খুব শীঘ্রই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ১ কোটি ৫০ লাখ বছর আগের সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছাবে। পৃথিবীর অবস্থার গতিপ্রকৃতি দেখে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ এমন এক অবস্থায় ফিরছে যা মানুষের কোনো ঘনিষ্ট পূর্ব প্রজাতিও দেখেনি।। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক লকডাউন শুরু হওয়ার আগের এক তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ আগামী ৫ বছরের মধ্যে ৪২৭ পার্টস পার মিলিয়ন স্পর্শ করবে। এর অর্থ হলো বাতাসের প্রতি দশ লাখ অণুর প্রায় ৪২৭টি অণু কার্বন ডাই অক্সাইডের হবে। বায়ুমণ্ডলের এ অবস্থা ৩৩ লাখ বছর আগের অর্থাৎ- মধ্য প্লায়োসিন যুগের মত উত্তপ্ত। প্রাগৈতিহাসিক মধ্য প্লায়োসিন যুগে তাপমাত্রা এখনকার অবস্থা থেকে ৩ থেকে ৪ সেলসিয়াস বেশি ছিলো এবং সমুদ্র উচ্চতা ছিলো এখনকার চেয়ে প্রায় ২০ মিটার বেশি।
তবে বিখ্যাত জার্নালে ন্যাচারে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখানো হয়, ২০২৫ সাল নাগাদ পৃথিবীতে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ হবে দেড়শ কোটি বছর আগের মধ্য মায়োসিন যুগের মত। মনে করা হয়, প্রাগৈতিহাসিক ওই যুগেই মূলত মানুষের উৎপত্তি হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনটির একজন লেখক থমাস চাক বলেন, প্লায়োসিন যুগে পৃথিবীর সর্বোচ্চ উষ্ণ এলাকায় বায়ুমণ্ডলে ৩৮০ থেকে ৪২০ পার্টস পার মিলিয়ন কার্বন ডাই অক্সাইড ছিলো। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে এখন ৪১৫ পিপিএম কার্বন ডাই অক্সাইড বিরাজমান। অর্থাৎ মধ্য প্লায়োসিন যুগের অবস্থায় আমরা ইতিমধ্যে পৌঁছে গেছি।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, বর্তমানে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড প্রতি বছর ২.৫ পিপিএম হারে বাড়ছে। এর অর্থ হলো ২০২৫ সাল নাগাদ বায়ুমণ্ডলে ৩৩ লাখ বছরেরও বহু আগের অবস্থার চেয়েও কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাবে।
উল্লেখ্য, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বলতে পৃথিবীর চারপাশে ঘিরে থাকা বিভিন্ন গ্যাস মিশ্রিত স্তরকে বুঝায়, যা পৃথিবী তার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা ধরে রাখে।
সানবিডি/এনজে