চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলের উপজেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাছের অভয়াশ্রম বাইক্কা বিল হাইল হাওর। এখানে কাঠ দিয়ে তৈরি রা বাক্সে ডিম থেকে ছানা ফুটছে ধলা বালিহাঁসের। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৃত্রিম বাসায় বালিহাঁসের ডিম পাড়ার জন্য দেশে, এমনকি বিশ্বেও এটিই একমাত্র স্থান।
বিগত ২০০৬ সাল থেকে বালি হাঁসের প্রাকৃতিক প্রজননস্থলের বিকল্প হিসেবে কাঠের বাসা তৈরি করে পরীক্ষামূলক ডিম থেকে ছানা ফুটানো হয়। এরপর থেকে প্রতিবছরই কৃত্রিম এসব বাসায় বালিহাঁস ডিম পাড়ছে। তা থেকে ছানা ফুটছে। ছানারা নিরাপদেই বড় হয়ে বিলের পানিতে নেমে পড়ছে। এবারও প্রজনন মৌসুমের শুরুতেই অন্তত ছয়টি বাসায় ডিম পেড়েছে বালিহাঁস। একটি থেকে এরই মধ্যে সবগুলো ছানা ফুটে বেরিয়ে গেছে।
বাইক্কাবিলে হাইল হাওরে পর্যবেক্ষণে থাকা বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডি (সিএনআরএস) শ্রীমঙ্গল অফিস সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি সংস্থা ম্যানেজমেন্ট অব অ্যাকুয়াটিক সিস্টেম থ্রো কমিউনিটি হাজবেনট্রি (ম্যাচ) প্রকল্পের অংশ হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে হাইল হাওরের বাইক্কাবিল এলাকায় কাঠের বাক্স স্থাপন করে। ২০০৬ সালে প্রথমে ১০ থেকে ২০ ফুট উঁচু ১০টি পাকা খুঁটির সঙ্গে ১০টি বাক্স স্থাপন করা হয়। যে বছর তৈরি হয়েছিল সে বছর বালিহাঁস ওই সব বাক্সে আশ্রয় নেয়নি। তবে পরের বছর ২০০৭ সালে প্রথম দেখা যায়, ৩-৪টি বাক্সে বালিহাঁস বাসা বেঁধেছে। পরে ডিম পেড়েছে এবং বাচ্চাও ফুটিয়েছে। বাচ্চাগুলো লাফিয়ে লাফিয়ে নেমে গেছে বিলের পানিতে। সেই থেকে প্রজননের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত হওয়ায় প্রতিবছরই কিছু না কিছু কৃত্রিম কাঠের বাসায় বালিহাঁস ডিম দিয়ে আসছে। আর কৃত্রিম বাসায় বালিহাঁসের ডিম পাড়ার জন্য দেশে এটিই একমাত্র স্থান বাইক্কাবিল হাইল হাওর।