আরো বিস্তৃত ও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের কার্যক্রম। ওয়ালটন পণ্যের উত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করতে নানাবিধ পদক্ষেপ নিচ্ছে আইএসও সনদ প্রাপ্ত ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ডব্লিউএসএমএস)। উন্নত সেবার পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব সেবা প্রদানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে সার্ভিস পয়েন্টগুলোকে। বিদেশের বাজারে বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে শ’খানেক প্রকৌশলীকে নিয়ে একটি দক্ষ টিম গঠণ ও প্রশিক্ষণ চলছে।
সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে উচ্চমানের বিক্রয়োত্তর সেবা দেয়া হচ্ছে গ্রাহকদের। জোর দেয়া হচ্ছে খুব দ্রুত ও নিখুঁত বিক্রয়োত্তর সেবার উপর। গ্রাহকদের হাতের নাগালে সেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে ৬০ টি সার্ভিস পয়েন্ট চালু রয়েছে। প্রায় ২২০ টি প্লাজাতেও বিক্রয়োত্তর সেবা দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। আরো নতুন নতুন সার্ভিস পয়েন্ট চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ওয়ালটন সার্ভিস পয়েন্টগুলোতে কাজ করছেন প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানসহ ১৫শ’র বেশি দক্ষ কর্মী। এছাড়া রয়েছে কল সেন্টার ও কাস্টমার কেয়ার এক্সিকিউটিভস। ফলে সাধারণত তিন দিনের মধ্যে গ্রাহকদের মানসম্পন্ন বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান করতে সক্ষম হচ্ছে ওয়ালটন।
জানা গেছে, বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল ও অটোমোবাইল খাতে একমাত্র ওয়ালটনের রয়েছে এতো বেশি সংখ্যক সার্ভিস পয়েন্ট ও আইএসও সনদ প্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। হাতের নাগালে দ্রুত ও সন্তোষজনক বিক্রয়োত্তর সেবার ফলে গ্রাহক পছন্দ বিবেচনায় শীর্ষ ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে ওয়ালটন।
ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের প্রধান কর্মকর্তা ও ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর মোঃ নিয়ামুল হক বলেন, পণ্য বিক্রি এবং বিক্রিয়োত্তর সেবাতে ওয়ালটন শীর্ষে। লক্ষ্য একটাই- গ্রাহকদের সন্তুষ্টি অর্জন। এজন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরী বিশ্বমানের পণ্য সরবরাহ ও দ্রুত মানসম্পন্ন বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
উল্লেখ্য, ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম আইএসও ৯০০১:২০০৮ সনদ পেয়েছে। ডব্লিউএসএমএস-এর ডেপুটি ডিরেক্টর (মনিটরিং) শাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, ওয়ালটন সার্ভিস পয়েন্টগুলোতে রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, লেটেস্ট যন্ত্রপাতি, সম্পূর্ন ব্র্যান্ড নিউ খুচরা যন্ত্রাংশের পর্যাপ্ত মজুদ এবং অত্যন্ত মেধাবী, দক্ষ, উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানসহ নিবেদিতপ্রাণ কর্মীবাহিনী।
চলতি মাসে সিলেট, বরিশাল, গোপালগঞ্জ ও ঢাকার মোহাম্মদপুরে চালু করা হয়েছে নতুন চারটি সার্ভিস সেন্টার। রযেছে আটটি সেলফোন সার্ভিস পয়েন্ট। সম্প্রতি মোবাইল ফোনের বিক্রি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সেলফোন সার্ভিস সেন্টারের সংখ্যা ১৫ তে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্তমানে ৪২টি জেলা শহরে রয়েছে ওয়ালটন সার্ভিস পয়েন্ট। এরমধ্যে ঢাকায় রয়েছে ১০টি। দেশের সব জেলা শহরে সার্ভিস সেন্টার চালু করতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। জেলা শহরগুলো ছাড়াও যেসব অঞ্চলে ওয়ালটন পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে সেখানেও সার্ভিস সেন্টার চালু করা হবে।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাহকদের দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দিতে ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম শ্রীঘ্রই চালু করতে যাচ্ছে ভ্রাম্যমান সার্ভিস সেন্টার। ভ্রাম্যমান যানবাহনে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ, প্রকৌশলী, টেকনিশিয়ানসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ইক্যুইপমেন্ট থাকবে। এর বাইরে গ্রাহকরা পণ্য সম্পর্কে যেকোন সমস্যা ১৬২৬৭-এ ফোন করে সহজেই জানাতে পারেন। তাছাড়া বিভিন্ন পণ্যের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টিতো রয়েছেই।
ডব্লিউএসএমএস-এর মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক বিভাগের প্রধান এসএম নাসির উদ্দিন বলেন, গ্রাহকদের বিশ্বমানসম্পন্ন বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত নিয়োগ দেয়া হচ্ছে মেধাবী, দক্ষ, পরিশ্রমী প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানদের। দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদানের জন্য টেকনিক্যাল মনিটরিং এর আওতায় রয়েছে চারটি বিভাগ- হোম এ্যাপ্লায়েন্স, টেলিভিশন, সেল্যুলার ফোন ও মেকানিক্যাল প্রোডাক্ট। তিনি জানান, নিয়মিত মিটিং ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাড়ানো হচ্ছে কর্মীদের দক্ষতা ও কাজের গতি। কর্মীদের কাজের আগ্রহ আরো বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরণের কার্যকর প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামি দিনগুলোতে ক্রেতারা আরো উন্নত বিক্রয়োত্তর সেবা পাবেন ওয়ালটনের কাছ থেকে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ওয়ালটন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বিক্রয়োত্তর সেবাকে। এজন্য কিছু গুরুত্বপূর্ন উদ্যোগ ও পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে অনলাইন টিভির মাধ্যমে টেকনিশিয়ান ও গ্রাহকদের প্রশিক্ষণ। সাভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমকে শতভাগ অটোমেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। যাতে সময়মতো কাজ শেষ করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্টরা আইটিতে দক্ষ হন। সরাসরি প্রশিক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিনিয়ত অন লাইন প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। কর্মদক্ষতা উন্নয়নে এই সিস্টেম বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটনেরই রয়েছে। এছাড়া ভিডিও টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্য। সংশ্লিস্ট দেশগুলোতে বিক্রয়োত্তর সেবা দেয়ার জন্য শ’খানেক বিএসসি ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর সমন্বয়ে একটি দক্ষ টিম গঠণ করা হয়েছে। বর্তমানে তাদের প্রশিক্ষণ চলছে।