কিনেছেন। কিন্তু ঈদের এক সপ্তাহ পার হলেও বড় মহাজনরা তার আড়তে চামড়া কিনতে এখনো আসেননি। তাই তিনি চামড়া কিনে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন।
রবিবার দুপুরে উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের চামড়া গুদাম এলাকার আব্দুল কুদ্দুস নামের এক ব্যবসায়ীর গুদামে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে কোরবানির চামড়াগুলো স্তূপাকারে রাখা হয়েছে। সেগুলো লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। এসময় কথা হয় আব্দুল কুদ্দুসের সাথে। লোকসান থেকে কিভাবে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বের হতে পারেন সে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি পর্যাপ্ত লবণ দিয়ে তারা চামড়াগুলো সংরক্ষণ করেন তাহলে মহাজনদের কাছে থেকে সরকার নির্ধারিত দাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর চামড়া সংরক্ষণ না করে যদি কাঁচা চামড়া কম দামেই বিক্রি করে দিলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
এলাকার বেশ কয়েকজন আড়তদার জানান, এবারের কোরবানির মৌসুমে সরকার গত বছরের মতো গরুর কাঁচা চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকার বাইরে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। খাসির কাঁচা চামড়ার দাম সারা দেশে ১৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। সেই হিসেবে একটি বড় গরুর চামড়ার দাম দাঁড়ায় ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। নির্ধারিত মূল্যে চামড়া কিনেও লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন। তবে তারা বলছেন, লবণ ও শ্রমিকের মজুরি খরচ বাদ দিয়ে পুঁজি উঠবে কি-না তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। আর যদি সঠিক সময়ে ও সঠিক দামে বেচা না যায় তাহলে নির্ঘাত লোকসান গুনতে হবে।
সানবিডি/এনজে