তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বিশ্বের ১০টি সম্ভাবনাময় বিনিয়োগকারী দেশের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। এ কথা এখন বিশ্বের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে কম খরচে কাজ করতে গেলে বাংলাদেশ অন্যতম। বোস্টন কনসালটিং গ্রুপ বলছে আইটি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সবচেয়ে সেরা গন্তব্য।
মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, ওরিক্স বায়োটেক লিমিটেড ও সামিট টেকনোপলিস লিমিটেডের মধ্যে ত্রি-পক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে বায়োটেক ইন্ডাস্ট্রি স্থাপন সংক্রান্ত এই চুক্তি সম্পাদন করা হয়।
কোম্পানিটি ৩’শ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে প্লাজমা সংরক্ষণ সেন্টার চালু করবে। এতে প্রায় ২ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে ২৮টি হাইটেক পার্ক স্থাপনের কাজ চলমান। এর মধ্যে কালিয়াকৈরসহ ৫টি পার্ক এখনই বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। ২০১৪ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরুর পর ৫ বছরের মধ্যে ৪৯৮ কোটি টাকা সরকারি বিনিয়োগ হয়েছে। বেসরকারি বিনিয়োগ হয়েছে ৩২৭ কোটি টাকা। আমরা আয় করেছি ৫০ কোটি টাকার বেশি। ১১০টি কোম্পানিতে ১৩ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ৫০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। ওরিক্সে জ্ঞান ভিত্তিক কর্মসংস্থান হবে। যাদের বেতন হবে অনেক হাই।
তিনি বলেন, এখন প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশে কেনো আসবে বিনিয়োগকারীরা। এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে দশ বছরের ট্যাক্স হলিডে, ডেভেলপারদের জন্য ১০ বছরের ট্যাক্স ফ্রি সুবিধা রয়েছে। ডিউটি ফ্রি মেশিন আমদানির সুবিধা রয়েছে এবং শতভাগ বিদেশি মালিকানায় বিনিয়োগের সুবিধা।
হাইটেক পার্কগুলোতে অফিস রেডি, রেল ও উন্নত সড়ক যোগাযোগ রেডি, হাই স্পিড নেট, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা, গ্যাস সরবরাহ ও চমৎকার বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখনই বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়। কোভিডের কারণে সারাবিশ্ব যখন স্থবির। তখন বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আস্থা রেখে ৩’শ মিলিয়ন ডলারের মতো বিনিয়োগ এসেছে। একজন বিনিয়োগকারী ফোন করেছিলেন তারা বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করার জন্য জায়গা চায়।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আইটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় আমাদেরকে বলেছেন, প্রতি বছর ২০ লাখ তরুণ- তরুণী বের হচ্ছেন। তারা যাতে এসএসসি পাশ করে স্বল্প সময়ের ট্রেনিং নিয়ে কিছু কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। এ জন্য ৬৪ জেলার শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং সেন্টার করা হচ্ছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এমএম জিয়াউল আলম বলেন, বিনিয়োগকারীকে ১৪ ধরনের প্রণোদনাসহ অনেক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ওরিক্স প্লাজমা সংরক্ষণের কাজ করবে। ২০টি প্রতিষ্ঠান কাজ করবে। ৩’শ মিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক বিনিয়োগ হবে, ২ হাজার লোকের উচ্চ বেতনের কর্মসংস্থান হবে।
সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ খান অনলাইনে যুক্ত হয়ে বলেন, হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। এই কোম্পানি স্থাপনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মর্যাদা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন, ২৮টি হাইটেক পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৫টি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ইতিমধ্যে ১৬ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দিতে সক্ষম হয়েছি, ৩ হাজার চলমান, আর ৫ হাজার জনকে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।