জঙ্গি হামলার নামে বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ওপর রেড অ্যালার্ট জারিকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘এই নিউইয়র্ক শহরেও আওয়ামী লীগ নেতা নজমুলকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তাই বলে কি এই সিটিতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছিল?’
নিউ ইয়র্কে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। ঢাকার গুলশানে ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজারকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশই শুধু নয়, এখন বিশ্বব্যাপী এমন সন্ত্রস্ত পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে। কিন্তু আমরা বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা কোনো জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করি না। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানও আমরা চাই না।’ যারা বাংলাদেশকে ‘অস্থিতিশীল’ করতে চায়, তারাই এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশে একটি রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী মানুষ পুড়িয়ে মারে। মানুষ হত্যা করে দেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়- এমন কিছু লোক তো বাংলাদেশে রয়েছে। তারা তো চাইবেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে। সেই শ্রেণির লোকদেরই কর্মকাণ্ড এগুলো।
তিনি বলেন, ‘একজন বিদেশি নাগরিক মারা যাওয়ায় সত্যি আমরা দুঃখিত। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। আমরা যদ্দুর জানি, শিকাগো থেকে একটি মেসেজ দেওয়া হয়েছে যে, এটি আইএস করেছে। তবে বাংলাদেশ থেকে কেউ এমন দাবি করেছে বলে এখন পর্যন্ত কোনো মেসেজ পাইনি।’ ওই হত্যাকাণ্ডের পর এক বিএনপি নেতার বক্তব্য নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
তাবেলার হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খান মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘নিজের ক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে এ দেশে নানা জঙ্গিগোষ্ঠী ক্রিয়াশীল রয়েছে বলে সরকার পশ্চিমা বিশ্বকে জুজুর ভয় দেখিয়ে আসছে। এখন তারাই সেই জুজুর শিকার হয়েছে।’
বিএনপি নেতার এ বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন তো সন্দেহ হয় যে, উনাকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত, ওই ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না। আমি দেশে ফিরে সে ব্যবস্থাও করব।’
জঙ্গি হামলার ঝুঁকির কথা বলে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বাংলাদেশে সফর পিছিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে কোনো আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসরে হামলা বা নাশকতার কোনো ঘটনা কখনো ঘটেনি। এতটুকু বলতে পারি যে, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং জনসাধারণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে খেলাধুলা পরিচালনায় সব ধরনের সহায়তা দিয়ে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও যথেষ্ট পারদর্শিতার সঙ্গে সবার নিরাপত্তা বিধানে বদ্ধপরিকর।
সানবিডি/ঢাকা/রাআ