সাতক্ষীরায় অবস্থিত ভোমরা স্থলবন্দরে চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাসেই রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে ৫৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা কম। তবে গেল ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভোমরা শুল্কস্টেশনের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ভোমরা বন্দরে রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এ লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে গেল জুলাইয়ে রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে ৫৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সেই হিসাবে ঘাটতি ১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
সূত্রটি আরো জানায়, গেল অর্থবছরের জুলাইয়ে ভোমরা বন্দরে রাজস্ব অর্জিত হয়েছিল ৪৭ কোটি ৯ লাখ টাকা। এ হিসাব অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব অর্জন হয়েছে। বন্দরসংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা সংকটের কারণে বন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা যাওয়ায় কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব অর্জিত হয়নি। তবে আগামীতে করোনা সংকট কেটে গেলে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়বে বলে আশা করছেন তারা।
ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, গেল অর্থবছরের ২৪ মার্চ থেকে ভোমরা বন্দর সরকারিভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর প্রায় সাড়ে তিন মাস পর গত ২০ জুন থেকে ভোমরা বন্দর খোলা হয়েছে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে বন্দরে পণ্য আমদানি-রফতানিতে মন্দা যাচ্ছে। বন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো গেলে রাজস্ব আদায় বাড়বে।
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণেই চলতি অর্থবছরের জুলাইরে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি বলে মনে করেন ভোমরা শুল্কস্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের নবাগত বিভাগীয় সহকারী কমিশনার মালেকিন নাসির আকন্দ। তিনি বলেন, এ করোনাকালীন বন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো যাচ্ছে না। আর আমদানি-রফতানির ওপর নির্ভর করে রাজস্ব বেশি-কম হয়। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রাজস্ব বাড়বে।
উল্লেখ্য, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ভোমরা বন্দরে ১ হাজার ৪ কোটি ৩ লাখ টাকা রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মধ্যে জুলাইয়ে ৭৩ কোটি ৫২ লাখ, আগস্টে ৭৭ কোটি ৫৯ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৬৭ কোটি ৬৮ লাখ, অক্টোবরে ৮৮ কোটি ৭ লাখ, নভেম্বরে ১১৪ কোটি ৮ লাখ, ডিসেম্বরে ১৩১ কোটি ৭ লাখ, জানুয়ারিতে ১৩২ কোটি ৫৫ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৫ কোটি ২৭ লাখ, মার্চে ১৪৬ কোটি ১৯ লাখ এবং জুনে ১৬ কোটি ৩ লাখ টাকা। তবে গেল অর্থবছরের এপ্রিল ও মে মাসে বন্দর বন্ধ থাকায় কোনো রাজস্ব সংগ্রহ না হওয়ায় চলতি অর্থবছরের এপ্রিল ও মে মাসে কোনো রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়নি। ফলে যে ১০ মাসের জন্য রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা গেল অর্থবছরের তুলনায় ১৬৩ কোটি টাকা কম।