নেক বা ভালো কাজে প্রতিযোগিতা প্রিয় ও প্রশংসনীয়। কোরআন হাদিসে নেক কাজে তড়িঘরি করার প্রতি তাগিদ করা হয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘সৎ কাজে অপর থেকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করো।’ কেউ ইবাদত করছে, গোনাহ থেকে বেঁচে থাকছে, তার দেখাদেখি নিজেও এসব গুণ অর্জনের চেষ্টা থাকা উচিত। আমাদের সমাজে হয়েছে এর উল্টোটা। আমরা কার চেয়ে কে বেশি টাকা-পয়সা, ধন-সম্পদ কামাই করবো তা নিয়ে প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। ইসলামে এটাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
ইসলামের কঠিনতম একটি জিহাদ তাবুক। অসম এই যুদ্ধে যখন সর্বাত্মক সহযোগিতার আহ্বান করলেন রাসুল সা.। তখন আবু বকর রা. আর ওমর রা.-এর মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়েছিল কে বেশি দান করতে পারেন। শেষ পর্যন্ত আবু বকর রা.-ই নিজের সবকিছু দান করে দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন। এভাবে বিভিন্ন ভালো কাজে সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে প্রতিযোগিতা হতো। রাসুল সা. বলেন, ‘দুনিয়ার ব্যাপারে তোমরা তোমাদের নিচের মানুষদের প্রতি তাকাবে। তোমাদের চেয়ে ধনেজনে যারা নীচু তাদের সঙ্গে ওঠাবসা করবে। আর দ্বীনের ব্যাপারে তোমরা ওঠাবসা করবে বড়দের সঙ্গে। যারা তোমাদের চেয়ে অগ্রসর তাদের সান্নিধ্য গ্রহণ করবে।’ কারণ দুনিয়ার ব্যাপারে যত ওপরে তাকাবে ততই মানুষ অশান্তিতে ভুগবে। এজন্য ইসলামের প্রেসক্রিপশন হলো, সব সময় নিজের থেকে নিচের লোকদের দিকে তাকাতে হবে। তবে ভালো ও নেক কাজের প্রতিযোগিতায় উপরের দিকে তাকাতে হবে।
হাদিসে রাসুল সা. দরিদ্র হওয়ার আগেই দান-সদকা করার নির্দেশ দিয়েছেন। অসুস্থতা ও বার্ধক্যে পতিত হওয়ার আগেই সৎ কাজ করার কথা বলেছেন। মৃত্যুর আগেই নিজেকে গোনাহমুক্ত করার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন। কারণ কারো এ কথা জানা নেই, কার জীবনের সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। কে কখন কিভাবে চলে যেতে হবে তা অজানা। এজন্য পরকালীন জীবনের পুঁজি এখনই অর্জন করা দরকার। আর এরজন্য প্রয়োজন প্রতিযোগিতা। সৎ ও উত্তম কাজের প্রতিযোগিতা থাকলে জীবনকে সুন্দরভাবে সাজানো সম্ভব হয়। যারা জীবনে সফল হয়েছেন তাদের সবাই সৎ কাজের প্রতিযোগিতায় নিজেদের বিজয়ী করেছেন। মূলত নেক কাজের কোনো নির্দিষ্ট সীমা ও পরিম-ল নেই। ইচ্ছে থাকলে প্রতিটি মুহূর্তেই নেক কাজে অংশ নেয়া যায়। এজন্য সবার উচিত নেক কাজে প্রতিযোগিতা করা। বৈষয়িকতায় পেছনে নিজেকে সমর্পিত করে না দেয়া।